বার্ষিক সাধারণ সভার দু’দিনের মাথাতেই হিন্দুস্তান মোটরসের (এইচএম) চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন সি কে বিড়লা। আর্থিক সঙ্কটে ভোগা গাড়ি সংস্থাটির পরিচালন পর্ষদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন তিনি।
শনিবার এই মর্মে জারি করা বিবৃতিতে হিন্দুস্তান মোটরস জানিয়েছে, উত্তরপাড়া ও চেন্নাইয়ের কারখানাকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে বিভিন্ন আর্থিক সংস্থা এবং সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছে তারা। এ নিয়ে প্রাথমিক ভাবে আগ্রহও প্রকাশ করেছে কয়েকটি বিশ্ব মানের সংস্থা। তাই এই পরিস্থিতিতে বিড়লা মনে করছিলেন, তিনি শীর্ষ পদ থেকে সরে দাঁড়ালে সংস্থা বাঁচানোয় ওই লগ্নি আসার ক্ষেত্রে সুবিধা হতে পারে। আর সেই কারণেই পদত্যাগের এই সিদ্ধান্ত বলে এইচএমের দাবি।
সুজুকির হাত ধরে মারুতির চাকা গড়ানোর আগে এ দেশের বৃহত্তম গাড়ি নির্মাতা ছিল হিন্দুস্তান মোটরসই। মন্ত্রী-আমলাদের গাড়ি থেকে রাস্তার ট্যাক্সি সর্বত্র সদর্প উপস্থিতি ছিল তাদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডরের। কিন্তু নয়ের দশকে অর্থনীতির আগল খুলে যাওয়ার পর তীব্র প্রতিযোগিতায় যুঝে উঠতে পারেনি এইচএম। চুক্তিমাফিক কখনও মিৎসুবিশির যাত্রী-গাড়ি, তো কখনও হাল্কা বাণিজ্যিক গাড়ি তৈরির মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও হালে পানি পায়নি।
যার প্রতিফলন হিসেবে গত শুক্রবারই বার্ষিক সাধারণ সভায় সংস্থা জানিয়েছিল, ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৮ মাসে তাদের লোকসান হয়েছে ৭১.২০ কোটি টাকা। ২০১১-’১২ অর্থবর্ষের ২৯.৯৬ কোটি ক্ষতির তুলনায় যা অনেকটাই বেশি। পুঞ্জীভূত লোকসানের বোঝা ছাপিয়ে গিয়েছে নিট সম্পদকেও। সাধারণত যা হলে সংস্থাকে বিআইএফআরে পাঠাতে হয়।
সে দিন সি কে বিড়লা এ নিয়ে মুখ না-খুললেও এইচএমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর-সিইও উত্তম বসু জানান, টাকার অভাবে সংস্থার দৈনন্দিন কাজ চালানোই মুশকিল হয়ে পড়ছে। সমস্যার সুরাহা করতে উত্তরপাড়া ও চেন্নাইয়ের কারখানাকে আলাদা করার চেষ্টা চলছে। যেহেতু সম্ভাব্য লগ্নিকারীরা আপাতত একটি কারখানায় টাকা ঢালতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন, তাই প্রথমে লগ্নির জন্য চেন্নাই কারখানার শেয়ার বেচার পরিকল্পনা রয়েছে বলেই সংশ্লিষ্ট সূত্রে দাবি।
সংস্থার দাবি অনুযায়ী, সেই পথ সুগম করতেই স্বাধীনতারও আগে গোড়াপত্তন হওয়া এই সংস্থার শীর্ষ পদ থেকে এ দিন সরে গেলেন সি কে বিড়লা। ১৯৯৭ সালে হিন্দুস্তান মোটরসে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছিলেন যিনি। |