যাতায়াতের পথে দলছুট হয়ে কুয়োর মধ্যে একটি বাচ্চা হাতি পড়ে যাওয়ার ঘটনায় রবিবার গভীর রাতে চাঞ্চল্য ছড়ায় শালবনি থানার চন্দনকাঠ এলাকায়। বন দফতর সূত্রে খবর, রাত দু’টো নাগাদ একটি বাচ্চা হাতি কুয়োয় পড়ে যায়। সোমবার সকাল ন’টা নাগাদ হাতিটিকে কুয়োর মধ্যে থেকে তোলা হয়। কুয়োয় জল ঢেলে স্থানীয় গ্রামবাসীরাই হাতিটিকে উদ্ধার করেন।
কয়েক দিন আগে দলমার ১৩০টি হাতির দল ওড়িশা থেকে নয়াগ্রামে ঢুকে পড়ে। পরে নয়াগ্রাম থেকে কলাইকুণ্ডার শঙ্করবনির জঙ্গলে চলে আসে। সেখান থেকে চাঁদড়া পেরিয়ে ঢুকে পড়ে শালবনিতে। গত কয়েক দিন ধরে হাতির দলটি শালবনি থানা এলাকার বিভিন্ন এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এখন হাতির দলটি গোদাপিয়াশাল রেঞ্জের চন্দনকাঠ, পাথরচাটি এলাকায় রয়েছে। দলমার এই দলটিতে দু’টি সদ্যোজাত রয়েছে। ফলে, দলটি দ্রুত এলাকা ছাড়ছে না। সদ্যোজাতদের সঙ্গে নিয়ে ধীরে ধীরে এগোচ্ছে। বন দফতর সূত্রে খবর, রবিবার গভীর রাতে হাতির একটি দল জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। তখনই একটি হাতি কুয়োর মধ্যে পড়ে যায়। বন দফতরের এক কর্তা বলেন, “দলমার দলটিতে ১৩০টি হাতি আছে। এরমধ্যে দু’টি সদ্যোজাত। সম্ভবত, তারই একটি কুয়োর মধ্যে পড়ে গিয়েছিল। খবর পেয়ে আমরা হাতি উদ্ধারের চেষ্টা করি। সোমবার ভোরে কর্মীরা এলাকায় যান। গ্রামবাসীরা সব রকম সহযোগিতা করেছেন।” ওই কর্তার কথায়, “যাতায়াতের পথে দলছুট হয়ে বাচ্চা হাতিটি কুয়োর মধ্যে পড়ে গিয়েছিল। শুরুতে সমস্যা হলেও পরে হাতিটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।” |
কী ভাবে হাতিটিকে উদ্ধার করা হল? যে কুয়োয় হাতিটি পড়ে গিয়েছিল, তার অদূরে আরও একটি কুয়ো রয়েছে। ওই কুয়োর জল পাম্পের সাহায্যে এই কুয়োয় এনে ফেলা হয়। ফলে, কুয়োর জল বাড়তে থাকে। সঙ্গে খড় ফেলে কুয়োর গভীরতা কমানো হয়। এরপর জলের সঙ্গে বাচ্চা হাতিটিও ধীরে ধীরে উপরে উঠে আসতে থাকে। কুয়োর মধ্যে থেকে বেরিয়ে হাতিটি ফের জঙ্গলে চলে যায়। তবে দলের অন্য হাতিরা রাতভর চন্দনকাঠে দাপিয়ে বেড়ায়। হাতির হানায় ইতিমধ্যে প্রচুর ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে বন কর্তাদের চিন্তা বাড়ছে। হাতির দলটি গোয়ালতোড়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছে। বন দফতরের কর্মীরা অবশ্য দলটিকে লালগড়ের দিকে পাঠানোর চেষ্টা করছেন। কারণ, গোয়ালতোড়ের দিকে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে। দফতরের এক কর্তা বলছিলেন, “মনে হচ্ছে, দলটি গোয়ালতোড়ের দিকে এগোতে চাইছে। আমরা দলটিকে লালগড়ের দিকে পাঠানোর চেষ্টা করছি।” এদিকে, কুয়ো থেকে বেরনোর পর জঙ্গলে পালাতে গিয়ে বাচ্চা হাতিটি একজনকে জখম করে। তাঁর আঘাত অবশ্য গুরুতর নয়। ওই কর্তার কথায়, “কুয়োটি কিছুটা গভীর ছিল। তাই খড় না- ফেলা হলে গভীরতা কমানো সম্ভব হত না। ফলে, আরও সমস্যা হত। গ্রামবাসীদের সাহায্য নিয়েই হাতি তাড়ানোর কাজ চলছে। আমরা দলটির গতিবিধির উপর নজর রেখেছি।”
|