সন্দেহের বশে ডেসডিমোনাকে খুন করেছিলেন ওথেলো। অভিযোগ, সেই ওথেলো নিয়ে বিতর্কের জেরে এক নাট্যপরিচালককে খুনের হুমকি দিলেন আর এক নাট্যপরিচালক।
মনীশ মিত্র পরিচালিত ‘শেক্সপিয়র’স ট্র্যাজিক হিরোজ’ নাটকে ওথেলো-র একটি দৃশ্যে নগ্নতা রয়েছে। নাটকের বিজ্ঞাপনেও সে কথার উল্লেখ করা হয়েছে। এই নিয়ে ফেসবুকে নেতিবাচক মন্তব্য করেছিলেন প্রবীণ নাট্যপরিচালক শ্যামল ভট্টাচার্য। তার জেরে মনীশবাবু তাঁকে খুনের হুমকি দিয়েছেন বলে শুক্রবার হাওড়ার শিবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন শ্যামলবাবু। মনীশ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
হাওড়ার মন্দিরতলা এলাকার বাসিন্দা ৭২ বছরের শ্যামলবাবু ‘শপথ’ নামে একটি নাটকের দল পরিচালনা করেন। এক সময় কলকাতার অনেক নামী নাট্যদলের হয়ে নিয়মিত অভিনয় করেছেন ওই প্রৌঢ়। তিনি এ দিন বলেন, সংবাদপত্রে মনীশের সাক্ষাৎকার এবং বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তিনি নগ্ন ওথেলোর কথা জানতে পারেন। এর পর ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ফেসবুক প্রোফাইলে ওই বিতর্কিত দৃশ্য নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন।
কী রকম? ‘আবার নাটক ছেড়ে নগ্নতা নিয়ে হইচই হোক, এটাই ওই দুর্বলতম নাট্য প্রযোজক, পরিচালক এবং পরিবর্তনী বুদ্ধিজীবীর উদ্যোগ,’ লিখেছিলেন শ্যামলবাবু। ফেসবুকের বন্ধুদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘যুদ্ধ আসন্ন এই দেশদ্রোহীদের বিরুদ্ধে, যারা বাংলা সংস্কৃতির জননীদের নগ্ন করতে চাইছে।’
তার পর? শ্যামলবাবুর দাবি, এ দিন ভোর সওয়া ৫টা নাগাদ তাঁর মোবাইলে অপরিচিত একটা নম্বর থেকে ফোন আসে। পরে আরও কয়েক বার আরও কয়েকটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন আসে। প্রৌঢ়র অভিযোগ, তাঁকে ক্রমাগত গালাগালি করে হুমকি দেওয়া হতে থাকে। বলা হয়, স্ত্রীর সামনে তাঁকে খুন করা হবে। স্ত্রীকে বিধবা করা হবে। অ্যাকাডেমির সামনে শ্যামলবাবুকে মেরে উলঙ্গ করার হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। শ্যামলবাবুর দাবি, “আমি জানতে চাই কে ফোন করছেন। তখন মনীশ নিজের নাম বলেন।”
মনীশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অবশ্য কটূক্তি বা হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর মোবাইল থেকে যে শ্যামলবাবুকে ফোন করা হয়েছিল, তা অবশ্য স্বীকার করেছেন মনীশবাবু। কিন্তু তাঁর বক্তব্য, শ্যামলবাবুর মতো বর্ষীয়ান মানুষকে কুরুচিকর কথা বলার প্রশ্নই ওঠে না। মনীশের দাবি, এ দিন সকালে তিনি নিজের কাকা অনীক মিত্রকে ফেসবুকের বিষয়টি জানান। অনীকবাবু নিজে এক সময় শ্যামলবাবুর দলে নাটক করেছেন। বিষয়টি শোনার পরে কাকাই শ্যামলবাবুকে ফোন করেছিলেন বলে জানিয়েছেন মনীশ। তাঁর কথায়, “কোনও বাজে কথা বলা হয়নি। শুধু বলা হয়েছিল, আপনি নাটকটি না দেখে এমন মন্তব্য করলেন কেন? নাটকটি দেখে যা বলার বলুন।”
শ্যামলবাবু অবশ্য গোটা ঘটনাটা ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন। শিবপুর থানায় গিয়ে অভিযোগও দায়ের করেছেন। হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, “বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।” |