ভাঙা মেলার ধাক্কাতেই অবরুদ্ধ শান্তিনিকেতন
‘ভাঙা মেলা’ ঘিরে ঢিলেঢালা পুলিশ আর শনিবারের ‘অন্য হাট’। দুইয়ে মিলিয়ে ব্যাপক যানজটে দীর্ঘক্ষণ কার্যত স্তব্ধ হয়ে থাকল শান্তিনিকেতনের বিস্তীর্ণ এলাকা। দু’দিন আগেই পৌষমেলা আনুষ্ঠানিক ভাবে শেষ হয়েছে। কিন্তু সপ্তাহান্তে ভাঙা মেলা দেখতেই কাতারে-কাতারে মানুষ শান্তিনিকেতনে ভিড় করেছেন। দুপুর থেকেই ভিড় জমেছে সোনাঝুরির ‘অন্য হাটে’ও। সার দিয়ে গাড়ি ঢুকেছে, বিকেল গড়াতে উল্টো পথও ধরেছে। দু’মুখো স্রোত যখন জট পাকাচ্ছে, তা নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশের প্রায় দেখা মেলেইনি।
বস্তুত, গত বৃহস্পতিবার পৌষমেলার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ইস্তক পুলিশ কার্যত গা ছেড়ে দিয়েছে। বোলপুর শহর বা শান্তিনিকেতনে ঢোকার রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ ছিল না বললেই চলে। যে যার খুশি মতো গাড়ি পার্ক করেছেন। তাতেই সরু রাস্তা অনেকখানি আটকে গিয়েছিল। তার উপরে গাড়ির সার। বিকেলের পর থেকে শান্তিনিকেতনের রাস্তায় চলাফেরা করাই দায় হয়ে যায়।
কলকাতার খিদিরপুর থেকে আসা সোমনাথ দাসের অভিজ্ঞতা, “সোনাঝুরির হাটে যাওয়ার জন্য বিকেল থেকে শ্যামবাটির ক্যানাল এলাকায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। আধ ঘণ্টায় এক চুলও এগোতে পারিনি। ক্যানালের উপরে দু’দিক থেকে দু’টি গাড়ি পাশাপাশি এসে যাওয়ায় যানজট চরমে ওঠে। অথচ তা নিয়ন্ত্রণ করতে কোনও পুলিশি ব্যবস্থা ছিল না।”
যানজটে স্তব্ধ রাস্তা। শনিবার শান্তিনিকেতনে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
সোনাঝুরির জঙ্গলের প্রান্তে অন্য হাট প্রতি শনিবারই বসে। ভিড়ও হয়। বর্ষশেষে তা উপচে পড়েছে। বিকেল থেকেই খোয়াই থেকে শান্তিনিকেতনের রাস্তা ভিড়ে থিকথিক করতে শুরু করে। সপরিবার আটকে পড়েন কলকাতা বা দুর্গাপুর থেকে গাড়ি নিয়ে আসা অনেকেই। শিক্ষামূলক ভ্রমণের জন্য শান্তিনিকেতনে এসেছিল কলকাতার একটি বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়ারা। তাদের গাইড এস শঙ্করের আক্ষেপ, “গ্রামীণ হাট কী, পড়ুয়াদের তা দেখাতে নিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু এত ভিড় যে, বেশি দূর এগোতেই পারলাম না।”
পুলিশ-প্রশাসন কেন নিধিরাম সর্দার হয়ে বসে রইল, তা নিয়ে অবশ্য কেউই মুখ খুলতে চাননি। শান্তিনিকেতন তদন্তকেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে, সেখানে মাত্র আট জন অফিসার। তাঁদের সঙ্গে ৪০ জনের বাহিনী। ওই দিয়েই যতটুকু সম্ভব, ভিড় সামলানোর চেষ্টা করা হয়েছে। বোলপুর পুরসভার উপপ্রধান নরেশচন্দ্র বাউড়ির দাবি, “আনুষ্ঠানিক ভাবে মেলা শেষ হওয়ার পরেও দু’দিনের জন্য আমরা শহর জুড়ে স্বেচ্ছাসেবক রেখেছি।” তা যদি থেকেও থাকে, এই ভিড় সামলানোর জন্য তাঁরা যে যথেষ্ট নন, তা এ দিনই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।
পৌষমেলার অন্যতম উদ্যোক্তা তথা শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সাম্মানিক সম্পাদক অনিল কোনার বলেন, “আজ, রবিবার মেলা চত্বর থেকে যাতে দোকানদারেরা অবিলম্বে পসরা গুটিয়ে নেন, তার জন্য আমরা মাইকে প্রচার করব।” বীরভূম জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনার আশ্বাস, রবিবার থেকে পর্যটকদের যাতে আর সমস্যায় না পড়তে হয়, পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলে তিনি সেই ব্যবস্থা করবেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.