|
|
|
|
পেঁয়াজ চাষে জোর দিতে পূর্বে বীজ বিলি, কর্মশালা
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাঁথি |
পেঁয়াজ আর তার দাম নিয়ে প্রতি বছরই ঝামেলা। অন্য রাজ্য বা বাজারের উপর নির্ভরশীলতার বদলে বিকল্প হিসেবে এই রাজ্যে তাই পেঁয়াজ চাষ বাড়াতে চাইছে রাজ্য সরকার। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা এই লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে সম্প্রতি। পেঁয়াজের বীজ বিতরণের পাশাপাশি এই নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন ব্লকে চাষিদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করছে জেলা উদ্যান পালন দফতর। দফতরের আধিকারিক স্বপন শিট জানিয়েছেন, “জেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে কয়েকটি ব্লকে দেশি পেঁয়াজের চাষ হয় মাত্র। তাই পেঁয়াজ চাষের চল বাড়াতে প্রথমেই বীজ বিলি করা হয়েছে।” এর জন্য নাসিক থেকে উন্নত মানের ১০০ কেজি পেঁয়াজের বীজ আনা হয়েছে। ওই বীজ জেলার ২৫টি ব্লকের মধ্যে ১২টি ব্লকে আট কেজি করে পাঠানো হয়েছে। নন্দকুমার ব্লকে ৪ কেজি পেঁয়াজ বীজ পাঠানো হয়েছে। কারা এই পেঁয়াজ বীজ পাবেন, কতটা পরিমাণে পাবেন তারও একটি তালিকা তৈর করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই অনেক চাষি বীজ পেয়ে পেঁয়াজ চাষ শুরু করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বপনবাবু।
কাঁথি মহকুমার কৃষি দফতরের সহ-কৃষি অধিকর্তা অশোক শিট জানান, পেঁয়াজ চাষ বোরো ও রবিদুই মরসুমেই করা যায়। যেহেতু আমন ধান কাটার পর রবি মরসুমে অনেকটা জমি ফাঁকা পড়ে থাকে, সেহেতু ওই সময় বিকল্প চাষ হিসেবে পেঁয়াজ চাষ করতে বলা হচ্ছে চাষিদের। এই সময় কম বৃষ্টিপাত পেঁয়াজ চাষের পক্ষে অনুকূল হবে বলেই জানিয়েছে কৃষি দফতর।
জেলার ১৩টি ব্লকে বিশেষ করে মহিষাদল, এগরা, কোলাঘাট, নন্দকুমার, পাঁশকুড়া ব্লকগুলিতে পেঁয়াজ চাষ বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে কৃষি দফতর। সেই লক্ষ্যে এই ব্লকগুলির গ্রামে-গ্রামে চাষিদের নিয়ে কর্মশালা করার ভাবনাচিন্তা চলছে। কর্মশালায় মূলত কী ভাবে জমি তৈরি করতে হবে, কোন মাটি এই চাষের পক্ষে ভাল, তা নিয়ে আলোচনা হবে।
জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ বুদ্ধদেব ভৌমিক বলেন, “সম্প্রতি রাজ্যে পেঁয়াজের আমদানি কমে যাওয়ায় অস্বাভাবিক হারে দাম বেড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেই সময়ই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বিকল্প চাষ হিসেবে পেঁয়াজ চাষ করার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশেই জেলায় বিকল্প পেঁয়াজ চাষে জোর দেওয়া হচ্ছে।”
কৃষি দফতর যতই উৎসাহ দেখাক, চাষিরা বাস্তবে পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। জেলার কৃষক সংগ্রাম পরিষদের সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বলেন, “আমাদের জেলায় পেঁয়াজ চাষের কোনও রেওয়াজ নেই। তাই এই নিয়ে জেলার চাষিদের মধ্যে কোন অভিজ্ঞতাও নেই। পেঁয়াজ চাষের জন্য কী ধরনের জমির প্রয়োজন, কী কী সার ও কীটনাশকের প্রয়োজন পড়ে এবং কী ভাবে চাষ করতে হবে, তা চাষিদের জানাতে হবে। না হলে চাষিরা অন্ধকারেই পড়ে থাকবেন।” উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডল, সহ-সভাধিপতি শেখ সুফিয়ান, শিক্ষা কর্মাধক্ষ্য মামুদ হোসেন, অতিরিক্ত জেলাশাসক সুমন হাওলাদার, জেলা যুব আধিকারিক অসীম পাল প্রমুখ। দু’দিনের এই উৎসবে বিভিন্ন বিভাগে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা আয়োজিত হবে। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ব্লক ও পুরসভাস্তরে বিজয়ী ছাত্র ও যুবক-যুবতীরা এই প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছে।
|
|
|
|
|
|