ট্রান্সফার সার্টিফিকেটকে কেন্দ্র করে বচসার জেরে স্কুলে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠল এক ছাত্রীর কাকার বিরুদ্ধে। বুধবার দুপুরের ওই ঘটনায় বসিরহাটের মনিমারি গ্রামের সপ্তপল্লি নেতাজি বিদ্যাপীঠের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক গৌরপদ অধিকারীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে ধান্যকুড়িয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। পরে অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় তাঁকে বারাসত হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ অন্য পড়ুয়া ও তাঁদের অভিভাবকেরা অভিযুক্ত মধু সরকারের গ্রেফতারের দাবিতে টাকি রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পরে পুলিশ গিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে দু’ঘণ্টা পরে অবরোধ উঠে যায়। |
স্কুল সূত্রের খবর, বসিরহাটের শ্রীনগর-মাটিয়া পঞ্চায়েতের মনিমারি গ্রামের ওই স্কুলে গত বছর ষষ্ঠ শ্রেণিতে এক ছাত্রী ভর্তি হয়। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভর্তির সময়ে তার অভিভাবকেরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেননি। পরে দেবেন প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় মেয়েটিকে ভর্তি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরেও ওই ছাত্রীর অভিভাবকেরা কাগজপত্র স্কুলে জমা দেননি বলে অভিযোগ। এই বছর ওই ছাত্রী সপ্তম শ্রেণিতে ওঠার পরে তার অভিভাবকেরা তাকে অন্যত্র ভর্তি করাবেন বলে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট চান। স্কুল থেকে তাঁদের জানানো হয়, ভর্তির সময়ে যে নথি জমা দেওয়ার কথা ছিল, তা জমা না দিলে স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই সার্টিফিকেট দিতে পারবেন না। কিন্তু তা সত্ত্বেও অভিভাবকেরা ওই কাগজপত্র জমা দিতে রাজি হননি বলে অভিযোগ। এমনকি ওই ছাত্রীর কাকা মধু সরকার তাকে দু’দিন ধরে হুমকিও দিচ্ছিলেন বলে দাবি প্রধানশিক্ষকের। গৌরপদবাবুর অভিযোগ, বুধবার দুপুরে ওই ছাত্রীর অভিভাবক মধুবাবু হঠাৎ তাঁর ঘরে ঢুকে আমাকে কিল, চড়, ঘুষি মারতে শুরু করেন। চেয়ার-টেবিল উল্টে ফেলে দেন। জরুরি কাগজপত্র ছিঁড়ে নষ্ট করতে থাকেন। পড়ুয়ারা চিৎকার করতে শুরু করলে মধুবাবু মোটরবাইক নিয়ে পালান।
স্কুলের দুই শিক্ষক ফিরোজুল ইসলাম ও প্রভাতকুমার সেন বলেন, “গত বছর ক্লাস শুরু হওয়ার প্রায় পাঁচ-ছ’মাস পরে মেয়েটির অভিভাবকেরা ওকে ভর্তি করানোর জন্য আমাদের অনুরোধ করেন। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পরে দিয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। মেয়েটির ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমরা ওকে ভর্তি নিই। আমরা ওর অভিভাবকদের বিশ্বাস করেছিলাম। তাই মেয়েটিকে ক্লাস করার সুযোগ দিয়েছিলাম।” |
অভিযুক্ত মধু সরকারের অবশ্য বক্তব্য, স্কুল বিনা কাগজে ভর্তি নিতে পারল। বিনা কাগজে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দিতে অসুবিধা কোথায়? পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে।
|