গভীর রাতে প্রতীক এঁকে দেওয়াল চুরির দিন শেষ। শিল্পটা আর্কাইভে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তুলি, ব্রাশ আর রংকে আর্কাইভে পাঠিয়ে দিল অফসেট ফ্লেক্স। রং হারিয়ে দিকে দিকে বর্ণহীন হয়ে উঠল দেওয়াল সারি।
শঙ্খবাবুই সত্যি হলেন। চড়াই-উতড়াইয়ের মুখে ঢেকে দিল বিজ্ঞাপন। এ সব দেখতে দেখতে রাতজাগা শিল্পী ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল। তার মাথার উপর রাতভর আলোর মতো ছড়িয়ে ছিল মাল্টি ন্যাশনাল অ্যাড, ফেনায় ঢাকা তিলোত্তমা। তাই লক আউট কারখানার মতো কাজ হারিয়ে দেওয়াল শিল্পী বিকল্পে ঝুঁকে গেলেন। হাতে গড়া বর্ণ-শব্দ-বাক্য যন্ত্রের গহ্বরে তলিয়ে গেল। সঙ্গে চার দিক শূন্য করে এক রাশ অন্ধকারে দেওয়াল ঢেকে যায়। জীবন আর দেওয়ালে আলো খোঁজা এখন বোকামো। অনেক মিছিল বিক্ষোভের পর দেওয়াল ফিরে আসেনি। কর্পোরেট বিশ্বের দেওয়ালটা উঁচু হতে থাকায়, নিজেদের অর্থহীন মনে হতে থাকে। তাই বর্ণহীন হয়ে যেতে থাকে স্বপ্ন, জীবন যন্ত্রের কাছে মেধা, বোধ, চেতনা হারিয়ে যায়। তবু এত কিছুর পরও তারা ধার করা বর্ণে মালা তৈরি করেনি। বাধ্য হয়ে তাই এখন চৌরাস্তার মোড়ের দোকানে ডিটিপি শিখছে শেখর। ওর চোখের সামনে অফসেট মেশিনের গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসে লিফলেট, লিটলম্যাগ। প্রস্তুতিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মেশিন তৈরি করে দিচ্ছে শ্যাম্পু, সাবানের বিজ্ঞাপন। ওর রং তুলি ব্যাকডেটেড। যান্ত্রিক সভ্যতার জন্য কতগুলো মানুষ কাজ হারাল। মুহূর্তে হাজার হাজার মানুষের দেওয়াল লিখনকে একটানে মুছে দিয়েছিল এই মেশিনগুলো। শেখর, বাপি, শঙ্করদের মুখোমুখি হতে দ্বিধা কাজ করে সমাজের। তখন সমাজ আর তন্ত্রের মাঝখানে আলোকবর্ষ ব্যবধান তৈরি করে বিদ্রোহ বিপ্লবের চেহারা নেয়। এক সময় রাজনীতি ওদের স্লোগান অনুবাদ করে দেয়। কিন্তু এর পরেও আর ফিরে আসেনি দেওয়াল লিখন। শেখরের হাতে আঁকা দেওয়ালটাকে ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছিল জল। তাই পরের বার কাজটা আর রিনিউ হয়নি। নেতারা বাড়ি এসে বলেছিল, এটাই নাকি বিপ্লবের শুরু। বাকিটা দল দেখে নেবে। ওদেরকে কেউ আর দেখতে আসেনি। বর্ণহীন মানুষগুলো কেমন আছে জানতে চায়নি কেউ। দেওয়াল লিখতে লিখতে সই করা ভুলে গেল ছেলেটা। কোথাও আর সই মেলে না এখন। যন্ত্র এ বার হয়তো বা ওদের সাক্ষর করবে। দেওয়ালের অক্ষরমালা ভুলে শিখবে সহজ পাঠ। শেখরদের শুকনো দেওয়ালে চাপা পড়ে যাবে তৃষ্ণার জল-ছবি।
|
বিদেশি সব্জি ব্রকোলি চাষ করে বাড়তি রোজগারের মুখ দেখছেন শিলিগুড়ি সংলগ্ন গোয়াবাড়ি, দুধগেট, গৌরীসিংজোত, গারিজোত, রাবভিটার বাসিন্দারা। রবি মরসুমে মিশ্র চাষ হিসাবে প্রায় দেড়শো বিঘা জমিতে চাষ হয়েঠে এটি। নেপাল শিলিগুড়ি ও সিকিমের বিভিন্ন বাজারে দৈনিক প্রায় ৩ টন সব্জি তো বিক্রি হচ্ছেই, এমনকী অসময়ে কলকাতার বাজারের চাহিদাও পূরণ করেছে ব্রকোলিএ কথা জানান ব্লক কৃষি আধিকারিক মেহফুজ আহমেদ। কৃষি দফতরের উদ্যোগে চাষের জমি বৃদ্ধির পরিকল্পনা আছে বলে তিনি জানান। জৈব রাসায়নিক ও জীবাণু সার প্রয়োগে স্থানীয় ৮০ চাষি ব্রকোলির চাষে উৎসাহিত হয়েছেন। রোগ-পোকার সমস্যা কম হওয়ার পাশাপাশি এর ক্যানসার প্রতিরোধের গুণ আছে। ব্লক কৃষি দফতরের উদ্যোগ ও ‘আত্মা’-র আর্থিক সহযোগিতায় বিভিন্ন ফার্মার্স ক্লাব ব্রকোলির চাষ বাড়াতে উৎসাহী।
|
তাঁর ‘দেশগঠনে মনীষী ও বিপ্লবীদের ভূমিকা’ গ্রন্থে সত্যরঞ্জন দাস বেশ কয়েক জন মনীষী ও বিপ্লবীর জীবনের কথা তুলে ধরেছেন। বলা যেতে পারে, গ্রন্থটি প্রবন্ধ সংকলন। গ্রন্থের অন্যতম সম্পদ ভাষা। গল্পের মতো লেখক বলে যান তাঁর প্রবন্ধগুলি। প্রবন্ধ তাই প্রবন্ধের বেড়াজাল পেরিয়ে প্রবেশ করে গল্পের আঙিনায়। এই অবক্ষয়, অস্থির সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রন্থটি যথেষ্ট সময়োপযোগী। ‘সমাজ বদলের স্বপ্ন দেখেন’ লেখক। গ্রন্থের ভূমিকায় আনন্দগোপাল ঘোষ লিখেছেন, “সত্যানুসন্ধানী সত্যরঞ্জন এখনও সত্য খুঁজে চলেছেন”। অনুসন্ধানই হয়তো এই গ্রন্থের প্রেরণা। রবীন্দ্রনাথ, বিদ্যাসাগর, নিবেদিতা, ঋষি অরবিন্দর পাশাপাশি এই গ্রন্থে স্থান পেয়েছে যোগীন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্তী, নট ও নাট্যকার শিবপ্রসাদ কর, যতীন্দ্রমোহন গোস্বামী সম্পর্কিত প্রবন্ধ। গ্রন্থের প্রচ্ছদ আরও ভাল হতে পারত। এক দুটি মুদ্রণ-ত্রুটি যে নেই, তা নয়। গ্রন্থের পিছনে ‘স্মরণীয় কাজ’ অংশটি অবশ্য পাঠ্য। |