|
|
|
|
দাঁড়ানো রোলারে গাড়ির ধাক্কা, মৃত ৫ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
অভিজ্ঞ চালক ছিলেন সঙ্গে। কিন্তু তাঁকে সরিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন যিনি, তিনি নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি। রাস্তার ধারে দাঁড়ানো রোড রোলারের পিছনে গাড়ি সজোরে ধাক্কা মারায় চার বন্ধু এবং চালক মারা গেলেন ঘটনাস্থলেই। রবিবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট থানার বুড়ারি গ্রামের কাছে, হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কে ওই দুর্ঘটনার পরে, এক আহতকে দোমড়ানো-মোচড়ানো গাড়ি থেকে বার করতে কালঘাম ছোটে পুলিশের। শেখ রবিউল রহমান নামে হাওড়ার আমতার বাসিন্দা ওই যুবককে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। |
|
দুর্ঘটনায় মৃত যাত্রীদের দেহ আনা হয়েছে কোলাঘাট থানায়। |
কোলাঘাট থানার ওসি বাসুকি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, প্রচণ্ড গতিতে ছিল গাড়িটি। তার জেরেই দুর্ঘটনা।” পুলিশ জানায়, মৃতদের মধ্যে শেখ জাহাঙ্গির হোসেন (৩০), শেখ মুস্তাক (৩২), শেখ নজরুল (২৮) এবং মহম্মদ সরফরাজ ওরফে সঞ্জু (৩২) পরস্পরের বন্ধু। তমলুকের আত্মীয় বাড়িতে আসা রবিউলও তাঁদের বন্ধুস্থানীয়। জাহাঙ্গির ও মুস্তাকের বাড়ি তমলুকের রাজাবাজার এলাকায়। সঞ্জুর বাড়ি চনশ্বরপুরে। শেখ নজরুলের বাড়ি তমলুক শহর সংলগ্ন সোনামুই এলাকায়। আর এক মৃত গোপাল রায়ের (৩০) বাড়ি কাছেই নারায়ণদাঁড়ি গ্রামে। তিনি পেশায় গাড়িচালক।
তমলুক শহরের পরিচিত ব্যবসায়ী শেখ জাহাঙ্গিরের আত্মীয়েরা জানান, রবিবার রাতে তমলুক রাজ ময়দানে মেলা দেখার পরে, পাঁচ বন্ধু মিলে জাহাঙ্গিরদের গাড়িতে দিঘা যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। জাহাঙ্গিরের বাবা নুর মহম্মদ বলেন, “ছেলে দিঘা যাওয়ার কথা বললে আমি অভিজ্ঞ গাড়ি চালক গোপালকে ডেকে নিয়ে আসি। গোপালই বাড়ি থেকে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে গিয়েছিল।”
পুলিশ জানায়, রাত ১২টা নাগাদ গাড়িটি দিঘার বদলে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক ধরে মেচেদার পথ ধরে। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক অফিস ও বুড়ারি বাজারের মাঝে এক জায়গায় ঘটে দুর্ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দা আজিম খান বলেন, “প্রচণ্ড শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। রাস্তায় এসে দেখি, রোড রোলারের পিছনে একটি গাড়ি দুমড়ে-মুচড়ে পড়ে রয়েছে। তখনও গাড়ির ভিতরে একজন আহত অবস্থায় কাতরাচ্ছেন। গাড়িটি এমন ভাবে মুচড়ে গিয়েছিল যে, তাঁকে বার করা যাচ্ছিল না।” |
|
দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া গাড়িটি। সোমবার। |
কিছুক্ষণ পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত রবিউলকে কোনও রকমে উদ্ধার করে। তার পরে মৃতদেহ-সহ গাড়িটি টেনে নিয়ে যাওয়া হয় কোলাঘাট থানায়। শেখ মুস্তাকের ভাই গোলাম মোর্তাজা বলেন, “আমরা যখন থানায় যাই, তখনও দেহগুলো বার করা হয়নি। গাড়ি কাটার পরে দেখতে পাই, চালকের আসনে সঞ্জু। গোপাল গাড়ি চালালে হয়তো এই ভাবে দুর্ঘটনা ঘটত না!”
|
ছবি: পার্থপ্রতিম দাস। |
|
|
|
|
|