দোষ হাজার, তবু তিনি ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’
তাঁর বিরুদ্ধে এক সহপাঠিনীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ রয়েছে। সেই অভিযোগে হাজতবাসও করতে হয়েছে তাঁকে। শ্লীলতাহানিই শুধু নয়, নিজের ছাত্র সংগঠনের টাকা নয়ছয় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আদুর গায়ে নাচানাচি এমন একাধিক অভিযোগ আছে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিশ্বজিৎ দাস ওরফে বাপ্পার বিরুদ্ধে।
তৃণমূলের এ হেন বিতর্কিত ছাত্র নেতা, সেই বাপ্পাকেই ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণা করল ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষাবন্ধু সমিতির অধীনে থাকা শিক্ষাকর্মী সমিতি।
উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী অবশ্য বলছেন, শিক্ষাকর্মী সমিতির দেওয়া ওই সম্মানের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও যোগ নেই। গত ২৫ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সমিতির একটি অনুষ্ঠানে বাপ্পার হাতে ওই সম্মান তুলে দিয়েছিলেন উপাচার্যই। দেওয়া হয়েছিল পাঁচ হাজার টাকা, বই ও মানপত্র। কিন্তু উপাচার্য পরে বলেছেন, বাপ্পাকে যে এমন পুরস্কার দেওয়া হবে, সে কথা আগে তাঁকে বলা হয়নি। তাঁর বক্তব্য, “ওকে (বাপ্পা) এমন সম্মান যে দেওয়া হবে, তা আমার জানা ছিল না। শিক্ষাকর্মী সমিতি একটি মিলন মেলার আয়োজন করেছিল। সেখানে আচমকাই সেরা শিক্ষক, সেরা আধিকারিক ও সেরা ছাত্রের নাম ঘোষণা করে তাঁদের হাতে সম্মানপত্র তুলে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। তখন আমার আর কোনও উপায় ছিল না।”
উপাচার্যের সুরে একই কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও। তিনি বলেন, “একটা সংগঠন ওই সম্মান দিয়েছে। তবু বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখব।” আর যাঁকে ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছে, সেই বাপ্পা এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। কেবল এটুকু বলেছেন, “যারা সম্মান দিয়েছে, তাদের জিজ্ঞাসা করুন।”
যে সংগঠন বাপ্পাকে ‘সেরার শিরোপা’ দিয়েছে, সেই শিক্ষাকর্মী সমিতির কোনও পদাধিকারীর সঙ্গে শনিবার রাত পর্যন্ত যোগাযোগ করা যায়নি। এমনকী, ওই সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত চক্রবর্তীর মোবাইলে এসএমএস করা হলেও তার কোনও জবাব মেলেনি। তবে যে সংগঠনের অধীনে শিক্ষাকর্মী সমিতি কাজ করে, সেই তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষাবন্ধু সমিতির রাজ্য সভাপতি গগন সরকারের বক্তব্য, “ওই ছাত্রের কাজের মূল্যায়ন সংগঠনের সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় শাখাই করেছে। তাই কেন তাঁকে এই সম্মান দেওয়া হল, সে নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। তবে শ্লীলতাহানির বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। ওই অভিযোগ উঠলে জেলে যেতে হবে, কারণ এটা জামিন অযোগ্য অপরাধ।”
তবে অপরাধ প্রমাণিত না হলে এ নিয়ে কিছু বলা ঠিক নয়, মন্তব্য গগনবাবুর। রবীন্দ্রভারতীতে এ বছর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। বাপ্পাকে পাশে বসিয়ে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করেছিলেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা। এ নিয়েও কম বিতর্ক হয়নি। তখন রাজ্য সভাপতি জানিয়েছিলেন, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে, ভোটাভুটি করে বাপ্পাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। বাপ্পাকে রবীন্দ্রভারতীর টিএমসিপি ইউনিটের সভাপতি ও পর্যবেক্ষকও করা হয়েছে। তবে ওই নেতাকে বর্ষসেরা ছাত্র খেতাব দেওয়ার ব্যাপারে শঙ্কুদেব বলেন, “কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠন কাকে কী সম্মান দিচ্ছে, তা নিয়ে রাজ্য সভাপতি কিছু বলতে পারে না।” বাপ্পাকে সম্মান দেওয়া নিয়ে এ দিন প্রতিবাদ জানিয়েছে এসএফআই।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.