দু’দিনের সফরে এসেদেদার প্রতিশ্রুতি মন্ত্রীর
দু’দিনের সফরে দুই মেদিনীপুরে এসে সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বন্যা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ, নদীবাঁধ সংস্কার-সহ নানা বিষয়ে সেচ দফতরের সক্রিয় ভূমিকার কথা তুলে ধরলেন।
গত বর্ষায় রাজ্যে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হলেও কেলেঘাই-কপালেশ্বরী নদী কিছুটা সংস্কারের ফলে ওই দুই নদীর বন্যার কবলে জেলার মানুষকে পড়তে হয়নি বলে মন্তব্য করলেন মন্ত্রী। রবিবার উত্তর কাঁথির মশাগাঁয় জমিতে সেচের জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাঁথি ১ ব্লকের পলতাবেড়িয়া, কাঁথি ৩ ব্লকের সিজুয়া, ভাজাচাউলি, ও পানভুঁইয়ে চারটি স্লুইস গেটের উদ্বোধন করে সেচমন্ত্রী বলেন, “ওই দুই নদীর প্রায় ৫৬ কিলোমিটার খাল ইতিমধ্যেই সংস্কার করা হয়েছে। চার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই চারটি স্লুইস গেটের মাধ্যমে ১৭ বর্গ কিলোলমিটার এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষ উপকৃত হবেন।” সেচমন্ত্রী জানান, “দ্বিতীয় পর্যায়ের সংস্কার কাজের জন্য কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে কোনও টাকা আসেনি। তা সত্বেও সেচ দফতর ইতিমধ্যে আরও ৬৬ কিলোমিটার খাল সংস্কারের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।”
ঘাটালে সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
মন্ত্রী জানান, দিঘার সমুদ্র উপকূলের ভাঙন ঠেকাতে ৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে দিঘা থেকে শঙ্করপুর পর্যন্ত বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী দিনে মেরিন ড্রাইভের আদলে দিঘা থেকে মন্দারমণি পর্যন্ত সমুদ্রের পাড় বরাবার কোস্টাল রোড তৈরি করা হবে। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ইতিমধ্যে এর নকশা তৈরির কাজ চলছে।” এ দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ শিশির অধিকারী। শিশিরবাবু বলেন, “রাজ্যের গ্রামাঞ্চলে এখন কংক্রিটের রাস্তা, সেতু তৈরি হচ্ছে। এটাই হল পরিবর্তন।” সভায় বক্তব্য রাখেন বিধায়ক দিব্যেন্দু অধিকারী, বিধায়ক বনশ্রী মাইতি, মহকুমাশাসক সরিৎ ভট্টাচার্য-সহ সেচ দফতরের কর্তারা। এ দিনই তমলুকের শঙ্করআড়া, পায়রাটুঙ্গি, গঙ্গাখালি, প্রতাপখালি ও কোলাঘাটের দেনান-দেহাটি নিকাশিখাল সংস্কারের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা ঘোষণা করেন সেচমন্ত্রী। রবিবার তমলুক পুরসভার দেড়শো বছর পূর্তি উপলক্ষে তমলুক রাজ ময়দানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সেচমন্ত্রী বলেন, “গত বন্যায় কাঁসাইয়ের নদীরবাঁধ ভেঙে পাঁশকুড়া, তমলুকে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। দীর্ঘদিন নিকাশি নালা সংস্কার না করায় মানুষের দুর্ভোগ বহুগুণ বেড়েছিল।” তিনি জানান, “পরিস্থিতি দেখে শঙ্করআড়া, গঙ্গাখালি, পায়রাটুঙ্গি, প্রতাপখালি ও কোলাঘাটের দেনান-দেহাটি মিলিয়ে ৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ নিকাশিখাল সংস্কারের কাজ একমাসের মধ্যে শুরু হবে। তাতে মোট ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। পুরসভার অনুষ্ঠানে ছিলেন সাংসদ শিশির অধিকারী, জেলা পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন।
শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের শিলাবতী ও ঝুমি প্রভৃতি নদীবাঁধের ভাঙন পরিস্থিতি ঘুরে দেখে দ্রুত তা সংস্কারেরও প্রতিশ্রুতি দিলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন সেচমন্ত্রী ছাড়াও সেচ দফতরের পরিষদীয় সচিব তথা ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই, দাসপুরের বিধায়ক মমতা ভুঁইয়া-সহ এলাকার জন প্রতিনিধিরা শিলাবতীর সামুইহানা, ঝুমি নদীর চাউলি, সিংহপুর, নিশ্চিন্তপুর-সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। সেচমন্ত্রী বলেন, “যা অবস্থা, এখনই কাজ শুরু না করলে এলাকাটির অস্তিত্ত্বই বিপন্ন হবে।” সেখানে দাঁড়িয়েই দফতরের দুই মেদিনীপুরের জেলা অধীক্ষক বাস্তুকার সুবীর লাহাকে দ্রুত ডিপিআর (ডিটেল প্রোজেক্ট রিপোর্ট) তৈরি করে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন সেচমন্ত্রী। বাস্তুকার মন্ত্রীকে জানান, “ইতিমধ্যেই ঝুমি নদীর জন্য প্রায় এক হাজার মিটার ডিপিআর তৈরি হয়ে গিয়েছে।” তা শুনে সোমবার ডিপিআর নিয়ে সেচ ভবনে দেখা করতে বলেন মন্ত্রী। ওই দিন ঘাটালের সামুইহানা যাওয়ার সময় শিলাবতী নদীবাঁধের রাস্তাটি দেখে মন্ত্রী ওই রাস্তা সংস্কারের জন্য দফতরের বাস্তুকারদের নির্দেশ দেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.