চলো কলকাতা
লোক-বিক্রম
লকাতায় একটি কনসার্টের জন্য শ’খানেক লোকশিল্পী খুঁজছিলেন তবলিয়া বিক্রম ঘোষ। খুঁজে পেলেন পুরুলিয়ায় গিয়ে। গত ২২-২৩ ডিসেম্বর গড়জয়পুরে একশো লোকশিল্পী নিয়ে কর্মশালা করিয়েছেন তিনি। ৪-৫ জানুয়ারি সেখানে গিয়ে নাচের মুদ্রা দেখিয়েছেন বিশিষ্ট ওড়িশি নৃত্যশিল্পী শর্মিলা বিশ্বাস। সঙ্গে তাঁর ছাত্রছাত্রীরা। কর্মশালায় তাঁরা পেয়েছেন জগদীশ হাঁসদা, মাঘেশ্বর কালিন্দি, বিশু মাহাতো, অভিমন্যু কালিন্দিদের। তাঁদের কাছে বিক্রম শুনে এসেছেন ঢোল, তুষা, মাদল, নাগাড়া, রাম করতাল, ধামসা, ভেরি, রায়ড়ের তুমুল বাজনা।
শর্মিলা দেখেছেন ছৌ, নাটুয়া, পাতা নাচ, ডং, লাগড়ের মতো নানান আঙ্গিকের লোকনৃত্য। জেলা ঘেঁটে তাঁদের জুটিয়ে এনেছিল সাংস্কৃতিক সংস্থা ‘কান্ট্রি রুটস’। শর্মিলার মতে, “আলাদা দুই শিল্পরীতির এই মেলামেশায় দু’পক্ষই সমৃদ্ধ হয়েছে।”
বিক্রম তো চমকেই গিয়েছেন। তাঁর কথায় ধরা পড়ে উচ্ছ্বাস, “ওঁদের বৈচিত্রপূর্ণ ঐতিহ্য রয়েছে। সব ওঁরা ধরে রেখেছেন। সারা দিন একসঙ্গে কাজ করে খুব আনন্দ পেয়েছি।” কর্মশালায় একটি বিশ মিনিটের উপস্থাপনা তৈরি হয়েছে। আগামী ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় কলকাতার পি সি চন্দ্র গার্ডেনে তা দেখা ও শোনা যাবে। শুরু থেকে গোটা পর্বটা ধরে রাখা হচ্ছে তথ্যচিত্রে। বিক্রম জানান, এর পরে পুরুলিয়াতেও অনুষ্ঠান করার ইচ্ছে রয়েছে তাঁদের। তার জন্য পাঁচশো বছরের পুরনো একটি নাচঘর বাছা হয়েছে। “ওঁদের নিয়ে আরও বড় কিছু কাজ করার ইচ্ছে রইল আমাদের”—কথার শেষে হাসি মুখে ছুঁইয়ে দেন বিক্রম।

বাংলা কলাম
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নির্দেশে নিজামত দফতর ও মহাফেজখানা মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত হওয়ার আগে পর্যন্ত অঙ্কন ও স্থাপত্য শিল্পকলায় ‘বাংলা কলাম’ হিসেবে মুর্শিদকুলি খাঁর শহরই বাংলার প্রতিনিধিত্ব করেছে দাবি সম্প্রতিক একটি গ্রন্থের। মুঘল, রাজপুত ও লখনউ রীতির ঊর্ধ্বে থাকা স্বতন্ত্র সেই শিল্পশৈলীর জন্য মুর্শিদাবাদই ছিল বাংলার চিত্রশিল্পের কেন্দ্র। নবাব সিরাজউদ্দৌলার আমলে ছয় রাগ ছত্রিশ রাগিনী অবলম্বন করে গড়ে উঠেছিল ‘মুর্শিদাবাদি রাগমালা শৈলী’। এই রকম কিছু জানা, কিছু অজানা তথ্য রয়েছে অরূপ চন্দ্রের মুর্শিদাবাদের চিত্রকলা ভাস্কর্য স্থাপত্য গ্রন্থে (বাসভূমি প্রকাশনা)। আর এক গ্রন্থ মুর্শিদাবাদ জেলাঞ্চলের কালপঞ্জি-তে অরূপবাবু আবার দেখানোর চেষ্টা করেছেন খ্রিস্টজন্মের আগে মহাবীর তীর্থঙ্কর বা গৌতম বুদ্ধ, পরে ষোড়শ শতকে শ্রীচৈতন্যের মতো মহাপুরুষেরা ধর্মপ্রচার করতে কোন্‌ পথে মুর্শিদাবাদের কোন অঞ্চল পরিভ্রমণ করেন। প্রকাশক একই।

তাতল ভূমি
ঘুমের মধ্যে এক স্কুল পড়ুয়াকে দু’জন ডেকে নিয়ে গিয়েছিল ২০৭০ সালের পৃথিবীতে। গিয়ে ছেলেটি দেখে, জল নেই। এখন বন্দুক হাতে পুলিশ যেমন সোনার খনি পাহারা দেয়, একই ভাবে জলের পুকুর পাহারা দেওয়া হচ্ছে। বিশ্ব উষ্ণায়নের অশনি সঙ্কেতের বার্তা নিয়ে পুরুলিয়া থেকে মুম্বই রওনা গিয়েছে বাবলিং বাডস স্কুলের খুদে পড়ুয়ারা।
 
আগামী ১০-১১ জানুয়ারি মুম্বইয়ে নেহরু মিউজিয়ামে জাতীয় বিজ্ঞান নাটক প্রতিযোগিতায় যোগ দেবে। তাদের নাটক তাতল ভূমি তিয়াস-এ মোট পাঁচটি চরিত্র। বাবা, মা, স্কুল পড়ুয়া ছেলে, রিন আর তিন। শেষ দু’জনই স্বপ্নে ছেলেটিকে ডেকে নিয়ে যায়। সেই ছেলের ভূমিকায় অভিনয় করে ইতিমধ্যেই জেলা, রাজ্য ও পূর্বাঞ্চলীয় স্তরে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছে তৃতীয় শ্রেণির সুরজিত্‌ মোদক। পরিচালক সুদিন অধিকারী জানান, নাটকটির নামের অর্থ ‘তপ্ত পৃথিবীর তৃষ্ণা’। লিখেছেন কুচিল মুখোপাধ্যায়।

ফিল্মি কুহক
লোকে যে বয়সে স্কুল-কলেজ কেটে সিনেমা দেখতে যায়, ওঁরা নিজেরাই বানিয়ে ফেলেছেন গোটা একটা ছবি। ছোটখাটো কিছু নয়, তথ্যচিত্রও নয়। বিএ-বিএসসি প্রথম বর্ষের কয়েক জন আর দুই উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়া হ্যান্ডিক্যাম তৈরি করে ফেলেছেন সওয়া এক ঘণ্টার ভূতের ছবি কুহক। বসিরহাট ও অনন্তপুর স্টেশন, আস্তানা রোড এবং বড় জিরাফপুর গ্রামে শ্যুটিং হয়েছে তিন দিন। ছবি তুলেছেন রঞ্জিত চক্রবর্তী, সম্পাদকও তিনিই।
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা সন্দীপন কুণ্ডু ও কৌস্তুভ চট্টোপাধ্যায়ের। অভিনয় করেছেন টিনা দাস, সজীব রায়, সুভাষ বিশ্বাস, রজতশ্রভ্র বসু, অর্পণ মণ্ডল, সন্দীপ দাস, রবিউল ইসলাম, কমলা ঢালি এবং লিজা ভট্টাচার্য। এগারো জন বন্ধুর ছবি তৈরির কারখানার নাম ফ্রেন্ডস সিনেমা প্রোডাকশন। সম্প্রতি বসিরহাট টাউন হলে দেখানো হল সেই ছবি।

পাহাড় চড়ার পাঠ
শীত পড়তেই নড়েচড়ে বসে অভিযানী মন, ডাক দেয় পাহাড়তলি। পুজোর পর থেকেই পর্বতারোহী ক্লাবগুলো রক ক্লাইম্বিং শিবিরের তোড়জোড় শুরু করে দেয়। পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার অযোধ্য, শুশুনিয়া, জয়চণ্ডী পাহাড়ের কোল ভরে ওঠে রঙিন তাঁবুতে। পাহাড়ে চড়ার কঠিন পাঠ শিখতে ও শেখাতে দলে-দলে মানুষ ভিড় জমান ডিসেম্বরের ২৩ থেকে ২৬ তারিখ তেমনই তাঁবু পড়েছিল পুরুলিয়ার আদ্রায়।
জয়চণ্ডী পেরিয়ে বেরো পাহাড়ে পৌঁছেছিল ইছাপুরের অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি মাউন্টেনিয়ার্স অ্যান্ড ট্রেকার্স (ওএফএমটি) ক্লাব। এ বার তাদের ২৭তম শিবিরে। ৪ থেকে ৪০ বছর মিলিয়ে সদস্য ১৫৪ জন। বেরো পাহাড়টির আশপাশ ঘিরে রয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় বোল্ডার। তাই প্রথম বার পাহাড় চড়ার অভিজ্ঞতা আহরণের জন্য বেরোই আদর্শ। দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও কম। তাই প্রতি বছর এখান থেকেই পাহাড় চড়ার অ-আ-ক-খ শুরু করেন শিক্ষানবিশ পর্বতারোহীরা। এ বার নতুন মুখ ছিল ৮৮টি। চার দিনের শিবিরে শুধু পাহাড়ে চড়াই নয়, তাঁরা শিখলেন প্রকৃতি পাঠও।

দুর্গা স্মরণে
আজীবন কাজ করেছেন বাঁকুড়া পুরসভায়। কিন্তু আজীবনের ব্রত ছিল আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষণা ও পুরাতত্ত্ব অনুসন্ধান। প্রায় একার চেষ্টায় করে গিয়েছেন বাঁকুড়া পুরসভার ইতিহাস রচনার কাজ। এই বিষয়ে তাঁর নানা লেখা নানা সময়ে বেরিয়েছে বাঁকুড়া পরিচয়, বাঁকুড়ার খেয়ালী-র মতো পত্রপত্রিকায়। দীর্ঘদিন আবৃত্তিকার ছিলেন আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্রে। গত ১৫ নভেম্বর মাত্র ৬৭ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন তিনি, দুর্গা চট্টোপাধ্যায়। আগামী রবিবার, ১২ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টায় মাচানতলায় বঙ্গ বিদ্যালয়ে তাঁর স্মরণসভার আয়োজন করেছেন বন্ধু ও পরিজনেরা।

মিহিদানা বাঁচাতে
সীতাভোগ আর মিহিদানার মতো ‘হেরিটেজ মিষ্টি’ রফতানি করতে হলে অন্তত ছ’মাস অবিকৃত রাখতে হবে। কী ভাবে তা করা যায় তা শেখাতে সোম ও মঙ্গলবার বর্ধমান জেলা প্রশাসন ও রাজ্য ক্ষুদ্রশিল্প দফতরের উদ্যোগে শহরের সার্কিট হাউসে হয়ে গেল প্রশিক্ষণ শিবির। ছোট একটি যন্ত্রের সাহায্যে কী ভাবে সীতাভোগ ও মিহিদানা বায়ু-নিরোধক সুদৃশ্য প্যাকেটে ভরা সম্ভব, হাতে-কলমে তা দেখানো হয়। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব প্যাকেজিং-এর ডেপুটি ডিরেক্টর বিধান দাস ছানার মানের উপরে জোর দেন, তার জন্য দুগ্ধ রসায়নাগার গড়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন।

পথিকবন্ধু
নাম তাঁর অনাথবন্ধু। কিন্তু তাঁর প্রকৃতি যাঁরা জানেন, তাঁরা বলবেন ও নাম নামমাত্র, উনি আসলে পথিকবন্ধু। দুর্গম পাহাড়ের পথ কিংবা নিছক জঙ্গলের মধ্যে ইতিউতি ভ্রমণ, বহু পথিকের পাশে থাকেন অনাথদা, অনাথবাবু বা অনাথ। বহু দিন ধরে ভ্রমণ বিষয়ে লেখালেখি করছেন দেশ-সহ বেশ কিছু পত্রিকায়। প্রকাশিত হয়েছে বহু লেখা। গবেষণাও করছেন বাঙালির ভ্রমণসাহিত্য বিষয়ে। আর এই গবেষণার কাজেই দীর্ঘকাল ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে এসেছেন উমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের। অ্যালবাম-সহ উমাপ্রসাদের বেশ কয়েকটি বইয়ের নেপথ্য সম্পাদক তিনিই। এ বার আর সম্পাদনা নয়, বাংলা ভ্রমণসাহিত্যে উমাপ্রসাদকে নিয়ে পুরো বই-ই লিখে ফেললেন একটা, পরিব্রাজক উমাপ্রসাদের ভ্রমণসাহিত্য-অন্তরচর্চা (রূপালি প্রকাশন)। সম্প্রতি সেই বই প্রকাশিত হল কলকাতায়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে বই প্রকাশ মহানগরে হলে কী হবে, বর্ধমান জেলার রূপনারায়ণপুরের বাসিন্দা অনাথবন্ধু চট্টোপাধ্যায়ের কালি-কলম-মন তিনটিতেই তো মাটির গন্ধ, বাংলার পথের গন্ধ।


Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.