অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করে অ্যাম্বুল্যান্সে করে ফেরার পথে মাঝপথে ধর্ষিতা হলেন বছর চল্লিশের এক মহিলা। শুক্রবার গভীর রাতের এই ঘটনার পুলিশ ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত অ্যাম্বুল্যান্স চালক হাবিবুর শেখকে গ্রেফতার করেছে। তার বাড়ি হরিহরপাড়ার বোরাকুলি গ্রামে। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ওই মহিলার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে পাকড়াও করা হয়েছে। অভিযোগকারিণীর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করা হয়েছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থানার চোঁয়া এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলার মেয়ের প্রসব যন্ত্রণা ওঠে। বাড়িতে তখন তিনি একাই ছিলেন না। ওই মহিলা তড়িঘড়ি একটি গাড়ি ভাড়া করে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরের হরিহরপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। বাড়িতে কেউ না থাকায় মাঝবয়সী ওই মহিলা মেয়েকে দেখভালের জন্য এক আত্মীয়াকে রেখে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেন। তাঁর কথায়, “রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ হাসপাতালের হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে চোঁয়াগামী কোনও গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। হাসপাতালের বাইরে বেশ কিছু গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। ওই গাড়ির চালকেরা হাবিবুরের গাড়িতে উঠতে বলেন। হাবিবুর জানায়, হাসপাতালে রোগী নামানো হয়ে গিয়েছে। এ বার সে চোঁয়ার দিকেই যাবে। তাই বাড়ি ফেরার তাড়া থাকায় আমি কালবিলম্ব না করে সরল মনে গাড়িতে উঠে পড়ি।’’ এরপর হাবিবুর বদ মতলব খাটাতে শুরু করে। সে ওই মহিলাকে বাড়ি না নিয়ে গিয়ে অন্য পথ ধরে। ওই মহিলার কোনও আপত্তিতে কান না দিয়ে হাবিবুর বেশ খানিকটা দূরে বেনেকুলা মাঠে গাড়ি দাঁড় করায়। তারপর শুরু হয় ওই মহিলার উপর পাশবিক অত্যাচার। মহিলার কথায়, “রাত তখন প্রায় একটা। চারিদিকে নির্জনতা। ঘন আঁধার। আমাকে কথা বললেই প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে হাবিবুর মাঠের মধ্যে ধর্ষণ করে। তারপর মাঠের মধ্যে ফেলে রেখে পালিয়ে যেতে উদ্যত হয়। অন্ধকারে ভয় পেয়ে আমি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য ধর্ষকের হাত-পা ধরে কাকুতিমিনতি করতে থাকি। তারপর সে বাড়ির সামনে নামিয়ে চম্পট দেয়।” শনিবার সকালে ওই মহিলা পড়শি ও আত্মীয় স্বজনদের গোটা বিষয়টি জানান। সকাল দশটা নাগাদ ওই মহিলা হরিহরপাড়া থানায় ধর্ষণের লিখিত নালিশ জানান। অভিযোগ পেয়েই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। তড়িঘড়ি হাসপাতাল চত্বরে গিয়ে হাবিবুরকে গ্রেফতার করে।
এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে। হরিহরপাড়ার বিধায়ক সিপিএমের ইনসার আলি বিশ্বাস বলেন, “অত্যন্ত নক্কারজনক ঘটনা। অ্যাম্বুল্যান্স চালক যদি এমন কাণ্ড ঘটাবে তা ভাবাই যায় না।” ধৃতের মা মনোয়ারা বিবির অবশ্য সাফাই, ‘‘আমার ছেলে এ রকম কোনও ঘটনা ঘটাতেই পারে না। চক্রান্ত করে ফাঁসোনো হচ্ছে।” |