সোফা থেকে ফণা তুলে বেরিয়ে এল ফুট চারেকের বোয়া!
মাস দু’য়েক আগের কথা। সেকেন্ড হ্যান্ড সোফাটি বাড়িতে এনেছিলেন মিশিগানের গ্র্যান্ড র্যাপিড এলাকার বাসিন্দা হলি রাইট। তবে গ্যাঁটের কড়ি খসিয়ে নয়। হেরিটেজ হিলের একটা বাড়ির বাইরে পড়েছিল সোফাটি। গায়ে ঝুলছিল একটা সাইন বোর্ড। লেখা “বিনামূল্যে”। “ভালই দেখতে ছিল সোফাটা। দেখেশুনে মন্দ লাগেনি,” বললেন হলি।
তাই নির্বিবাদে তুলে নেন সেটি। বদলে ফেলেন কুশন। পরিষ্কার করে ব্যবহার করতে শুরু করেন। বললেন, “বিপজ্জনক কিছু তো চোখে পড়েনি!”
সোফাটির জায়গা হয়েছিল হলির শোয়ার ঘরে। সেটি যে আসলে একটি বোয়া সাপের আস্তানা, ঘুণাক্ষরেও টের পাননি তিনি। আর পাঁচটা আসবাবপত্রের মতোই নিত্যদিনের ব্যবহার। সে সোফায় বসে বই পড়া থেকে নেহাতই বিকেলের আড্ডা, চলত সবই। পোষা কুকুরটিও মাঝেমধ্যে চড়ে বসতো তাতে। বললেন, “দু’মাস মতো আমার শোবার ঘরেই ছিল। কিন্তু আমি ঘূণাক্ষরেও কিছু বুঝতে পারিনি। |
বেশ বড়সড়...।”
বোয়া সাপের চেহারা এমনিতেই বেশ বড়। অনেকটা পাইথনের মতো বিশালাকার। এরা সাধারণত গাছে, ঝোপেঝাড়ে থাকে। বৃদ্ধদশায় অনেক সময় মাটিতে থাকতে দেখা যায়। তবে মনুষ্য সমাজের জন্য এরা মোটেই বিপজ্জনক নয়। বিরক্ত না করলে এরা সাধারণত কামড়ায় না।
ঘরে যে দ্বিতীয় এক জনের বাস, হলি টের পেলেন হঠাৎই। একদিন মাথা তুলে বেরিয়ে এলেন নাগরাজ। তবে সাপটির তখন নেহাতই করুণ দশা। দীর্ঘদিন না খেতে পেয়ে আর ঠান্ডায় শীর্ণকায় চেহারা। হলির কথায়, “এক বারও ছোবল মারার চেষ্টা করেনি সাপটা। হ্যাঙ্গার দিয়ে তুলতে যেতেই পাকিয়ে গেল। আমার ঘরের ভিতরটা ভীষণ ঠান্ডা। আর খাবারও পায়নি। মৃত্যু নিশ্চিত বুঝতে পেরেই হয়তো বাঁচার শেষ চেষ্টায় বেরিয়ে এসেছিল।” বোয়ার মৃতপ্রায় অবস্থা দেখে আর দেরি করেননি হলিরা। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা পশু চিকিৎসকের কাছে ছোটেন। তবে ব্যর্থ হয় সব চেষ্টা। চিকিৎসা শুরুর আগেই মারা যায় সে।
বাগানে গাছের নীচে সাপটিকে কবর দিয়েছেন হলিরা। বললেন, “কোথায় যেন একটা খারাপ লাগা রয়েছে...। একই ঘরে থাকতাম। ও যে এত কষ্টে রয়েছে, টেরই পাইনি।”
সহানুভূতি থাকলেও আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না। সোফাটি ঘর থেকে রাস্তায় বার করে দিয়েছেন হলিরা। হেরিটেজ হিলের সেই বাড়িটার মতো হলিরাও একটা সাইন বোর্ড টানিয়ে দিয়েছেন। এ বার তাতে লেখা, “ভুলেও নেবেন না যেন...!” |