সরকারি প্রকল্পের কথা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য দলের উঁচুতলার নেতাদের সক্রিয় হতে বললেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মতে, গণমাধ্যম যে সব মানুষের কাছে পৌঁছতে পারছে না, সেখানে সরকারি প্রকল্পগুলি নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব দলের কর্মীদেরই।
আগামী ৩০ জানুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশ থেকে লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করবে তৃণমূল। তার আগে শনিবার হুগলির ভদ্রেশ্বরে গেট মার্কেটে দলীয় কর্মিসভায় ব্লকস্তরের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে পার্থবাবুর নির্দেশ, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প নিয়ে তৃণমূল স্তরে প্রচার করতে হবে। তাঁর মতে, গত ৩১ মাসে রাজ্য সরকার যে কাজ করেছে, তা ঠিক ভাবে সাধারণ মানুষ বা দলের কর্মীদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে না। |
নেতারা পার্টি অফিসে বসেই দায় সারছেন, মানুষের কাছে যাচ্ছেন না। পার্থবাবুর হুঁশিয়ারি, “আমি ফের এসে বুথকর্মীদের কাছে খোঁজ নেব, ব্লক স্তরের নেতারা পার্টি অফিসে বসে থাকছেন, না কি মানুষের কাছে যাচ্ছেন।”
রাজ্যের শিল্পমন্ত্রীর পদ থেকে সরা ইস্তক সাংগঠনিক কাজেই এখন বেশি সময় দিচ্ছেন পার্থবাবু। শুক্রবারই হুগলির ধনেখালিতে জনসভায় তিনি বলেছিলেন, “দলের পতাকা নিয়ে নিজের উপকারে মন দিলে হবে না। মানুষকে পরিষেবা দিতে হবে। দল সতর্ক আছে, ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবে না।” এ দিনের কর্মিসভায় তিনি বলেন, “আমাদের সরকারের কন্যাশ্রী প্রকল্প অন্যান্য রাজ্যগুলি মডেল হিসেবে নিয়েছে। অথচ আমরাই এই প্রকল্প নিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছতে পারছি না। এটা লজ্জার।”
শুধু কাজের পরিমাণ নয়, গুণগত মানের উপরেও জোর দেন পার্থবাবু। তাঁর মতে, এ রাজ্যে সিপিএম রাজনৈতিক ভাবে শেষ, কংগ্রেসও কার্যত নেই। এতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তাতে শাসকদল হিসেবে তৃণমূল কর্মীদের দায়িত্ব অনেক বেড়ে গিয়েছে। সে কারণে তাঁরা যা করবেন, তার প্রতিফলন সরাসরি ভোটবাক্সে পড়বে। পার্থবাবুর বিশ্লেষণ, অনেক মানুষই তৃণমূলকে ভোট দেননি। তাঁরা এখনও ভাবছেন, সিপিএম ক্ষমতায় এলে তাঁদের ভাল হবে। কাজ দিয়েই তাঁদের আস্থা অর্জন করতে হবে। প্রায় আত্মসমালোচনার ঢঙে তাঁর প্রশ্ন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর কাজ করে চলেছেন, কিন্তু আমরা কি আমাদের কাজ করছি?”
মানুষের কাছে প্রকল্পের কথা পৌঁছে দেওয়া ছাড়াও নেতা-কর্মীদের আর একটি দায়িত্ব দেন পার্থবাবু। তাঁর নির্দেশ, ৩০ তারিখ ব্রিগেডের সভায় ব্লক স্তরের নেতাদের অন্তত ৫০০ করে এবং বুথস্তরের নেতাদের অন্তত ১০ জন করে লোক আনতে হবে। পার্থবাবু বলেন, “আমাদের সভার ভিড় যাতে শেখ মুজিব বা ইন্দিরা গাঁধীর ব্রিগেড সমাবেশের ঐতিহাসিক ভিড়কেও যাতে ছাড়িয়ে যায়, তার জন্য আপনাদের আহ্বান করছি।”
কৃষি প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্না ছাড়াও স্থানীয় সাংসদ রত্না দে নাগ এবং জেলার দুই পরিষদীয় সচিব তপন দাশগুপ্ত ও অসীমা পাত্র সভায় উপস্থিত ছিলেন। |