বাজি থেকে পিঠেপুলি, বর্ষবরণ উচ্ছ্বাসেই
বাজি, আলো, অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানালো বর্ধমান। জেলার প্রায় সব শহরেই সাধারণ মানুষ মেতে ওঠেন আনন্দে। বড় রাস্তাগুলি সাজানো হয় আলো দিয়ে। বর্ধমানের টাউন হলে একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে কয়েক দিন ধরেই হচ্ছে ভারত সংস্কৃতি উত্‌সব। বছরের শেষ দিনে এই উত্‌সবে ভিড় ছিল যথেষ্ট। এ দিন সকাল থেকেই বর্ধমান শহরে পুলিশের টহলদারি ছিল বেশি। ছিল মোবাইল পুলিশ ভ্যান। জেলার অন্যান্য শহরের রাস্তাতেও পুলিশের সংখ্যা ছিল বেশি।
বর্ধমানের আবাসনগুলিতেও পালিত হয় বর্ষবরণ উত্‌সব। আবাসনের বাসিন্দারা নিজেদের মধ্যে মিউজিক্যাল চেয়ার-সহ নানা মজার খেলাতে যোগ দেয়। কাটোয়া ও দাঁইহাট শহরের পাড়ায় পাড়ায় হয় পিকনিক। রাত বাড়তে জেলার সব জায়গাতেই ফাটানো হয় বাজি। কোথাও কোথাও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়। কাটোয়ার কাশিরাম দাস বিদ্যায়তনের সামনের মাঠে হয় ব্যাডমিণ্টন প্রতিযোগিতা। কাটোয়ার আদর্শ পল্লীর মাঠে বছরের শেষ দিন থেকে শুরু হয়েছে মেলা। মঙ্গলবার এই মেলার উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।
কাটোয়ার পানুহাটে পিঠে-পুলি উত্‌সবে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ও অভিনেতা জয় ব্যানার্জি।
বর্ষবরণে মেতেছে শিল্পাঞ্চলও। তবে ধরণটা অনেকটাই আলাদা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই রঙিন পার্টিতে মেতে উঠল নানা হোটেল ও ক্লাব। হালফিলের হিন্দি-ইংরেজি গান, রঙিন আলোর মাঝে ডিস্ক জকির বেঁধে দেওয়া সুরে তাল মেলানো, র্যাম্পে মডেলদের ‘ক্যাট ওয়াক’ নানা হোটেল-ক্লাবে ছিল এমনই বিভিন্ন আয়োজন। অনেক জায়গায় ছিল বিভিন্ন প্রতিযোগিতার ব্যবস্থাও। পার্টিতে এসে বিশেষ পুরস্কার জিতে ফিরলেন অনেকে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জমল পার্টি। রাত ১২টায় বেলুন উড়িয়ে, আতসবাজি ফাটিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত। খাওয়া-দাওয়া সেরে ভোর নাগাদ বাড়ি ফেরার পরিকল্পনা নিয়েই এসেছিলেন অনেকে।
পার্টিতে যোগ দেওয়ার টিকিট জোগাড় করতে উত্‌সাহীরা উঠেপড়ে লেগেছিলেন অনেক আগে থেকেই। শেষ মুহূর্তে টিকিটের খোঁজ করতে গিয়ে হতাশ হয়েছেন অনেকেই। বিভিন্ন হোটেলের দোরে দোরে ঘুরেও প্রবেশপত্র মেলেনি। বান্ধবীকে নিয়ে সিটি সেন্টারে একটি হোটেলের পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন এক কর্পোরেট সংস্থার কর্মী সৌরভ সরকার। তিনি বলেন, “এক সপ্তাহ আগে টিকিট জোগাড় করেছি। তাই অসুবিধায় পড়তে হয়নি।”
কার্ড কেনার ভিড় বর্ধমান শহরে।
২০০৫ সাল থেকে বর্ষবরণের পার্টির আয়োজন করে আসছে সিটি সেন্টারের ক্ষুদিরাম সরণির নানা হোটেল।
এমনই একটি হোটেলের কর্ণধার কবি দত্ত জানান, কখনও ব্রাজিলের সাম্বা, কখনও রাশিয়ান ব্যালে কখনও আবার কখনও মুম্বইয়ের নর্তকীরা মন কেড়েছেন অনুরাগীদের। এ বার এসেছিলেন ইংল্যান্ড থেকে এসেছেন নর্তকীরা। পাশে আর একটি বড় হোটেল। সেখানে এ বার আকর্ষণ ছিল ভাংড়া। সিটি সেন্টার ও বিধাননগর এলাকার নানা মাঝারি-ছোট হোটেলগুলিতেও আয়োজন ছিল দেদার। বিভিন্ন কর্পোরেট ক্লাবও নিজেদের মতো করে বর্ষবরণ উদ্‌যাপনের ব্যবস্থা করেছিল। তবে পার্কগুলিতে গত বছরের মতো পার্টির আয়োজন দেখা যায়নি এবার।
আসানসোলের নানা এলাকায় মঙ্গলবার বিকেল থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল অনুষ্ঠান। শহরের বিভিন্ন অভিজাত ক্লাবে ছিল নাচগান ও পানভোজনের আয়োজন। আগে এই সব পার্টিতে শুধু ক্লাবের সদস্যদেরই প্রবেশাধিকার ছিল। এ বার ক্লাব সদস্যদের সঙ্গী হয়ে বহিরাগতেরাও ঢোকার সুযোগ পেয়েছেন। একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার অধীনস্থ ক্লাবগুলিতেও এ বার এমন হয়েছে। শহরের বড় বড় হোটেলেও বর্ষবরণের পার্টির আয়োজন ছিল। টিকিট কেটে ঢুকে সেই সব পার্টি উপভোগ করেছেন শহরবাসী।
উত্‌সবের রাত নির্বিঘ্নে পার করতে পুলিশ বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছিল। পার্টি ও ভিড়ের মধ্যে মিশে ছিলেন মহিলা পুলিশকর্মীরা। পুলিশের উপস্থিতি ছিল বড় হোটেলগুলির সামনেও। আলোয় সেজে, সুরের ছন্দে তাল মিলিয়ে, সনাতন পুরনো দুই ঢঙেই ২০১৪-কে স্বাগত জানাল জেলা।

—নিজস্ব চিত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.