|
|
|
|
|
নেশা কাটাতে কার্ডিও ট্রেনিং করুন
সারা সপ্তাহ জুড়ে পার্টি করে আপনি ক্লান্ত। কী করবেন তা হলে?
পরামর্শ দিচ্ছেন ফিটনেস বিশেষজ্ঞ চিন্ময় রায়। |
|
নতুন বছরের এই সপ্তাহটায় ক্লাব থেকে ডিস্কো প্রচুর পার্টি করে ফেলেছেন তো! আর জিমে যাওয়ার কথাও নিশ্চয়ই ভুলেই গিয়েছেন! পার্টিতে ড্রিঙ্কের সঙ্গে টুকটাক মুখ চালানো তো আছেই। সে রেশমি কাবাব হোক কি রোস্টেড টার্কি। আর পরের দিনের হ্যাংওভার তো উপরি পাওনা। কী করবেন তা হলে পার্টির এই ক’দিন?
ভাজা খাবার বাদ রাখুন
ভাজা যে-কোনও খাবার শরীরে টক্সিনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। আর ব্যায়াম করলেও ফ্যাট বার্ন হওয়ার বদলে কার্বোহাইড্রেট, এমনকী প্রোটিনও শক্তি হিসেবে ব্যয় হয়। মিষ্টি জাতীয় জিনিস, ক্যাফেইন, ময়দা দিয়ে বানানো খাবার আপনি হয়তো অনেক দিন পর খাচ্ছেন। শরীর তাই হঠাৎ করে এত হজম করতে পারে না। সকালে উঠে মাথাধরা, পেটব্যথা, পেট ভার, গলা-বুক জ্বালা তাই হতেই পারে।
নেশা কাটান
শরীরের নানা পেশিতে রক্তসঞ্চালন বাড়িয়ে অ্যালকোহলের নেশা কাটাতে প্রথম দিনটা কার্ডিও ট্রেনিং মানে হাঁটা, জগিং, দৌড়ে মন দিন। ২ মিনিট ট্রেডমিলে জগিং করুন। বাড়িতে করলে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে। ১০ সেকেন্ড বিশ্রাম নিয়ে করুন ৩০-৪০টা স্কিপিং। যাঁরা স্কিপিং পারেন না, তাঁরা এক জায়গায় দাঁড়িয়ে স্পট জাম্পিং করুন। অল্প লাফাবেন। ১০ সেকেন্ড বিশ্রাম নিয়ে পাঞ্চিং ব্যাগে ৩০-৪০টা ঘুসি মারুন। পাঞ্চিং ব্যাগ না থাকলে শূন্যে মারলেও হবে। এর পর ২ মিনিটের বিশ্রাম। ৩ বার একই ভাবে ড্রিলটা রিপিট করুন।
ট্রেডমিলে ২ মিনিটে হাঁটুন বা জগিং করুন। ১০ সেকেন্ড বিশ্রাম নিয়ে করুন ১০টা স্পাইডার প্ল্যাঙ্ক। আবার বিশ্রাম নিন ১০ সেকেন্ড। করুন ২০-৩০টা জাম্পিং জ্যাক। এর পর ২ মিনিট বিশ্রাম। এই ড্রিলটাও আবার করুন ৩ বার।
ডিপ ব্রিদিং করতে করতে ২ মিনিট হাঁটুন। ১০ সেকেন্ড বিশ্রাম নিয়ে বাড়ির সিঁড়ি অথবা জিমের স্টেপ বক্সে ৪৫ সেকেন্ড ওঠানামা করুন। ২ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে ৩ বার রিপিট করুন। শেষে করুন কুল ডাউন এক্সারসাইজ। ভুজঙ্গাসন, পবনমুক্তাসন, শলভাসন বা সর্বাঙ্গাসন আপনার হজমে সাহায্য করবে। ৩৫-৪০ মিনিটে শেষ করুন ওয়ার্কআউট। লম্বা ওয়ার্কআউট হলে ক্লান্তি বাড়বে বই কমবে না। |
|
ওয়ার্ম আপ-স্ট্রেচিং
কতকগুলো কোর স্টেবিলিটি এক্সারসাইজ দিয়ে ওয়ার্ম আপ সারুন। তার পর ডায়নামিক স্ট্রেচিং করে পেশির তাপমাত্রা আর রক্তের সঞ্চালন বাড়ান। এ বার সার্কিট পদ্ধতিতে মানে একটার পর একটা ব্যায়াম করবেন বিনা বিশ্রামে। তবে রোজকার ওজন নিয়ে নয়। বডিওয়েট ট্রেনিং করুন।
১০টা পুশ-আপ/ ১০টা স্কোয়াট/ ১০টা হরাইজন্টাল পুল আপ/ একপায়ে ১০টা ডেডলিফ্ট/ বসে ১০টা রাশিয়ান টুইস্ট/ ১০টা লাঞ্জ। এই হল একটা সার্কিট। বিশ্রাম নিন ২-৩ মিনিট। ৩-৪ বার সার্কিটটা রিপিট করুন। সার্কিট ট্রেনিং শেষ হলে আগের দিনের মতো যোগাসনের কুল ডাউন স্ট্রেচিং করুন।
কী খাবেন
ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস হাল্কা গরম জল খান লেবুর রস দিয়ে। খিদে পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। ব্রেকফাস্ট হোক ওটস, আপেল বা মিষ্টি পেঁপে, ফ্রুট জুস।
দুপুরের খাবারে থাক ভেজিটেবিল স্যুপ, রুটি, সেদ্ধ সব্জি, স্যালাড, টক দই। বিকেলের এক্সারসাইজের আগে হাল্কা স্ন্যাকস। যেমন গ্রিন টি খান। এক্সারসাইজ শেষ করে দু’টো ডিমের সাদা অংশ, কলা। ওয়ার্কআউটের পর খাওয়া কিন্তু মাস্ট। সারা দিন সহজে হজম হয় এমন কিছু খান। প্রথম দু’দিন কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খান। সপ্তাহের তৃতীয় দিন থেকে প্রোটিনের মাত্রা বাড়ান।
৩-৪ লিটার জল অবশ্যই খাবেন। অতিরিক্ত জল শরীরে টক্সিনের মাত্রা কমাতে সাহায্য করবে। |
খেয়াল রাখুন |
• পার্টিতে সব সময়ই মাত্রা রেখে ড্রিঙ্ক করুন। ‘ওভার দ্য টপ’ হওয়ার চেষ্টা করবেন না কখনওই
• খালি পেটে কখনওই ড্রিঙ্ক করবেন না
• যে ড্রিঙ্কটা নিচ্ছেন, সেটার সঙ্গে অন্যান্য ড্রিঙ্ক মিক্স করবেন না কোনও মতেই। হিতে বিপরীত হতে পারে
• ড্রিঙ্কস, সঙ্গে উল্টোপাল্টা খাওয়া। বদহজম অবধারিত। সে ক্ষেত্রে বেসিক অ্যান্টাসিড খেতে পারেন। বা বাজারে আরও নানা অ্যান্টাসিড পাওয়া যায়। অবস্থা বুঝে খেতে পারেন সেগুলোও। খাওয়ার আগে আলোচনা করে নিতে পারেন আপনার চিকিৎসকের সঙ্গেও
• হ্যাংওভার কাটানোর একটা মোক্ষম দাওয়াই কিন্তু টানা ঘুম
• হ্যাংওভারের পাশাপাশি তীব্র মাথাব্যথায় কাহিল হয়ে পড়লে বাজার-চলতি ভাল কোনও পেনকিলার খেয়ে নিন। প্যারাসিটামলও খুব কাজ দেবে এ ক্ষেত্রে |
ডা. কল্যাণ বসুর অভিমত |
|
|
|
|
|
|