নতুন বছরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই শুরু হয়ে গিয়েছে ফলাফলের মরসুম।
প্রথা অনুযায়ী গোড়াতেই ফল প্রকাশ করেছে অগ্রণী তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ইনফোসিস। তৃতীয় ত্রৈমাসিকে ভাল ফল করা ছাড়াও কোম্পানির দাবি, গোটা বছরেও তার ফলাফলে যথেষ্ট উন্নতি ঘটবে। এটি সম্ভব হবে বেশ কয়েক জন অভিজ্ঞ ঊচ্চপদস্থ কর্মী সংস্থা ছেড়ে চলে যাওয়া সত্ত্বেও। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর, এই তিন মাসে কোম্পানির আয় ১০,৪২৪ কোটি টাকা থেকে বেড়ে পৌঁছেছে ১৩,০২৬ কোটি টাকায়। নিট মুনাফা ২১% বেড়ে স্পর্শ করেছে ২,৮৭৫ কোটি। সংস্থার আশা, গোটা বছরে আয় বাড়তে পারে ২৪.৪%-২৪.৯%। সংস্থার কর্মী সংখ্যা ১,৫৮,৪০৪। বিশ্ব অর্থনীতির চাঙ্গা হওয়াকেই ভাল ফলের কারণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ইনফোসিসের এই ফলাফল শুক্রবার বেশ খুশির জোয়ার আনে বাজারে। সেনসেক্স অনেকটা উঠে যায়। দিনের শেষে অবশ্য তা বন্ধ হয় মাত্র ৪৫ পয়েন্ট উপরে। তবে নভেম্বরে শিল্পোৎপাদন ২.১% হ্রাস পাওয়া এবং রফতানি বৃদ্ধির হার ৩.৪৯%-এ নেমে আসার খবরে ইনফোসিস ফলাফলের প্রভাব অনেকটাই ম্লান হয়ে যায় শুক্রবার বিকেলে। একই দিনে ভাল ফলাফল উপহার দিয়েছে ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক। তৃতীয় ত্রৈমাসিকে ব্যাঙ্কের নিট মুনাফা ৩০% বেড়ে পৌঁছেছে ৩৪৭ কোটি টাকায়। আগামী কয়েক সপ্তাহ ধরে চলবে ফলাফল প্রকাশের পালা। অর্থাৎ লগ্নিকারীদের এখন সজাগ থাকার সময়।
আগামী মাসে বাজারে আসতে চলেছে পিএসইউ এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ)। এই ফান্ডের টাকা লগ্নি করা হবে ১১টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ারে। সংস্থাগুলি হল ওএনজিসি, কোল ইন্ডিয়া, গেইল, পাওয়ার গ্রিড, আরইসি, অয়েল ইন্ডিয়া, কন্টেনার কর্পোরেশন, পাওয়ার ফিনান্স কর্পোরেশন, ইন্ডিয়ান অয়েল, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্ডিয়া ও ভারত ইলেকট্রনিক্স। এই ফান্ডের মাধ্যমে ৩,০০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। লগ্নিকারীরাও ১১টি শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় লগ্নির সুযোগ পাবেন। ঝুঁকিও তুলনায় কম।
গত ১১ বছরে ২০১৩ সালে প্রথম বার গাড়ি বিক্রি কমেছে ভারতে। কমার হার ১০%। চড়া মূল্যবৃদ্ধি, উঁচু সুদের হার এবং শিল্পে মন্থরতাই এর কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। গাড়ি শিল্পের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল অন্য বেশ কয়েকটি শিল্প। শিল্পোৎপাদন, রফতানি এবং গাড়ি বিক্রি কমা অর্থনীতি এবং শেয়ার বাজারের জন্য মোটেই ভাল খবর নয়। এই সব তথ্য ইঙ্গিত দেয়, অর্থনীতির মন্থরতা কাটেনি। অর্থাৎ আগামী দিনে শেয়ার বাজার চড়চড়িয়ে বাড়বে এমন মনে করার কারণ নেই। শিল্পের তুলনায় এখন বেশি ভরসা করতে হবে কৃষির উপর।
প্রভিডেন্ট ফান্ডের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভা বসছে আজ। আলোচনা হতে পারে ২০১৩-’১৪ সালের সুদ নির্ধারণ নিয়ে। ২০১২-’১৩ সালে সুদ ছিল ৮.৫%। ব্যাঙ্ক সুদ এর থেকে বেশি হওয়ায় ট্রেড ইউনিয়নগুলি ৯.৫% সুদ দাবি করবে বলে ঠিক করেছে। এই বাড়তি সুদ দেওয়ার মতো টাকা অবশ্য তহবিলে নেই।
এ দিকে, যে-সব চাকরিজীবী করদাতা বছরে ১ লক্ষ টাকা বা তার বেশি বাড়ি-ভাড়া দেন এবং সেই বাবদ করছাড় পান, তাঁদের এ বার থেকে বাড়িওয়ালার ‘প্যান’ এবং অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং এ-৪ মাপের কাগজে তা জানাতে হবে নিজের নিয়োগকর্তাকে। সম্প্রতি এই নতুন নিয়ম চালু করেছে আয়কর দফতর।
পরিবর্তন আনা হয়েছে আয়কর আইনের অধীনে ১৫-জি এবং ১৫-এইচ ফর্ম-এও। যাঁদের করযোগ্য আয় নেই, তাঁরা এই ফর্ম দাখিল করতে পারেন, যাতে সুদ বাবদ আয় থেকে উৎসমূলে কোনও কর কাটা না-হয়। তবে শুধু করযোগ্য আয় নেই বললেই চলবে না। এ বার থেকে বলতে হবে, সংশ্লিষ্ট বছরে বিভিন্ন সূত্র থেকে মোট আয় কত হতে পারে। দিতে হবে লগ্নি সংক্রান্ত নানা তথ্য। যাঁদের আগের বছর করযোগ্য আয় ছিল এবং সংশ্লিষ্ট বছরে করযোগ্য আয়ের সম্ভাবনা আছে, তাঁদের এই ফর্ম দাখিল করার কথা নয়। করযোগ্য আয় থাকা সত্ত্বেও এই ফর্ম দাখিল করা আইনের চোখে অপরাধ বলে ধরা হবে। অর্থাৎ নিশ্চিত হয়ে তবেই দাখিল করতে হবে এই ফর্ম। |