আলেকজান্ডারের মৃত্যু কি বিষ ওয়াইনেই, উঠল প্রশ্ন
তিহাসের পাতায় তাঁর পরিচয় ‘আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট’। অপরাজিত সম্রাট, সুবিশাল সাম্রাজ্যের অধিপতি আলেকজান্ডারের জীবন সাফল্যের এক অবিশ্বাস্য কাহিনি। কিন্তু তাঁর মৃত্যু ঠিক ততটাই বিতর্কিত। আর সেই বিতর্কিত ইতিহাসেই এ বার আলোড়ন তুলেছে নয়া তত্ত্ব। যা বলছে, ম্যালেরিয়া বা বহু প্রচলিত বিষের প্রয়োগে নয়, ম্যাসিডোনিয়ার সম্রাটের প্রাণ কেড়েছিল এক বিষাক্ত ওয়াইন।
শুনতে অদ্ভুত হলেও এই তত্ত্ব উড়িয়ে দিচ্ছেন না ইতিহাসবিদরা। বাস্তবিক। ইতিহাস এবং বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলিকে পর পর সাজিয়ে দু’হাজার তিনশোর বছরেরও বেশি পুরনো এই রহস্য-মৃত্যু যে ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন নিউজিল্যান্ডের দুই গবেষক লিও স্কেপ এবং প্যাট উইটলে, তার পর তাকে গুরুত্ব না দিয়ে থাকা যায় না। এ নিয়ে সম্প্রতি নিজেদের গবেষণাপত্রটি ‘ক্লিনিক্যাল টক্সিকোলজি’ জার্নালে প্রকাশও করেছেন ওই দুই গবেষক।
এবং তাঁদের গবেষণায় উঠে এসেছে একটি নাম ‘ভেরাট্রাম অ্যালবাম’। তথ্য বলছে, উদ্ভিদ জগতের এক বিষধর সদস্য হল ভেরাট্রাম অ্যালবাম। স্কেপের দাবি, এই ভেরাট্রাম অ্যালবাম থেকেই তৈরি বিষাক্ত ওয়াইন পান করেছিলেন আলেকজান্ডার। আর তাতেই মৃত্যু হয়েছিল তাঁর।
বিষপ্রয়োগেই হত্যা করা হয়েছিল আলেকজান্ডারকে এ অবশ্য নতুন কোনও তত্ত্ব নয়। কিন্তু বিষ হিসেবে এত দিন আর্সেনিক বা স্ট্রিকনিন প্রয়োগের তত্ত্বই জনপ্রিয় ছিল ইতিহাসবিদ্দের মধ্যে। সেই তত্ত্বকে রীতিমতো হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের ওটাগো ইউনিভার্সিটির ন্যাশনাল পয়জনস সেন্টারের ওই দুই গবেষক। তাঁদের দাবি, যদি ওই বিষগুলোর কোনও একটাও ব্যবহার করা হত, সে ক্ষেত্রে আরও দ্রুত মৃত্যু হত আলেকজান্ডারের। কিন্তু ইতিহাস বলছে, তা হয়নি। ১২ দিন (মতান্তরে ১৪ দিন) ভুগে মারা গিয়েছিলেন সুবিশাল সাম্রাজ্যের এই অধিপতি।
এই তথ্যকেই নিজেদের ব্যাখ্যার সমর্থনে ব্যবহার করেছেন স্কেপরা। কী রকম? তাঁরা বলছেন, যে ভাবে গলার স্বর এবং হাঁটাচলার ক্ষমতা হারিয়ে একটু একটু করে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন তিনি, তার পর আর যাই হোক, স্ট্রিকনিন বা আর্সেনিককে খলনায়ক করা যায় না। বরং ভেরাট্রাম অ্যালবাম থেকে তৈরি বিষের ফলেই এ হেন মৃত্যু সম্ভব। তথ্য এ-ও বলছে, সে সময় বমি করানোর ঔষধি হিসেবে গ্রিসে ভেরাট্রাম অ্যালবাম থেকে তৈরি বিষের ব্যবহার বেশ জনপ্রিয় ছিল। স্কেপদের দাবি, তিতকুটে স্বাদের বিষ মেশানো ওই ওয়াইন পান করেন আলেকজান্ডার। তার জেরেই বেশ ক’দিন ভুগে মৃত্যু হয় তাঁর।
কিন্তু তাঁকে চক্রান্ত করে বিষ দেওয়া হয়েছিল কি না, তা জানা নেই। জানার উপায়ও নেই।
তবে চেষ্টা চলবেই। ঠিক যেমন ভাবে চেষ্টা করেছেন স্কেপ। ওটাগো ইউনিভার্সিটির ন্যাশনাল পয়জনস সেন্টারে কাজ করতে করতেই এক সংস্থা ২০০৩-এ বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করতে অনুরোধ করেন স্কেপকে। তাঁর বয়ানে, “ওঁদের হ্যাঁ বলার পরও আমার মনে হয়েছিল, হয়তো কিছুই খুঁজে পাব না।” কিন্তু শেষমেশ মিলল ভেরাট্রাম অ্যালবামের তত্ত্ব। সত্যি না মিথ্যে বিতর্ক থাকবেই। ইতিহাস যাঁকে সর্বশ্রেষ্ঠ সম্রাটের তালিকার শীর্ষে রেখেছে, তাঁর এমন মৃত্যু প্রশ্ন তৈরি করবে, সেটাই যে স্বাভাবিক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.