সম্পাদক সমীপেষু...
জল আর ধান
পশ্চিমবঙ্গের ভূগর্ভস্থ জল সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আপনাদের বিভিন্ন প্রতিবেদন পড়ছি। আমার গবেষণা পশ্চিমবঙ্গের ধান্য অর্থনীতি সংক্রান্ত। পশ্চিমবঙ্গে কত ধান হবে তা বৃষ্টিপাত, চালের দাম, উচ্চফলনশীল ফসলের এলাকা এবং সেচযুক্ত জমির উপর নির্ভরশীল। প্রতিটিই ধান উত্‌পাদনকে বাড়িয়েছে।
ধান উত্‌পাদনের একটি অঙ্গ ঐতিহাসিক ভাবে ব্যবস্থাগত ভাবে নির্ধারিত। অন্য একটি অঙ্গ কিন্তু অজানা, অনিশ্চিত, অ-পূর্বনির্ধারিত। মোটামুটি ভাবে বলা যায়, যতটা পূর্ব নির্ধারিত, ততটাই অজানা, অনিশ্চিত।
এই ফলাফলে আসার পর আমি চিন্তিত বোধ করেছিলাম। কারণ, অনেক কৃষিবিদ মনে করেন যে, কৃষিতে সমতা আনতে সেচ কার্যকর। কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে, সেচ অত্যন্ত বেশি অনিশ্চিত।
এর কারণ, ১) বৃহত্‌ বাঁধগুলির জল ছাড়া, ২) যত্রতত্র টিউবওয়েল বসানো, ৩) পুরনো কুয়ো ও পুকুরগুলি নষ্ট হয়ে যাওয়া। প্রথমটি থেকে বন্যা হয়। দ্বিতীয়টি থেকে ভূমির জল খরচ হয়ে যায় এবং গভীর নলকূপের ক্ষেত্রে আর্সেনিক ও ফ্লোরাইডের মতো বিষ মাটিকে বিষাক্ত করে ফেলে। তৃতীয়টির থেকে জলাভাব তৈরি হয়। এর উত্তর বন্যা নিয়ন্ত্রণ জলাধার নির্মাণ ও বনসৃজন, পুকুর ও কুয়ো সংস্কার।
দিল্লির বাঙালি
দিল্লিতে বসবাসকারী বা কর্মরত জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশ বাঙালি। অথচ সেখানেই বাঙালিরা তাঁদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে বা কলেজে বাংলা পড়তে দিতে চান না। পরিবর্তে হিন্দি পড়াতে আগ্রহী। (‘বৃহত্‌ বঙ্গের সন্ধানে’, সম্পাদকীয়, ৪-১২) আজ থেকে আনুমানিক ৫০ বছর আগে সেখানে বাঙালির সংখ্যা অনেক কম ছিল। তা সত্ত্বেও নামকরা স্কুল-কলেজে বাংলা পড়ানো হত। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরেও বাংলা পড়ানো আরম্ভ করিয়েছিলেন অধ্যাপক রবীন্দ্রকুমার দাশগুপ্ত। সে সময়ে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগটি বেশ প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিল। যাঁরা সে সময়ে বাংলা পড়েছিলেন, তাঁরা জীবনের ক্ষেত্রে অনেকেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। বহু বাঙালি বুদ্ধিজীবী বাংলা এবং ইংরেজি সমান ভাবে ব্যবহার করতে পেরেছেন।
বর্তমান দিল্লিবাসী বাঙালিদের বাংলার প্রতি এত অনীহা, অথচ পাড়ায় পাড়ায় বাঙালি সমিতি বা সাংস্কৃতিক সংগঠন গড়ে উঠেছে। তাদের একমাত্র কাজ বোধহয় বছরে এক বার করে দুর্গাপুজো আর রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠান করা। তার চেয়ে তারা যদি সংঘবদ্ধ হয়ে বাংলা ভাষাটাকে স্কুল-কলেজে পুনঃপ্রচলিত করানোর দায়িত্ব নেয়, তা হলে কাজের কাজ হয়। ঘটনাচক্রে এখন মাননীয় রাষ্ট্রপতিও বাঙালি। প্রয়োজনে তাঁর সাহায্যও চাওয়া যেতে পারে। বিদেশ থেকে ছাত্ররা স্নাতকোত্তর স্তরে বাংলা পড়তে দিল্লি আসছে, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সুবণর্জয়ন্তী উত্‌সব হচ্ছে, অথচ দিল্লির বাঙালির ছেলেমেয়েদের উত্‌সাহের অভাব, ভাবতেই খারাপ লাগে। বাংলা ভাষা যাতে রাজধানী থেকে বিলুপ্ত না হয়, তার উদ্যোগ দিল্লির বুদ্ধিজীবীদেরই নিতে হবে।
শান্তিনিকেতনের পথে
২ ডিসেম্বর ট্যাক্সিতে কলকাতা থেকে শান্তিনিকেতনে ফিরছিলাম। পথ সুন্দর, দু-একটি জায়গা ছাড়া। কিন্তু গুসকরা ঢোকার মুখে একটি ছোট্ট সাঁকো মেরামতি হওয়ায় ওই পথ বন্ধ। কয়েক মাস আগেও সাঁকো সারাতে এই রাস্তা বন্ধ ছিল। কী সারানো হয়েছিল জানি না। শুনলাম রাস্তা বন্ধ থাকার কারণে ক্যানাল পাড়ের মাটির রাস্তা ধরে কিছুটা যেতে হবে। দেখলাম ওই পথে অনেক গাড়ি আসা-যাওয়া করছে। ড্রাইভারকে ওই পথ ধরতে বললাম।
পরের অভিজ্ঞতা ভয়ঙ্কর। ওটাকে রাস্তা বলা যায় না। ঢোকার মুখে যদি লেখা থাকত, ‘প্রাণ হাতে নিয়ে যান’, তা হলেও শেষ যাত্রার জন্য মনটা তৈরি করতে পারতাম। গোটা রাস্তাটা এবড়োখেবড়ো, এক-দু’হাত অন্তর বড় বড় গর্ত। উল্টো দিক থেকে কোনও গাড়ি এলে পাশ কাটানো দুষ্কর। ডাইনে বাঁয়ে হেলতে দুলতে প্রায় আধ ঘণ্টা যুদ্ধ করার পর একটা রাস্তা পেলাম। এর মধ্যে দেখলাম, রোগী নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স চলছে বর্ধমানের দিকে! পানাগড় থেকে ইলামবাজার পর্যন্ত নাকি একই দশা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.