এক যুবককে শুঁড়ে করে তুলে পিষে মারল দলছুট হাতি। মৃতের নাম ইন্দ্রজিৎ ঘোষ (১৯)। বাড়ি গড়বেতা থানার পশ্চিম ন্যাদাকোপায়। সোমবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে রসকুণ্ডু বিটের অন্তর্গত কামারখালি জঙ্গলে। রূপনারায়ণ বিভাগের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “হাতির বড় দলটি বাঁকুড়ার জয়পুরে গিয়েছে। ছোট দলটি ওই এলাকায় রয়েছে। হাতি তাড়ানোর সব রকম চেষ্টা চলছে।” গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শালবনির বেঁউচ্যায়হাতির হানায় শালকাম হেমব্রম নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। চার দিনের মাথায় ফের এক যুবকের মৃত্যুতে গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত। বস্তুত, দিন কয়েক আগে দলমার ১৩০টি হাতির দল শালবনি ব্লকে ঢুকে পড়ে। তার আগে দলটি ওড়িশা থেকে নয়াগ্রাম, নয়াগ্রাম থেকে সাঁকরাইল- খড়্গপুর গ্রামীণ- মেদিনীপুর সদর ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় দাপিয়ে বেড়ায়। দলটিতে দু’টি সদ্যোজাত ছিল। তার একটি গত মঙ্গলবার ভোরে মারা যায়। অন্যটি অবশ্য দলের সঙ্গে রয়েছে। বন দফতর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে বড় দলটি বাঁকুড়ার জয়পুরে চলে গিয়েছে। কয়েকটি হাতি এখনও গড়বেতার রসকুণ্ডু বিট এলাকায় রয়েছে। ধীরে ধীরে দলটি এগোচ্ছে। ওই সূত্রে খবর, সোমবার দুপুরে কাঠ কাটতে জঙ্গলে গিয়েছিলেন ইন্দ্রজিৎ। তখনই একটি দলছুট হাতির মুখোমুখি পড়েন তিনি। ওই যুবককে শুঁড়ে করে তুলে পিষে মারে হাতিটি।
|
দেড় দশক আগে উত্তরপ্রদেশ বন দফতরের কাছে চেয়ে পাঠানো পাঁচটি বারোশিঙ্গা হরিণ আনতে চলেছে রাজ্যের বন দফতর। ১৩ জানুয়ারি ট্রাক নিয়ে জলদাপাড়া বন দফতরের তিন কর্মী রওনা দেবেন লখনউয়ের দিকে। এ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে নতুন অতিথিদের রাখা হবে জলদাপাড়ার পূর্ব রেঞ্জের তিন একর লোহার জাল দিয়ে ঘেরা এলাকায়। বর্তমানে ১২টি বারোশিঙ্গার সঙ্গে তাদের রাখা হবে। ডিএফও রাজেন্দ্র জাখর বলেছেন, “হরিণের সংখ্যা ৩০টি হলে আমরা তাদের জঙ্গলে ছাড়ব। পাঁচটি হরিণ নিয়ে আসার পর দ্রুত তাদের সংখ্যা বাড়বে আশা করছি।” জলদাপাড়ায় বর্তমানে কোটরা, সম্বর, চিতল এবং হক প্রজাতির হরিণ রয়েছে। একসময় এই জঙ্গলে বারোশিঙ্গা প্রচুর সংখ্যায় থাকলেও সত্তরের দশকে শিকারিদের দৌরাত্ম্যে ক্রমশ তলানিতে ঠেকে। জঙ্গল লাগোয়া হাটগুলিতে হরিণের মাংস বিক্রি হতে থাকে। এলাকার লোকজনকে সচেতন করে শিকারের প্রবণতা কমানো হয়। জলদাপাড়ায় বারোশিঙ্গার সংখ্যা বাড়াতে ১৯৯৮ সালে উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছে রাজ্যের বন দফতর আবেদন করে। তারা ১১টি বারোসিঙ্গা দিতে রাজি হয়। ৬টি বারোশিঙ্গা আনা হয়েছিল।
|
কুলিক পক্ষিনিবাসের সংরক্ষিত ও অসংরক্ষিত জঙ্গলে ২৫ হাজারের বেশি বেজি রয়েছে। শীত পড়তে শিকারের খোঁজে জঙ্গল ছেড়ে ওরা দল বেঁধে উঠে পড়ে উঁচু জমিতে। ঢুকে যায় সর্ষে খেতেও। বন কর্মীদের নজরদারির অভাবে বেজিদের শিকারিদের খপ্পরে পড়তে হচ্ছে। এক সপ্তাহ ধরে রায়গঞ্জে কমলাবাড়ি, কর্ণজোড়া, নারায়ণপুর, সুদর্শনপুর-সহ আদিবাসীদের একাংশ খাওয়ার জন্য আব্দুলঘাটা এলাকায় দিনভর বেজিগুলিকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মারছে। পরিবেশ প্রেমী বিভিন্ন সংগঠনের আশঙ্কা এমন চলতে থাকলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। উত্তর দিনাজপুরের ডিএফও দ্বিপর্ণ দত্ত বলেন, “কর্মী ও আধিকারিকদের সতর্ক করে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে পুলিশে অভিযোগ জানানো হবে।” যাঁরা বেজি শিকার করছেন, তাদের বক্তব্য, “বন দফতরের কর্মীদের সামনেই আমরা বেজি শিকার করি। কেউ আপত্তি করেনি।” পিপল ফর অ্যানিম্যালের জেলা সম্পাদক গৌতম তান্তিয়া বলেন, “বেজি শিকারিদের সঙ্গে বনকর্মীদের আঁতাত না থাকলে নির্বিচারে বেজি মারা পড়ত না। বেজি শিকার বন্ধ না হলে আন্দোলন করব।”
|