|
|
|
|
দুর্নীতির আঁচ মিলতেই দিল্লিতে বদলি আটশো
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
৭ জানুয়ারি |
ঘুষ নিতে গিয়ে কাল স্টিং অপারেশনে ধরা পড়েছিলেন দিল্লি জল পর্ষদের তিন আধিকারিক। কালই তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়। আর রাত পোহাতেই অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার কার্যত নজিরবিহীন ভাবে জল পর্ষদের ৮০০ কর্মীকে এক ধাক্কায় বদলি করার সিদ্ধান্ত নিল।
আম আদমি পার্টির নেতারা বলছেন, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েই ক্ষমতায় এসেছে তাঁদের দল। তাই প্রথম রাতেই দুর্নীতি মারতে মরিয়া তাঁদের মুখ্যমন্ত্রী। আগামী লোকসভা ভোটে ভাল ফল করার জনও এই ক্ষেত্রে দ্রুত এগোতে চান কেজরিওয়াল। দিল্লি সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়েছে, যাঁরা ওই দফতরে তিন বছরের বেশি ছিলেন, তাঁদের বদলি করা হয়েছে। এটি একটি রুটিন সিদ্ধান্ত। প্রশাসনের একাংশ কিন্তু জানাচ্ছে, জল পর্ষদের দায়িত্বে রয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। নিজের দফতরে দুর্নীতির ঘটনা সামনে আসায় কাল ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ জানান তিনি। তার পরেই আজ সকালেই এই সিদ্ধান্ত। এতে অন্যান্য দফতরের দুর্নীতিগ্রস্ত অফিসারদেরও বার্তা দেওয়া গেল বলে মনে করছেন দিল্লির পূর্তমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া।
শপথের দিনই ঘুষ নেওয়া বা দেওয়ার বিরুদ্ধে শপথ নিয়েছেন কেজরিওয়াল ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা। এমনকী, তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে শপথ অনুষ্ঠানে আসা সব দর্শনার্থীও ওই একই শপথ নেন সে দিন। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরেও একাধিক বার তিনি দুর্নীতিগ্রস্ত অফিসারদের রেয়াত না করার বার্তা দিয়েছেন। কিন্তু তাতে যে দিল্লির সরকারি কর্মীদের বিশেষ কোনও হেলদোল হয়নি, গত কালই তা স্পষ্ট হয়ে যায় একটি বৈদ্যুতিন মাধ্যমের স্টিং অপারেশনে। দেখা যায়, বিনোদ কুমার, অতুল প্রকাশ ও সুনীল নামে তিন অফিসার জলের মিটার ও নমুনায় হেরফের করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নিচ্ছেন। তড়িঘড়ি ওই তিন আধিকারিককে সাসপেন্ড করে তদন্ত শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় দিল্লি সরকার। কিন্তু আপ সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে কাল রাতেই আলোচনায় বসেন দলীয় নেতৃত্ব। ঠিক হয়, দুর্নীতি প্রশ্নে প্রথম থেকেই কড়া বার্তা দেবে প্রশাসন।
আপ সূত্রে বলা হয়েছে, তাদের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল রাজধানীর প্রত্যেক পরিবারকে দিনে ৭০০ লিটার করে জল দেওয়া। সরকারে এসে দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্তও নিয়েছেন কেজরিওয়াল। কারণ তিনি মনে করেন, ট্যাঙ্কার মাফিয়াদের সঙ্গে জল পর্ষদের অফিসারদের আঁতাঁত ভেস্তে দিতে পারলেই এটা করা সম্ভব হবে। কেজরিওয়াল এ-ও জানেন, দ্রুত প্রতিশ্রুতি রাখতে পারলে লোকসভা ভোটেও তার ইতিবাচক প্রতিফলন মিলতে পারে। প্রতিশ্রুতি পূরণের বিষয়টি মাথায় রেখেই তিনি জল দফতরটি নিজের হাতে রেখেছেন। এ অবস্থায় দুর্নীতির প্রথম আঁচ মিলতেই কড়া পদক্ষেপ করার আগে দু’বার ভাবেননি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। |
|
|
|
|
|