|
|
|
|
যদি বন্ধু হও... |
হাত তো বাড়াতে হবেই। ঋতুপর্ণা-পাওলি কি তাই ভাবছেন? অবশেষে সাত বছর বাদে
২০১৪তে ওঁরা একসঙ্গে। নতুন জোটটা কি যথেষ্ট মজবুত? দেখে এলেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত |
টলি ক্লাব সে দিন বেশ জমজমাট।
শীতের দুপুরে রোদ। না, হাতে কমলালেবু না থাকলেও অনেকেই চুমুক দিচ্ছিলেন বিয়ারের গ্লাসে। কেউ বসে আছেন শামিয়ানাতে। সামনেই সবুজ গল্ফ কোর্সের গালিচা।
সেই দুপুরে তাপমাত্রা ঠিক কত ছিল, তা জানা নেই। তবে ঋতুপর্ণা আর পাওলির একটা ফোটোশ্যুটে একসঙ্গে দেখা হওয়ার পরে যদি পারদটা এক-দু’ডিগ্রি কমেও থাকে, তা হলে দোষ কিন্তু আবহাওয়ার নয়।
তিনটে নাগাদ পাওলি পৌঁছে গিয়েছিলেন টলিতে।
এত দিন ইন্ডাস্ট্রিতে দু’জনেই কাজ করছেন। তবু ঋতুপর্ণার সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে এত সময় কেন লাগল?
“হয়ে ওঠেনি। কিছু অফার এসেছিল। কিন্তু ডেটস্-য়ের সমস্যা,” এড়িয়ে গেলেন পাওলি।
ব্যক্তিগত ভাবে ঋতুপর্ণার সঙ্গেও খুব যে তিনি ঘনিষ্ঠ, তাও নয়।
ইন্ডাস্ট্রিতে কানাঘুষোয় এমনটাও শোনা যায় যে দু’জনের মধ্যে একটা টেনশন রয়েছে। আর তাই সঞ্জয় নাগ-য়ের ‘পারাপার’-য়ে এই দুই অভিনেত্রী একসঙ্গে কাজ করবেন, শোনার পর অনেকের কৌতূহল। মতি নন্দীর কাহিনিতে তো এই দুই চরিত্রকে একসঙ্গে দেখা যায় না! তা হলে সিনেমাতে কী করে দেখা যাবে?
পরিচালক কি গল্পটা থেকে তাঁর চিত্রনাট্যটা অন্য রকম ভাবে সাজিয়েছেন?
উত্তর মেলার আগেই ঋতুপর্ণা এসে হাজির। সিনেমার ‘দামিনী’। |
|
পাওলি দূরে দাঁড়িয়ে। সিনেমায় তিনি ‘ঊর্মিলা’।
ঋতু এসেছেন শুনে পাওলি ঘুরে দাঁড়ালেন।
একটা হাল্কা হাসি।
ঋতুপর্ণা বললেন, “মেরি ক্রিসমাস বলব কি?”
তার পর একটা আলিঙ্গন।
ফিল্মি কায়দায় একেবারে ‘মেলাতে হারিয়ে যাওয়া দুই বন্ধুর’ আলিঙ্গন মোটেও নয় সেটা।
একদম পেশাদারি।
গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে চলেন গল্ফ কোর্সের দিকে। গল্ফ কার্টে গিয়ে পাওলি ফোটোগ্রাফারের সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন কোন লাইটে ছবি তুলতে ভাল লাগবে, তা ঠিক করতে।
ঋতুপর্ণা একটু দূরে দাঁড়িয়ে। প্রশ্ন করা হল, কেন এত দিন সময় লাগল পাওলির সঙ্গে কাজ করতে। “আমি একটা সিনেমা ওর সঙ্গে করেছি। স্বপন সাহার। সেটা অবশ্য অনেক দিন আগে...” বললেন তিনি।
ও দিক থেকে পাওলির ডাক। “ইন্টারভিউটা পরে নিও। লাইট পড়ে যাবে যে!” বললেন নায়িকা।
প্রায় আধ ঘণ্টা কেটে গেল ফোটোশ্যুটে। শ্যুটিং করার সময় শৈত্যপ্রবাহের রেশটা একটু হয়তো কাটল।
শুকনো পাতা ছিঁড়তে ছিঁড়তে নিজেদের কাজ নিয়ে দু’জনের মধ্যে একটু আলাপচারিতা আর কী...
“আমি তো এই গোয়া থেকে ফিরলাম। ওখানে আমার হিন্দি সিনেমা ‘ইয়ারা সিলি সিলি’র একটা গানের শ্যুটিং করলাম,” বললেন পাওলি।
“ওহ্! আমি একটু সিঙ্গাপুর যাচ্ছি,” জানালেন ঋতু।
ফোটোশ্যুটের পর দু’জন বসলেন আড্ডায়।
সঙ্গে গ্রিলড্ ফিশ।
পাওলি, আপনারা এর আগে একটা সিনেমাতে নাকি কাজ করেছেন? ঋতুপর্ণা বলছিলেন স্বপন সাহার সিনেমাতে। আপনি নাকি ওঁর বোনের চরিত্রে ছিলেন? পাওলি: ঋতুদির বোন নয়। প্রিয়াংশুর বোন। যত দূর মনে পড়ছে, সিনেমার নাম ছিল ‘আমার প্রতিজ্ঞা’। ২০০৭-য়ে।
২০০৭ থেকে এত দিন! দু’জনের দেখা-সাক্ষাৎ তো ছিল... ঋতুপর্ণা: হ্যাঁ, আমি ওর কাজ টেলিভিশনে দেখেছি।
কোন সিরিয়ালগুলোর কথা বলছেন? ঋতুপর্ণা: নাম মনে নেই। ওই যে সব রোলগুলো...যেখানে ওর বিনুনি থাকত... পাওলি: আমি তো অনেক সিরিয়ালেই বিনুনি করতাম। ঋতুপর্ণা: আমি কমপ্লিমেন্ট করেছি ওকে। মনে আছে, দেখা হওয়ার পরেও বলেছি সেটা। তার পর প্যাট (শিলাদিত্য পত্রনবীশ) মারা যাওয়ার পরও আমি ওকে মেসেজ করেছিলাম। ঋতুপর্ণ আমাকে প্যাট-য়ের মৃত্যুর খবরটা জানিয়েছিল। তুই বোধহয় ঋতুর একটা সিনেমা করেছিলি, তাই না?
পাওলি: হ্যাঁ। ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’। ঋতুপর্ণা: আমি তোকে মেসেজ করেছিলাম। সেটা মনে আছে তোর? পাওলি: (খানিকটা ভেবে) তোমার মেসেজটা মনে নেই। বুম্বাদারটা মনে আছে। (নিস্তব্ধতা...) ঋতুপর্ণা: (ভারী গলায়) আমি করেছিলাম। বলেছিলাম ইফ ইউ নিড এনিথিং, লেট মি নো। আমি ফোনও করেছিলাম তোকে।
মুম্বইতে দু’জনের দেখা হয়? পাওলি: না। হয়নি। ঋতুপর্ণা: হয়েছে। একটা ইভেন্টে।
মুম্বইতে কোনও দিন একসঙ্গে শপিংয়ে যাননি? বা নিউ ইয়ার্সে পার্টি করেননি? দু’জনে: হয়নি। কোনও দিনও হয়নি।
মুম্বইতে কত দূরে থাকেন দু’জনে? ঋতুপর্ণা: ইয়ারি রোডে ফ্ল্যাট কিনেছি তিন বছর আগে। আমার বাড়ির কাছে প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার বাড়ি। শাহিদ কপূর থাকে বাড়ির কাছেই। আমার একই কমপ্লেক্সে থাকে কঙ্কনা, বিনয় পাঠক। আমি জানি না পাওলি কোথায় থাকে। পাওলি: আন্ধেরি ওয়েস্ট শপার্স স্টপের কাছে। আমি জানতাম না ঋতুদি কোথায় থাকে।
তবু পার্টি করেননি মুম্বইতে একসঙ্গে? পাওলি: এমনিতেই আমি খুব একটা পার্টি করি না। তবে রিসেন্টলি রাইমা আর পরমের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। জমিয়ে পার্টি করলাম। ঋতুপর্ণা: আমাদের সম্পর্কটা খুব কর্ডিয়াল।
আচ্ছা কলকাতাতে? লেক গার্ডেন্সে একজনের বাড়ির ছাদ থেকে ঢিল ছুড়লে তো আর এক জনের ছাদে গিয়ে পড়বে! কেউ কারও কলকাতার ফ্ল্যাটে গিয়েছেন? ঋতুপর্ণা: এই আজকে প্রথম শুনলাম যে ও লেক গার্ডেন্সে ফ্ল্যাট কিনেছে। আসলে এত ব্যস্ত থাকি... পাওলি: আমি তো রিসেন্টলি লেক গার্ডেন্সে শিফ্ট করেছি।
‘পারাপার’য়ের আগে, সিনেমায় মেজর কোনও ইন্টার্যাকশন হওয়ার সুযোগ এসেছিল? পাওলি: ‘অলীক সুখ’-য়ের সময়। কিন্তু আমার ডেটস ছিল না। আমি তখন একটা হিন্দি ফিল্মের শ্যুটিং করছিলাম। ‘অঙ্কুর অরোরা মার্ডার কেস’। ওটাতে কমিট করে দিয়েছিলাম। তাই অন্য কাজ করতে পারিনি। ‘পারাপার’য়ে করতে রাজি হয়েছি একমাত্র স্ক্রিপ্টটা দারুণ লেগেছিল বলে। আমি মতি নন্দীর লেখাটা পড়েছিলাম। সঞ্জয়দা আমাকে ফোন করতেই আমি বলেছিলাম তোমার ফিল্মটা কি ওই গল্পটা নিয়ে? আমি জানি কলকাতাতে এমন অনেক পরিচালক আছেন, যাঁরা এই গল্পটা নিয়ে কাজ করতে চেয়েছিলেন।
ঋতুপর্ণা: সিনেমাতে আমার চরিত্রের নাম দামিনী। তার মধ্যে একটা ট্রান্সফর্মেশন হয়। বারো বছর পর তার স্বামী জেল থেকে ফিরে আসে। যে স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ আর খুনের অভিযোগ ছিল। বারো বছরে কত কিছু বদলে গিয়েছে। দামিনী হ্যাজ অলমোস্ট বিকাম দ্য ম্যান অব দ্য ফ্যামিলি। সিনেমাতে আমার চরিত্রটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
পাওলি: ঊর্মিলার চরিত্রটা আমার বেশ কমপ্লেক্স লেগেছে।
হিন্দি ফিল্মের তুলনায় বাংলা সিনেমায় নায়িকারা কি যথেষ্ট বলিষ্ঠ চরিত্র করার সুযোগ পান? যে ভাবে বিদ্যা বালন পাচ্ছেন? এমনকী মাধুরী দীক্ষিতও? ঋতুপর্ণা: বাংলাতেই তো বেশ কনটেন্ট ওরিয়েন্টেড সিনেমা হচ্ছে আজকাল। ‘মুক্তধারা’, ‘অলীক সুখ’, ‘খাঁচা’, ‘মিসেস সেন’—এগুলোর প্রত্যেকটায় বক্তব্যটা বেশ স্ট্রং। সামনের বছর তো তরুণ মজুমদারের একটা সিনেমাও করছি।
পাওলি: আমার তো মনে হয় আঞ্চলিক সিনেমাতেই অনেক ধরনের এক্সপেরিমেন্ট করা হয়। আমাদের এখানে যথেষ্ট ভাল কাজ হচ্ছে।
ঋতুপর্ণা: মালয়ালম, মরাঠি সিনেমাতেও মেয়েদের জন্য বেশ ইন্টারেস্টিং চরিত্র লেখা হয়। এই তো আমি একটা মালয়ালম সিনেমা করলাম। ডিরেক্টর জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত।
পাওলি: আমিও একটা কোঙ্কনি ফিল্ম করেছি। নাম ‘বাগা বিচ’।
ঋতুপর্ণা: একটা গুজরাতি ফিল্মের ডিভিডি আমাকে পাঠিয়েছেন। সেই সিনেমাটা বাংলাতে করার কথা হচ্ছে। প্রধান চরিত্র এক মহিলা আইনজীবী। তার ব্যক্তিগত আর পেশাদার জীবন নিয়েই সিনেমাটা। |
|
“একটা হিন্দি ছবিতে দু’জনকে
কাস্ট করব ভেবেছি” —সঞ্জয় নাগ |
|
আচ্ছা, দু’জনকেই একটা প্রশ্ন করছি। কী ভাল লাগে একে অপরের কাজে?
পাওলি: ‘শ্বেত পাথরের থালা’ থেকে অভিনয় করছেন ঋতুদি। আমার চেয়ে অনেক সিনিয়র। তখন থেকে এখন অবধি ভাল কাজ করার ইচ্ছেটা আছে। আমাদের সোসাইটিটা আজও মেল ডমিনেটেড। ঋতুদি সেটাকে অবস্ট্যাকল হিসেবে আসতে দেয়নি।
ঋতুপর্ণা: পাওলির চয়েস অব ফিল্মস বেশ ইন্টারেস্টিং। ‘কালবেলা’-র মতো একটা ফিল্ম করা কিন্তু ইজ নট আ ম্যাটার অব জোক। বেশ ভাল পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছে। নিজেরটুকু ভাল করেই করেছে। ওর চেহারায় শার্প ফিচারস রয়েছে। সেই শার্পনেসটা অভিনয়ের ক্ষেত্রেও হেল্প করে...
‘কালবেলা’ তো অনেক পুরনো সিনেমা। এর পর কিছু দেখেছেন?
ঋতুপর্ণা: ‘মনের মানুষ’-য়ে একটা গান দেখেছিলাম। ও সেই গানটা বেশ ভাল ভাবে পোর্ট্রে করেছিল। দেখে মনে হয়েছিল শি হ্যাজ গট ট্রিমেন্ডাস পোটেনশিয়াল।
পাওলি: থ্যাঙ্ক ইউ।
অনেকেই বলে আপনাদের দু’জনের মধ্যে টেনশনের কারণ হল ‘ছত্রাক’।
ঋতুপর্ণা: তাই নাকি? আমি তো এটা জানতাম না!
পাওলি: আমিও না।
সেটাই তো বলা হয়ে থাকে।
ঋতুপর্ণা: অভিনেত্রী হিসেবে ওর পূর্ণ স্বাধীনতা আছে নিজের চরিত্র বেছে নেওয়ার। সেটা ওর ডিসিশন। তা নিয়ে আমি কমেন্ট করতেও চাই না। আমি এটুকু বলতে পারি যে ওই রকম একটা দৃশ্য করতে আমি কমফর্টেবল বোধ করব না। হয়তো অন্য রকম করব। বাট নট সামথিং লাইক দিস। কিন্তু আই রেসপেক্ট হার ভিউজ।
পাওলি: (বেশ সিরিয়াস গলায়) ‘ছত্রাক’-য়ের সঙ্গে ‘পারাপার’-য়ের কোনও যোগ নেই। এ নিয়ে আমি কথা বলতেও চাই না।
সিনেমার যোগ নেই ঠিকই। তবে লোকে বলে যে ওই সিনেমার পরেই আপনাদের সম্পর্কটা তিক্ত হয়ে যায়...
পাওলি: এ সব শুনিনি। তবে এটুকু বলছি যে ওই সময় কিছু কমেন্টস করা হয়েছিল। দোজ ওয়্যার নট ভেরি প্লেজেন্ট। শ্রুতিমধুর ছিল না। কিন্তু তার জন্য অভিনেত্রী হিসেবে আমার মতামত পাল্টাবে না। সে জন্য আমি কারও অভিনেতা সত্তাকে প্রশ্ন করব না। আমি কী, পার্সোনালি সেটা ঋতুদি জানে না। আমিও জানি না ঋতুদি ব্যক্তিগত ভাবে কেমন। তবে সেই কমেন্টগুলোর জন্য যে এত দিন কাজ করিনি, তা বললে ভুল বলা হবে। আমি পেশাদার অভিনেত্রী। যদি ঠিক করি একটা সিনেমা করব, তা হলে আমার কাছে এটা ইম্পর্ট্যান্ট নয় যে কারা সেখানে অভিনয় করছে। তা দেখে আমি সিনেমা করি না। পেশাদার অভিনেত্রী হিসেবে আমার চিত্রনাট্যটা ভাল লাগা দরকার। ‘পারাপার’-য়ের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। ঋতুদি আছে বলে কিন্তু আমি সিনেমাটা করছি বা করছি না, সেটা নয়।
(ঠিক সেই সময় পরিচালক সঞ্জয় নাগ এসে পড়লেন)
সকলের কৌতূহল যে মতি নন্দীর দুই চরিত্র, দামিনী আর ঊর্মিলার তো গল্পে দেখা হয় না। আপনি দু’জনের ইন্টার্যাকশনটা করাচ্ছেন কী করে?
সঞ্জয়: আমি গল্পটা প্রথম পড়েছিলাম বাংলাদেশে। দারুণ লেগেছিল। তার পর যখন ঠিক করি চিত্রনাট্য লিখব, তখন বেশ কিছু জিনিস পাল্টে ফেলি। আমার সিনেমাটা একটা অ্যাডাপটেশন বললে ভাল হয়। ঋতুপর্ণা: এ বার আমাকে ছুটতে হবে। স্কুলের রিইউনিয়ন আছে। তার পর শো। নতুন বছর ভাল কাটুক সব্বার।
পাওলি: হ্যাঁ। ভাল কাটুক।
ঋতুপর্ণা আর পাওলি আপনারা দু’জনেই এখন হিন্দি সিনেমাতে কাজ করছেন। কোনও হিন্দি সিনেমা একসঙ্গে করার অফার আছে কি?
সঞ্জয়: আমার ইচ্ছে আছে করার।
ঋতুপর্ণা: তাই নাকি? এটা তো শুনিনি।
পাওলি: বলোনি তো!
সঞ্জয়: সব কথা কি আজই বলে দেব নাকি? নতুন বছরের জন্য কিছু বাঁচিয়ে রাখি।
|
*** |
শ্যুটিং শেষে ফেরার পথে পাওলির ফোন। “এটুকু প্লিজ লিখবেন যে আমার সিনেমা বোধটা আমার মতো। দুই অভিনেত্রীর সিনেমা সম্পর্কে পারসেপশন আলাদা হতেই পারে। আমি আমার মতো করে কাজ করি। ঋতুদি ওর মতো। যখন সিনেমা করি, আমার কাছে সব থেকে ইম্পর্ট্যান্ট হল ছবির বিষয়, চরিত্র আর পরিচালক। এর আগে যে আমাদের কাজ হয়নি, এই তিনটে কারণের মধ্যে কোনও একটা মেলেনি বলেই। ‘পারাপার’-য়ের বিষয়টা ভাল লেগেছে। ঊর্মিলার চরিত্রটা ভাল লেগেছে। আমি যত দূর বুঝেছি, ‘পারাপার’-য়ে কিন্তু আমরা একসঙ্গে থেকেও নেই। এ রকম নয় যে আমরা প্রত্যেকটা ফ্রেমে আছি। খুব কম ইন্টার্যাকশন আছে।”
ফোন রাখার পর আবার পাওলির কল: “ঋতুদি বলেছিল যে প্যাট মারা যাওয়ার পরে ও ফোন করেছিল, সেটা নিশ্চয়ই ও ঠিক বলছে। প্যাট মারা যাওয়ার পর আমি এত ডিস্টার্বড ছিলাম যে তখনকার সব ফোনের কথা মনে থাকে না। ও বলছিল, ঋতুদার কাছ থেকে নাম্বার নিয়ে আমাকে ফোন করেছিল...” |
*** |
একদিন বাদে ঋতুপর্ণার ফোন। সিঙ্গাপুরের বাড়ি থেকে। পাওলি ফোন করে যা বলেছেন, তা ওঁকে জানানো হল। সব শুনে বললেন, “আমি খুব আন্তরিক ভাবেই ওকে সেদিন ফোনটা করেছিলাম। সব সময় মনে করি যে মানুষের ভাল সময় না থাকতে পারলেও যেন তার অসময়ে থাকতে পারি। এটা আমার নেচার। সবাইকে নিয়েই চলতে চাই আমি। পেশাদার অভিনেতা হিসেবে আমার কাজে এই সব নিয়ে কোনও ইমপ্যাক্ট হয় না। আবারও বলছি ‘ছত্রাক’ সম্পর্কে আমার ভিউ হল আমি ওর ডিসিশনকে সম্মান করি। নিজে হয়তো এমন একটা দৃশ্য করব না। তবে এটাও বলব, শুধু একটা দৃশ্য দেখে গোটা সিনেমাকে ‘জাজ’ করা যায় না। যেদিন সম্পূর্ণ সিনেমাটা দেখব, সেদিন কমেন্ট করতে পারব।” তা হলে কি সম্পর্কের বরফটা গলল? নাকি নতুন জোটটা আরও মজবুত হতে এখনও সময় লাগবে?
উত্তর দেবে ২০১৪। |
ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল। |
|
|
|
|
|