উৎকণ্ঠা নিয়েই ভোটের টানে ঘরে বাংলাদেশিরা
র্ধেকের বেশি আসনে ভোট হচ্ছে না। প্রধান বিরোধী বিএনপি-জোট বর্জন বয়কট করেছে। নজিরবিহীন অশান্তি চলছে গোটা বাংলাদেশ জুড়ে।
তবুও শনিবার দিনভর ভোট দিতে দেশে ফিরলেন ভারতে আসা কয়েকশো বাংলাদেশি। যদিও আদৌ ভোট দিতে পারবেন কি না, সে ব্যাপারে কেউই নিশ্চিত নন। বরং আশঙ্কায় বুক কাঁপছে অনেকেরই।
চোখে-মুখে একরাশ দুশ্চিন্তা নিয়ে শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রাপোল সীমান্ত পার হচ্ছিলেন সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া-ঝাউডাঙার গোপালচন্দ্র ঘোষ। নদিয়ার ফুলিয়ায় বোনের বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। ফেরার সময়ে তিনি বলে গেলেন, “ভোটটা দিতে হবে, তাই ফিরে যাচ্ছি। কিন্তু বেরিয়ে যদি দেখি হিংসা ছড়িয়েছে, তা হলে ভোট না দিয়ে বাড়ি ঢুকে পড়ব।”
নির্বাচন বাতিলের দাবিতে এ দিন থেকেই লাগাতার অবরোধের কর্মসূচি নিয়েছে বিএনপি-জামাতে ইসলামি। ৪৮ ঘণ্টা হরতালও ডাকা হয়েছে। দেশ জুড়ে সেনা মোতায়েন করেও স্কুলে আগুন লাগানো, বাসে-ট্রাকে পেট্রোল-বোমা ছোড়া আটকানো যায়নি। পরিস্থিতি যে এতটা খারাপ হতে পারে, দিন কয়েক আগে চেন্নাইয়ে চিকিৎসা করাতে আসার সময়েও তা ভাবতে পারেননি খুলনার বছর পঞ্চাশের আখতারুজ্জামান। এ দিন সীমান্তে পৌঁছেও তাঁর আশঙ্কা, “নানা জায়গায় গোলমাল, অবরোধ, ভাঙচুর চলছে। যানবাহনও ঠিক মতো চলছে না। জানি না, ঠিক সময়ে পৌঁছে ভোট দিতে পারব কি না।”

হিংসার আগুনে ছারখার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুল। শনিবার।— নিজস্ব চিত্র
বিএনপি জোট ভোট বর্জন করায় এ বার মোট ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না। ভোট হবে মাত্র ১৪৭টিতে। অনেকেই মনে করছেন, গোটা প্রক্রিয়া প্রহসন হয়ে দাঁড়াতে পারে। তবে পেট্রাপোল বন্দর সূত্রের খবর, এক সপ্তাহ ধরেই বাংলাদেশিদের ফেরার তাগিদ লক্ষ করা গিয়েছে। এ দিন দুপুর দেড়টা পর্যন্ত অন্তত ৬০০ জন ওই সীমান্ত দিয়ে যাতায়াত করেছেন। তার মধ্যে বেশির ভাগই বাংলাদেশি, যাঁরা ভোটের টানে দেশে ফিরেছেন। নোয়াখালির জাহাঙ্গির আহমেদ বা ঢাকার নাজমুল হকের মতো বেশির ভাগেরই আশা, ভোট মিটে গেলে নিশ্চয়ই একটা সমাধান সূত্র বেরোবে।
কুমিল্লার বছর ষাটেকের অরবিন্দ সরকারের মতে, আগে কখনও পরিস্থিতির এত অবনতি আগে হয়নি। তিনি বলেন, “২০০৮-এর নির্বাচনের আগেও গোলমাল হয়েছিল। তবে এই পর্যায়ে নয়। ওই সময়ে তদারকি সরকার মানুষকে নিরাপত্তা দিতে পেরেছিল।” বেঙ্গালুরু থেকে চিকিৎসা করিয়ে ফেরা ময়মনসিংহের মহম্মদ শাহিন খান মনে করছেন, “সরকারের উচিত ছিল বিরোধীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ভোটে তাদেরও সামিল করা। তবে যতই অশান্তি হোক, সকলেরই ভোট দেওয়া উচিত। না হলে সন্ত্রাসবাদীরাই শক্তিশালী হবে। দেশে অস্থিরতা কমবে না।”

ট্রাকে আগুন, বন্ধ সীমান্ত-বাণিজ্য
বাংলাদেশের উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে শনিবার ভারতীয় পণ্য বোঝাই ট্রাক পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। তার জেরে এ দিন উত্তর ২৪ পরগনার ঘোজাডাঙা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ রইল। এ দিন চাল বোঝাই ট্রাকটি ঘোজাডাঙা দিয়ে বাংলাদেশের সাতক্ষীরার ভোমরায় যায়। সেখানেই কিছু লোক ওই ট্রাকে আগুন দেয় বলে অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে নামে ঘোজাডাঙার ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন। রবিবারও বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে ঘোজাডাঙা এবং পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে বাণিজ্য বন্ধ রাখা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.