হাড় কাঁপানো শীতে তাদের সেই ত্বেজই হারিয়ে ফেলেছে ব্যাঘ্রকুল!
মাঘ তো বহু দূরে। মাঝ-পৌষেই খয়েরবাড়ির পুনর্বাসন কেন্দ্রে তারা প্রায় মুষিকসম হয়ে পড়েছে।
জঙ্গলের জীবন থেকে তাদের যোজন দূরত্ব। অনেকেই সে জীবনের স্বাদও তেমন পায়নি। সার্কাসের খাঁচা বন্দি জীবনে শীত বরং তাদের কাছে পরম প্রিয় ঋতু ছিল। কিন্তু সে জীবন থেকে বছর কয়েক আগে ‘ছুটি’ হয়ে যাওয়ার পরে ডুয়ার্সের ফালাকাটার অদূরে খয়েরবাড়ি পুনর্বাসন কেন্দ্রে অন্য সুযোগ সুবিধা পেলেও শীত তাদের বেজায় কাবু করে ফেলছে। |
বনকর্মীরা তাদের ঠাকরেঠোরে রাখতে এখন জ্বালানি কাঠের খোঁজে মরিয়া। বেলা বাড়তেই ঠান্ডার প্রকোপ হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে। আর সেই প্রবল শীতে কুঁকড়ে গিয়ে তাবড় বাঘেদেরও অসহায় ভাবে গোঙাতে শোনা যাচ্ছে। খাঁচাবন্দি পাঁচ বুড়ো-বাঘের জন্য তাই সন্ধে থেকে খাঁচার পাশে আগুন জ্বালাতে হয় বনকর্মীদের। আগুন জ্বালানো হলে তার গা ঘেঁষে খাচার সামনে শুয়ে পড়ছে আরামে। কোচবিহারের ডি এফ ও রাজেন্দ্র জাখর বলেন, “একটি ছাড়া বাকিদের বয়স গড় আয়ুর চাইতে বেশিই হয়ে গিয়েছে। টানা নজরদারি ও যত্নের কারণে তাদের বাঁচিয়ে রাখা হচ্ছে। বাঘগুলো বয়সের কারণে শীতে বেশি কাবু হয়ে পড়েছে। তাই আগুন জ্বালিয়ে ওদের গরম রাখার ব্যবস্থা হয়েছে।”
২০০০ সালে কেন্দ্রীয় সরকার সার্কাসে বাঘ-সিংহ সহ হিংস্র প্রাণীদের খেলাধুলা দেখানো আইন করে বন্ধ করে দেয়। সে সময় সার্কাস কোম্পানির মালিকেরা বাঘ গুলিকে তাঁবু থেকে সরিয়ে নিজেদের বাগান বাড়িতে নিয়ে যান। পশ্চিমবঙ্গে দুটি সার্কাস কোম্পানির ১৯টি বাঘ টানা পাঁচ বছর ধরে বাগান বাড়িতে পড়ে ছিল। কিন্তু বসিয়ে বাঘগুলির খাওয়া ও চিকিৎসার খরচ জোগানো তাঁদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না। সার্কাস কোম্পানির মালিকেরা সরকারের হেপাজতে বাঘ গুলির লালন পালনের ব্যবস্থা করার দাবি জানায়। চাপের মুখে পড়ে ২০০৫ সালে ডুয়ার্সের দক্ষিণ খয়েররবাড়িতে চিতাবাঘের পাশাপাশি সার্কাসের বাঘগুলির জন্য আলাদা খাঁচা বানানো হয়। ১৯ টি বাঘের মধ্যে চারটি বাঘ দার্জিলিঙের পদ্মজা নাইডু চিড়িয়াখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। বাকি ১৫ টি বাঘ রাখা হয় খয়েরবাড়ি খাঁচায়। গত আট বছরের মধ্যে অবশ্য ১১ টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। বাকি চারটি বাঘ রয়েছে। রয়েছে ২০০৮ সালে সুন্দরবন থেকে উদ্ধার করা পেছনের বাঁ পা কাটা রাজা নামের বাঘ রয়েছে এখানে।
ওই বাঘেদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা পার্থসারথি বসু বলেন, “যতদূর জানি, বাঘগুলি সার্কাসে থাকার সময়ে এতটা শীতকাতুরে ছিল না। কারণ শীতেই তো সার্কাস হতো। তবে ডুয়ার্সের শীতে তারা এখন জবুথবু। ওদের চাঙ্গা রাখতে সারা রাত আগুন জ্বালানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
|
বক্সায় হাতি-পুজো
নিজস্ব সংবাদদাতা • শামুকতলা |
সারা বছর বুনো হাতির হানা লেগেই থাকে। বন দফতরকে বলে সমস্যা মেটেনি। হাতির হামলার হাত থেকে বাঁচতে তাই মূর্তি গড়ে হাতি পুজোর আয়োজন করলেন গ্রামের বাসিন্দারা। পুরোহিত ডেকে মন্ত্র পড়ে মঙ্গলবার হাতি পুজো হল আলিপুরদুয়ার ১ নম্বর ব্লকের কালকূট বনাঞ্চল লাগোয়া সাত কোদালি বস্তিতে। এই এলাকা বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের মধ্যে পড়ে। হাতি পুজো কেন্দ্র করে ছোট মেলাও বসেছে। গোটা গ্রামের প্রায় পাঁচশো বাসিন্দাকে খিচুড়ি খাওয়ানো হয়। পুজোর খরচের জন্য বাসিন্দারাই চাঁদা দিয়েছেন। গ্রামবাসীদের মধ্যে মানিক বর্মন, শিবানী বর্মনরা জানান, হাতির হামলা থেকে বাঁচতে এই পুজোর আয়োজন। |