নিলামের মঞ্চে এ বার মোবাইল নম্বরও। খাস কলকাতায়। তা-ও স্রেফ নাম-কা-ওয়াস্তে নয়। রীতিমতো চড়া ন্যূনতম দর বেঁধে দিয়ে।
নম্বরের ভিড়ে হারিয়ে না-গিয়ে আলাদা ভাবে নজর কাড়ার চাহিদাকে পুঁজি করেই এই নম্বর নিলামকে বিপণনের নতুন হাতিয়ার করতে চাইছে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম পরিষেবা সংস্থা বিএসএনএল। গত ২ জানুয়ারি থেকে কলকাতা সার্কেলে ৭৫টি বিশেষ নম্বরের নিলাম শুরু করেছে তারা। নেটে ওই নিলাম চলবে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। যেখানে বিভিন্ন নম্বরের জন্য এক হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ন্যূনতম দর বেঁধে দিয়েছে সংস্থাটি।
যেমন, নিলামে ৯৪৭৭১১১১১১ বা ৯৪৭৭২২২২২২-এর ন্যূনতম দর ৩৫ হাজার টাকা! ৯৪৩৩০৯৪৩৩০-এর ২৫ হাজার। এবং নিলামে অন্তত এই দর কিংবা তার থেকেও বেশি দাম দিতে আগ্রহী গ্রাহক মিলবে বলেই সংস্থাটির দাবি।
আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি সংস্থার ‘ব্র্যান্ড’ (ভাবমূর্তি) জোরদার করতে এ ধরনের পরিকল্পনার গুরুত্ব স্বীকার করে কলকাতা টেলিফোন্সের সিজিএম গৌতম চক্রবর্তী বলেন, “এ ধরনের বিশেষ নম্বর যেমন সহজে চোখে পড়ে, তেমনই তা মনে রাখাও সহজ। ফলে এ জাতীয় নম্বরের ব্যবহার যত হবে, ততই সংস্থার ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’-ও বাড়বে।” তাঁদের দাবি, বিভিন্ন সংস্থার ‘কাস্টমার কেয়ার’ বিভাগ ও পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলি প্রায়ই এ ধরনের নম্বর চায়। কারণ, তা মনে রাখা সহজ। তা ছাড়া, অনেক সময় আবার একটু বিশেষত্বযুক্ত নম্বর চান সাধারণ গ্রাহকও। এঁরা অনেকেই নিলামে আগ্রহী হবেন বলে সংস্থার দাবি।
গাড়ির জন্য পছন্দসই নম্বর পেতে অনেকেই নথিভুক্তির সময় পরিবহণ দফতরের কাছে আঞ্চলিক কার্যালয়ে বাড়তি দাম দেন। ঠিক একই ভাবে পছন্দসই মোবাইল নম্বরও পেতে চান অনেকে। নম্বরে বিশেষত্ব থাকলে, তা বাড়তি দামে বিক্রি করার চল টেলিকম শিল্পে আগে থেকে রয়েওছে। সাধারণত এগুলি ‘ফ্যান্সি’ বা ‘প্রিমিয়াম’ নম্বর বলে পরিচিত। কিন্তু সে ক্ষেত্রে ওই নম্বরের সিমের দর আগে থেকেই নির্দিষ্ট করা থাকে। যিনি তা প্রথমে দিতে রাজি হবেন, সিম তাঁরই। ফলে এক জন সেই দর দিতে রাজি হয়ে গেলে, তা পাওয়ার জন্য বাকিদের আর বাড়তি দর হাঁকার সুযোগ নেই। এমনকী এ ধরনের কিছু সিম ৭৫০ টাকায় বিক্রি করেছে বিএসএনএল-ও। কিন্তু এখন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির দাবি, বিশেষ নম্বর নিলামে তুললে, সংস্থার আয় যেমন বাড়বে, তেমনই ওই সিম পেতে ঝাঁপাতে পারবেন অনেকে।
টেলিকম শিল্পের একাংশের অবশ্য দাবি, বেসরকারি সংস্থাগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সে ভাবে এঁটে উঠতে পারছে না বিএসএনএল। তাই চমক দিতেই এই উদ্যোগ। কিন্তু বিএসএনএলের দাবি, গত ২ জানুয়ারি নিলাম শুরু হওয়ার পর ইতিমধ্যেই গ্রাহকেরা ৩০টিরও বেশি দর হেঁকেছেন। তা ছাড়া, এর আগে অন্য কয়েকটি রাজ্য, এমনকী এ রাজ্যেরই ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কেলে এই নিলাম হয়েছে। সংস্থার দাবি, শুধু ওই সার্কেলেই নিলামের মাধ্যমে ১০০টি নম্বর বিক্রি হয়েছে। তার মধ্যে চার-পাঁচটি ২০-২২ হাজারেও বিকিয়েছে বলে সংস্থা সূত্রে খবর। |