শিশু মৃত্যু কমাতে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট (এসএনসিইউ) তৈরি হয়েছে। যেখানে ‘সঙ্ককজনক’ শিশুর উপর ‘বিশেষ’ নজর রাখা হয়। অপেক্ষাকৃত কম ‘সঙ্কটজনক’ শিশুদের চিকিৎসার জন্যও ‘বিশেষ’ ব্যবস্থা রয়েছে। তারপরেও গত দু’দিনে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১১টি শিশুর মৃত্যু হল। শিশু মৃত্যুর কারণ হিসাবে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে শুক্রবার এসইউসি কর্মীরা সুপারের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান। দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও কর্মসূচি করেন। সুপার এদিন কলকাতায় গিয়েছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের এক বৈঠকে যোগ দিতে। এসইউসি কর্মীরা ডেপুটি সুপার বিশ্বনাথ দাসকে ডেপুটেশন দিতে চান। কিন্তু, ডেপুটি সুপার তা নিতে অস্বীকার করেন। এক সময়ে তাঁর সঙ্গে এসইউসি কর্মীদের কথা কাটাকাটিও হয়। |
হাসপাতাল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত ওই ওয়ার্ডে সব মিলিয়ে ৫০টি শিশু চিকিৎসাধীন ছিল। এর মধ্যে মেডিক্যালে জন্ম হয় ৩৭টির। অন্য হাসপাতাল থেকে স্থানান্তর হয়ে এসেছিল ১৩টি শিশু। মৃত্যু হয় ৭টির। অন্য দিকে, বুধবার রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৫২টি শিশু চিকিৎসাধীন ছিল। এর মধ্যে মেডিক্যালে জন্ম হয় ৩৯টি শিশুর। অন্য হাসপাতাল থেকে স্থানান্তর হয়ে এসেছিল ১৩টি শিশু। মৃত্যু হয়েছে ৪টি শিশুর।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দিন পিছু গড়ে ২-৩টি শিশুর মৃত্যু হয়। হঠাৎ করে শিশু মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, কম ওজন-ফুসফুসে সংক্রমণ এবং শ্বাসকষ্টজনিত কারণেই শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতাল সুপার যুগল কর বলেন, “দু’দিনে ১১টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ এসেছে। তা খতিয়েও দেখা হচ্ছে। তবে আমরা দেখেছি, কম ওজন-ফুসফুসে সংক্রমণ এবং শ্বাসকষ্টজনিত কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। অনেক সময়ে চেষ্টা করেও কম ওজনের শিশুকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয় না।” মৃত ১১টি শিশুর মধ্যে ৩টি শিশু অত্যন্ত কম ওজনের ছিল বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। কারও ওজন ছিল ৫০০ গ্রাম। কারও ওজন ছিল ৭৫০ গ্রাম।
হাসপাতালের এক সূত্রে খবর, গত দু’দিন শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসকের সংখ্যাও কম ছিল। ফলে, পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ অবশ্য এমন অভিযোগ মানতে নারাজ। |