বিনোদন টিআরপি প্রক্রিয়া ঢেলে সাজতে নয়া নিয়ম

৭ জানুয়ারি
টেলিভিশন চ্যানেল ও সম্প্রচারিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানের রেটিং নির্ধারণ করার প্রক্রিয়া এ দেশে গত বিশ বছর ধরে চলছে। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া কতটা পোক্ত এবং স্বচ্ছ, তা নিয়ে বিতর্কও বহু দিনের। রেটিং এজেন্সিগুলির জন্য এ বার নতুন, নির্দিষ্ট নিয়ম প্রবর্তন করতে চলেছে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। পরশু এ ব্যাপারে অনুমোদন দিতে পারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।
এই মুহূর্তে দেশে একটিই টেলিভিশন রেটিং এজেন্সি রয়েছে। যার নাম টেলিভিশন অডিয়েন্স মেজারমেন্ট তথা ট্যাম। যারা টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট তথা টিআরপি স্থির করে। এ জন্য গোটা দেশে দশ হাজার বাড়িতে তাদের মিটার বসিয়ে রেখেছে ট্যাম। এর মধ্যে ১৮০৫টি মিটার বসানো রয়েছে এমন শহরে, যেখানকার জনসংখ্যা এক লক্ষেরও কম। সরকারের বক্তব্য, মাত্র এই ক’টি মিটার বসিয়ে গোটা দেশের মানুষের পছন্দ বিচার করা যায় না। তাই নতুন নিয়ম কার্যকর হলে, কোনও রেটিং এজেন্সিকে কমপক্ষে ২০ হাজার মিটার বসাতে হবে। তার পর প্রতি বছর মিটার সংখ্যা ১০ হাজার করে বাড়াতে হবে। যতক্ষণ না তা ৫০ হাজারে পৌঁছয়।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক এ নিয়ে যে নোট পাঠিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, প্রতিটি রেটিং এজেন্সিকে বাধ্যতামূলক ভাবে মন্ত্রকে নাম নথিভুক্ত করাতে হবে। কোনও বিজ্ঞাপন সংস্থা বা সম্প্রচার সংস্থায় কোনও রেটিং এজেন্সির ১০% বেশি অংশীদারি থাকতে পারবে না। সেক্ষেত্রে ওই রেটিং এজেন্সি এমন ভাবে রেটিং নির্ধারণ করতে পারে যে তাদের সম্প্রচার সংস্থা বা বিজ্ঞাপন সংস্থা সুবিধা পেয়ে যাবে। রেটিং প্রযুক্তি-নিরপেক্ষ হতে হবে। অর্থাৎ কেব্ল টিভি, ডিটিএইচ, টেরিস্টেরিয়াল টিভি সব ক্ষেত্রে মানুষের পছন্দ খতিয়ে দেখতে হবে। একই বাড়িতে দিনের পর দিন মিটার বসিয়ে রাখা চলবে না। প্রতি বছর অন্তত ২৫% বাড়ি থেকে মিটার সরিয়ে নতুন বাড়িতে লাগাতে হবে। এজেন্সিগুলি কোনও চ্যানেল বা তার অনুষ্ঠানের রেটিং করতে কোন প্রক্রিয়া অবলম্বন করছে তা মন্ত্রককে জানাতে হবে। এই নিয়ম লঙ্ঘন করলে প্রথম ধাপে সরকার রেটিং সংস্থার ১ কোটি টাকা মূল্যের দু’টি ব্যাঙ্ক-গ্যারান্টি বাজেয়াপ্ত করবে। দ্বিতীয় বার একই ত্রুটি ধরা পড়লে, রেটিং এজেন্সির রেজিস্ট্রেশন বাজেয়াপ্ত করা হবে।
এ ভাবেই নয়া নিয়ম চালু করে সরকার ট্যাম-এর একচেটিয়া কারবার বন্ধ করতে চাইছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, বিষয়টি নিয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা করা হয়েছে। স্থায়ী কমিটির কিছু সুপারিশও রয়েছে। পরে টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটির সঙ্গে সরকার আলোচনা চালায়। তা ছাড়া ফিকি-র সেক্রেটারি জেনারেল থাকাকালীন অমিত মিত্রের নেতৃত্বে একটি কমিটিও কিছু সুপারিশ দিয়েছিল সরকারকে।
মন্ত্রকের এক কর্তা আজ বলেন, প্রতিটি স্তরের আলোচনাতেই এই বিষয়টি উঠে আসে যে বর্তমান রেটিং প্রক্রিয়া স্বচ্ছ নয়। পর্যাপ্ত সংখ্যায় নমুনা সংগ্রহ করা হয় না। বেছে বেছে কিছু শহরে মিটার লাগানো হয়। এতে গোটা দেশের মানুষের পছন্দ-অপছন্দ বোঝা সম্ভব নয়। তা ছাড়া ট্যাম-এ বিজ্ঞাপন এজেন্সি এবং সম্প্রচার সংস্থার শেয়ারও রয়েছে। এতে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।
এ ব্যাপারে মন্ত্রকের এক অতিরিক্ত সচিব আজ বলেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, আয়ারল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টেলিভিশন রেটিংয়ের ক্ষেত্রে স্বনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা কায়েম রয়েছে। অর্থাৎ কোনও চ্যানেল নিজেদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে নিজেরাই রেটিং করে। সরকার সেখানে মাথা গলায় না। সরকারকে তখনই মাথা গলাতে হয়, যখন স্বনিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা কাজ করে না বা যখন প্রতিযোগিতা নেই। তাই জন্যই এখানে নতুন নিয়ম তৈরির পথে হাঁটতে হচ্ছে কেন্দ্রকে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.