চলতি অর্থবর্ষে গাড়ি বিক্রির খরা বজায় রইল ২০১৩-র শেষ মাসেও। ডিসেম্বরে এক মাত্র মারুতি-সুজুকি এবং হুন্ডাই মোটর ছাড়া বিক্রি বাড়াতে সক্ষম হয়নি বেশির ভাগ যাত্রী গাড়ি নির্মাতাই। এই দুই সংস্থার ক্ষেত্রেও বিক্রি বেড়েছে সামান্য হারে। কমেছে মহীন্দ্রা অ্যান্ড মহীন্দ্রা, জেনারেল মোটরস, ফোর্ড, টয়োটা কির্লোস্করের মতো সংস্থার।
এই সময়ে দেশের বাজারে মোট ৮৬,৬১৩টি গাড়ি বিক্রি করেছে মারুতি- সুজুকি। যা ২০১২ সালের একই সময়ের তুলনায় মাত্র ৫.৫% বেশি। সংস্থার ভাঁড়ারে থাকা অল্টো, মারুতি-৮০০, এ-স্টারের মতো ছোট (মিনি) গাড়ির বিক্রি বেড়েছে ১৬.৭%। তবে মার খেয়েছে ‘কমপ্যাক্ট’ (সুইফট, এস্টিলো, রিৎজ) গাড়ির ব্যবসা। এই গাড়িগুলির বিক্রি কমেছে প্রায় ১৫%। এর মধ্যেই অবশ্য ভাল ফল করেছে সেডান গাড়ি ডিজায়ার। যার একারই বিক্রি ১৮% বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ১৫ হাজারে। তবে দেশে বিক্রি বাড়লেও, রফতানি মিলিয়ে সংস্থার গাড়ি বিক্রি কমেছে ৪.৪%।
অন্য দিকে, দেশে হুন্ডাই মোটরের বিক্রি ৬.২৪% বেড়ে হয়েছে ২৮,৩৪৫টি। আর রফতানি মিলিয়ে তা বেড়েছে ২.৫৮%। সংস্থার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রাকেশ শ্রীবাস্তব জানান, এই বছরে সংস্থা ৯৯% উৎপাদন ক্ষমতার সদ্ব্যবহার করেছে। তবে সব মিলিয়ে ২০১৩ সাল গাড়ি শিল্পের পক্ষে খুব একটা সুখকর ছিল না।
অন্য সংস্থাগুলির মধ্যে জেনারেল মোটরস এবং মহীন্দ্রার বিক্রি কমেছে যথাক্রমে ১৯.২৭% ও ১২.৮২%। দুই সংস্থারই মত, গত বছর সামগ্রিক ভাবে দেশের বিরূপ আর্থিক পরিস্থিতি এই শিল্পে প্রভাব ফেলেছে। যে কারণে বছরের অধিকাংশ সময়েই বিক্রি বাড়াতে ব্যর্থ হয়েছে অধিকাংশ গাড়ি সংস্থা। চড়া সুদ, জ্বালানির দাম ক্রেতাদের দূরে সরিয়ে রেখেছিল। উৎসবের মরসুমে সামান্য বাড়ার পর ফের বিক্রি কমেছিল নভেম্বরেই। কেন্দ্রের কিছু নীতির পরিবর্তন না-হলে চলতি অর্থবর্ষে গাড়ি শিল্পের ঘুরে দাঁড়ানোর খুব একটা সম্ভাবনা নেই বলেই জানান মহীন্দ্রার অটোমোটিভ বিভাগের সিইও প্রবীণ শাহ। বিক্রি কমা সংস্থাগুলির মধ্যে রয়েছে ফোর্ড (৯.৯%) এবং টয়োটা কির্লোস্করও (১১.৭৮%)।
অবশ্য ডিসেম্বরে গাড়ি সংস্থাগুলির বিক্রি না-বাড়ার অন্যতম কারণ হল বছরের শেষে ইচ্ছাকৃত ভাবেই ক্রেতাদের দূরে সরে থাকা। কারণ বছর শেষে গাড়ি কিনলে, পরে তা বিক্রি করার সময়ে সেটি বাড়তি এক বছরের পুরনো বলেই গণ্য হয়। নতুন বছর গাড়ি শিল্পের কাছে সুখবর নিয়ে আসে কি না, এখন সে দিকেই তাকিয়ে সকলে। |