সম্প্রতি দার্জিলিঙে রয়ভিলায় রামকৃষ্ণ মিশন, নিবেদিতা এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল সেন্টারের উদ্যোগে বসেছিল ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প, দার্জিলিং শহর ও সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ৭২ জন মানুষকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। এক দিনের এ শিবিরে উপস্থিত ছিলেন এক শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ও এক জন সাধারণ রোগ বিশেষজ্ঞ। প্রায় ৩৭ জন শিশু-কিশোরকে এই শিবির থেকে গুঁড়ো দুধের ৫০০ গ্রামের প্যাকেট বিতরণ করা হয়। সেন্টারের সম্পাদক নিত্যসত্যানন্দ জানান, আগামী ২২ জানুয়ারি আবার ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে নানা ধরনের রক্ত ও সুগার টেস্টের মতো কিছু পরীক্ষা এলাকাবাসীরা নিখরচায় করাতে পারবেন। পাশাপাশি থাকবেন একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ।
|
তাঁর সৃজনভাষা কুরুস। উত্তরবঙ্গে কুরুস ভাষায় সাহিত্যচর্চার মধ্য দিয়েই প্রত্যন্ত গোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর পৌঁছে দিয়েছেন রাজ্যের বাইরে এক বৃহত্তর পরিসরে। তিনি, বিমল টোপ্পো উত্তরের বৃহত্তম জনজাতি ওঁরাও-দের মাতৃভাষা কুরুস বর্তমানে হারিয়ে যাওয়ার মুখে। চার দশক ধরে প্রয়াসী হয়েছেন বিলুপ্তপ্রায় ভাষাটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। কৈশোরেই সাহিত্যকর্মের সূত্রপাত। তারপর কবিতা, গল্প থেকে নাটক, প্রবন্ধ, নানা সাহিত্যকর্মে বিমলবাবু নিজেকে নিবিষ্ট করেছেন। তিনটি নাটক নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে সংকলন গ্রন্থ ‘কোরারাজি’। “পইয্যান মান্যতা অদখা নিদনী তোড়াং সুনা মানী। কান্নুনু গোঁথার ফাগ্গসেনদরা কানার পদ্দা সুপা মানী”। (শীতে গাছের পাতা ঝরে যায়, বন শূন্য হয়ে যায়। যুবকরা ফাল্গুন মাসে শিকারে যায়, গ্রাম শূন্য হয়ে যায়)। তাঁর প্রবন্ধের বিষয় : শিশুদের ভাষাবিকাশ কিংবা কুরুস ভাষার সংকট। গল্প লিখেছেন প্রায় ৩০টি। গল্পের বিষয় বেশির ভাগ চা-বাগান ছেড়ে কাজের সন্ধানে শ্রমিকদের ভিন্ রাজ্যে চলে যাওয়া বা মাতৃভাষা ভুলে অন্য ভাষার প্রতি আগ্রহ। ঝাড়খণ্ডের স্কুলে পাঠ্যতালিকায় স্থান পেয়েছে তাঁর গল্পগুলি। গল্প লিখেছেন শিশুদের জন্যও। নুড়গেরিয়া দেওয়ান (বুদ্ধিমান দেওয়ান), ধর্মচাল (ভগবানের শব্দ), খাদ্যসহিবিশ্বাস (বাচ্চাদের বিশ্বাস) প্রভৃতি। বিমল টোপ্পোর প্রাপ্ত সম্মানের তালিকাটি দীর্ঘ। পেয়েছেন রাজ্য সরকারের লোককবি সম্মান, গুণিরাজ সংবর্ধনা। সম্প্রতি জলপাইগুড়ি বইমেলা কমিটির পক্ষ থেকে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এভাবেই অবক্ষয়িত অস্তিত্বের প্রমাণ রাখার প্রযত্ন করে চলেছেন আজও। (১) কবিতার পঙ্ক্তির মধ্য দিয়েই সযত্নে নির্মাণ করেন স্বসংস্কৃতি। (২) স্বসংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদে তৈরি করেছেন কুরুস ওঁরাও লিটারারি অ্যান্ড কালচারাল সোসাইটি। এই সবের মধ্যেই আভাসিত থাকে ভাষার প্রতি তাঁর ভালবাসার কথা।
|
ইংরেজি বছরের প্রথম দিনে চলে গেলেন লালুদা। জলপাইগুড়ির বাবুপাড়ার অরুণকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। আমৃত্যু জলপাইগুড়ি ইয়ং ম্যানস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে তিনি অন্যতমও। এছাড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা, ভেটারান স্পোর্টস ক্লাব এবং জেলা টেবল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনএই তিনটি সংস্থার সহ-সভাপতিও ছিলেন। ফুটবল খেলতে ভালবাসতেন। তবে খেলেছেন ক্রিকেট, হকি, ব্যাডমিন্টন, এমনকী টেবল টেনিসও। জেলা স্তরে খেলেছেন ফুটবল, হকি ও ক্রিকেট। জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য দফতরের এই কর্মীটি সাংস্কৃতিক জগতের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। দুর্গা ও কালী পুজো কমিটির সভাপতি লালুদা ৮৫ বছর বয়সেও বেরোতেন চাঁদা তুলতে। ব্যতিক্রমী এই মানুষটির ব্যবহারে মুগ্ধ হয়েছেন শহরের মানুষ। তিনি বিশ্বাস করতেন অহংকার ও ঔদ্ধত্য ভগবানকে অপমান করার নামান্তর। তাঁর সম্পর্কে এক ক্রীড়াব্যক্তিত্ব সন্তু চট্টোপাধ্যায়ের মূল্যায়ন, ‘অসাধারণ খেলোয়াড় তো বটেই, মানুষ হিসাবেও অসাধারণ।’
|
পরিবেশ সংরক্ষণে অন্যতম বাধা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। জনসংখ্যার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে আবর্জনা। এটার মোকাবিলাই এই সময়ের বড় চ্যালেঞ্জ। সেই সময় যদি কোনও সংস্থা বর্জ্য থেকে সম্পদ তৈরির সম্ভাবনার হদিস দেওয়াই নয়, হাতেকলমে দেখিয়ে দেয় বর্জ্য থেকে কী ভাবে সম্পদ তৈরি করা যায় তবে তাকে আলাদা গুরুত্ব দিতেই হয়। দক্ষিণ দিনাজপুরের সোশ্যাল আপলিফ্ট অ্যান্ড নারচারিং সোসাইটি সময়োপযোগী ভূমিকা নিয়েছে। বালুরঘাটে নাট্যতীর্থ মন্মথ মঞ্চে তারা একটি আলোচনা সভার আয়োজন করার পাশাপাশি একটি অডিও-ভিস্যুয়াল প্রেজেন্টেশন করে। ‘রান্নাঘরের বর্জ্য ও কৃষিক্ষেত্রের বর্জ্য থেকে জৈব গ্যাস’ বিষয়ে জানালেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব এনার্জি স্টাডিত-এর অধ্যাপক তুষার যশ, রাজ্য সরকারের পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রকের বাস্তুকার জয় চক্রবর্তী।
|
খেয়ালি ক্যানভাসে রামধনু রঙে ‘এক টুকরো আকাশ’। কবিতা বাগানে আছে সবুজ ঘ্রাণমেশা সকালের রোদ, বুকে নেশা বুনে দেওয়া কষ্টের বীজ, বিমর্ষ ভেজা চুলে সজল চেরাপুঞ্জি মেঘ, গোধূলি আবেগে সূর্যাস্ত ও নদীর সহবাস, মেঘমেদুর আকাশের প্রচ্ছদ ছিঁড়ে উঁকি মারা অভিমানী প্রতিবাদ। গণঅভ্যুত্থান-মুদ্রাস্ফীতি-রাজবংশী লৌকিক দেবতার উপর প্রবন্ধ, ছোট গল্প, অণুগল্প, নাটক ছাড়া ভ্রমণকাহিনি এক মলাটে বন্দি করেছেন সম্পাদক শাঁওলি দে। ঝরঝরে সুপাঠ্য সব লেখা পাঠকদের নিবিষ্ট করবে। ডিজিটাল দুনিয়ার করাল গ্রাসে সাহিত্যের নান্দনিক আবেগ। সাহিত্যকেই তার দায়বদ্ধতা থেকে জন্য এগিয়ে আসতে হবে। বাণিজ্যিক কারণে বড় পত্রিকা চোখ বুজে থাকে, লিটল ম্যাগাজিনই ভরসা। হলদিবাড়ি থেকে প্রকাশিত তৃতীয় বর্ষের উৎসব সংখ্যা ‘এক টুকরো আকাশ’ এই দায়িত্বে অবিচল। |