মণীশ মিত্র পরিচালিত ‘অর্ঘ্য’ নাট্যদল-এর ‘শেক্সপিয়ারস ট্র্যাজিক হিরোজ’ নাটকে ‘ওথেলো’র একটি দৃশ্যে নগ্নতা রয়েছে। নাটকের বিজ্ঞাপনেও সে কথা আছে। প্রবীণ নাট্যশিল্পী ও নির্দেশক শ্যামল ভট্টাচার্য এই নিয়ে ফেসবুকে নেতিবাচক মন্তব্য করেছিলেন, যার জেরে শ্যামলবাবুর কাছে ৩ জানুয়ারি ভোর ৬-৫১ মিনিটে, ৬-৫৮ মিনিটে এবং ৭-৩১ মিনিটে তিনটি ফোন আসে। শ্যামলবাবুর দাবি অনুযায়ী, আলাদা আলাদা তিনটি নম্বর থেকে মণীশ মিত্র মহাশয় ফোন করে ওঁকে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করেন, মারধর এমনকী খুন করার হুমকি পর্যন্ত দেন। বিপর্যস্ত শ্যামলবাবু হাওড়ার শিবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ফোন নম্বরগুলিও উনি পুলিশকে জানিয়েছেন। মণীশ মিত্র মহাশয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বিষয়টি পুলিশ খতিয়ে দেখবে এমন আশ্বাসও মিলেছে। (‘নাট্যপরিচালকের বিরুদ্ধে খুনের হুমকির অভিযোগ’, আ বা প, ৪-১) অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ-এর বাইরেও কিছু কথা থাকে। |
বেশ কিছু কাল ধরেই বাংলা থিয়েটারের কিছু মানুষের মধ্যে এক রকমের অসহিষ্ণুতা দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে নানান সাক্ষাৎকার, লেখা ও মন্তব্য শালীনতার সীমা অতিক্রম করছে। একটি ‘নাটক’ নির্দেশক কী ভাবে উপস্থাপনা করবেন, তার পূর্ণ স্বাধীনতা তাঁর আছে। কিন্তু বহু সময়ে শিল্পচর্চার নানান প্রয়োগপদ্ধতি নিয়েও প্রবল সমালোচনা হয়, এটাই সুস্থ স্বাভাবিক ঘটনা। প্রসঙ্গত, মণীশবাবুও সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু নাট্য প্রযোজনাকে খুবই কঠিন ভাষা ও ভঙ্গিতে আক্রমণ করেছেন। সেই ‘সমালোচনা’ করার স্বাধীনতাও তাঁর আছে এ যদি সত্য হয়, তা হলে শ্যামল ভট্টাচার্য মহাশয়েরও সেই সুযোগ ও স্বাধীনতা প্রাপ্য।
বহু দর্শক বাংলা নাটক দেখতে আসছেন, এ রকম একটা সময়ে এমন ঘটনা আশঙ্কাজনক। আমরা মনে করি, থিয়েটারে সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে ‘সত্য’ উন্মোচিত হোক। মণীশ মিত্র ও তাঁর দল সাফল্যের সঙ্গে নাট্যচর্চায় রত থাকুন। উল্টো দিকে, যে কোনও ব্যক্তিরই মত প্রকাশের স্বাধীনতা যেন অন্যায় ভাবে দমিয়ে দেওয়ার প্রয়াস না হয়।
সুমন মুখোপাধ্যায়, বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়, কৌশিক সেন। কলকাতা-১ |