টাটকা খবর |
মসনদ-যাত্রায় সঙ্গী সেই ‘আম আদমি’ই
নিজস্ব প্রতিবেদন |
রামলীলা ময়দানে শনিবার দিল্লির সপ্তম এবং কনিষ্ঠতম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন আম আদমি পার্টি-র (আপ) অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তাঁর সঙ্গে এ দিন মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন আরও ছ’জন— মণীশ সিসৌদিয়া, রাখী বিড়লা, সোমনাথ ভারতী, সৌরভ ভরদ্বাজ, সত্যেন্দ্রকুমার জৈন এবং গিরিশ সোনি। তাঁরা কে কোন দফতরের দায়িত্ব পেলেন, বেলার দিকে তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয় দলের তরফে।
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর প্রথম ভাষণে অরবিন্দ বললেন, “দেশ থেকে দুর্নীতি বিদায় করতে আমাদের সকলকে একসঙ্গে লড়াই করতে হবে। মনে রাখতে হবে এটা ভারতের দ্বিতীয় স্বাধীনতা আন্দোলন।” এই সরকার যে দিল্লির দেড় কোটি মানুষের সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “আমার হাতে কোনও জাদুকাঠি নেই। দু’-এক দিনে কোনও কিছু হওয়া সম্ভবও নয়। তবে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ভারতকে ‘সোনার পাখি’ হিসেবে গড়ার প্রত্যয় আমাদের আছে।” রামলীলা ময়দান তখন ‘আম আদমি’র ভিড়ে ঠাসা। |
|
রামলীলা ময়দানে কেজরিওয়াল। ছবি: পিটিআই। |
আগেই জানানো হয়েছিল, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে বাকি সদস্যদের নিয়ে অরবিন্দ মেট্রোতেই যাবেন। সেই মতো সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বাড়ি থেকে কৌশাম্বী স্টেশনের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। বারাখাম্বা স্টেশনে নামতেই জনজোয়ারে আটকে পড়েন। গলায় মালা পরিয়ে তাঁদের নেতাকে বরণ করে নেন দলীয় সমর্থকেরা। ভিড় কাটিয়ে রামলীলা ময়দানে পৌঁছে বেলা বারোটা নাগাদ মঞ্চে ওঠে টিম-কেজরিওয়াল। সঙ্গে দিল্লির লেফ্টেন্যান্ট গভর্নর নাজিব জং। উচ্ছ্বসিত জনতার অভিনন্দন-চিত্কারের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন অরবিন্দ। একে একে আরও ছ’জনকে শপথবাক্য পাঠ করান নাজিব।
শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে পারেননি কেজরিওয়ালের ‘গুরু’ অণ্ণা হজারে। এ দিন সকালে চিঠি দিয়ে তিনি সে কথা জানিয়েও দিয়েছিলেন। আপ-এর প্রশাসনিক যাত্রা শুরুর দিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে অণ্ণা বলেছেন, “অরবিন্দ যে ভাবে কাজ করছে সেটাই সঠিক পথ। আমার বিশ্বাস ও আরও ভাল কাজ করবে।”
এই নিয়ে দ্বিতীয় বার দিল্লির কোনও মুখ্যমন্ত্রী রামলীলা ময়দানে শপথ নিলেন। অরবিন্দের আগে ১৯৯৬ সালে বিজেপি-র সাহিব সিংহ বর্মা ঐতিহাসিক এই ময়দানে শপথ নিয়েছিলেন। তবে এ দিনের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে বিজেপি-র হর্ষ বর্ধন ছাড়া আর কোনও হেভিওয়েট রাজনৈতিক নেতাকে রামলীলা ময়দানে দেখা যায়নি। এমনকী, যারা আপ-কে বাইরে থেকে সমর্থন দেবে বলে জানিয়েছে, সেই কংগ্রেসের কোনও নেতাও সেখানে ছিলেন না। যাননি দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতও। যদিও বিজেপি-র সভাপতি রাজনাথ সিংহ ‘আপ’ সরকারকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর প্রথম ভাষণ শেষে অরবিন্দ গেয়ে উঠলেন গান। ১৯৫৯ সালে একটি হিন্দি চলচ্চিত্রে মান্না দে-র গাওয়া গানটি অরবিন্দ যখন মঞ্চে গাইছেন, তাঁর সঙ্গে গলা মেলালেন নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যেরা। বাদ গেলেন না ময়দানে উপস্থিত সাধারণ মানুষও। তাঁদের মধ্যে তত ক্ষণে যে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধ’র উত্তাপ ছড়িয়ে দিয়েছেন ‘আম আদমি’র নতুন মুখ্যমন্ত্রী। প্রকাশ্যেই তিনি বলেছেন, “প্রশাসনের কোনও ব্যক্তি যদি ঘুষ চান, তবে রফা করে তাঁকে তা দিন। এবং আমাদের তা জানান। আমরা অভিযুক্তকে হাতেনাতে ধরে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।” কী ভাবে সাধারণ মানুষ যোগাযোগ করবেন তাঁর সঙ্গে? মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, কয়েক দিনের মধ্যেই যোগাযোগের টোল-ফ্রি নম্বর প্রকাশ করা হবে।
দিনের শুরুটা দেখে অন্তত অনেকেরই মনে হচ্ছে, ‘ইমানদারি’র কথা বলে ভোট-পরবর্তী ‘আম আদমি’র মন জয়ের প্রাথমিক কাজটা সেরে ফেলেছেন অরবিন্দ। বাকিটা বলবে ইতিহাস!
|
‘আম আদমি’র শপথনামা |
সকাল ৯টা ৪৫: অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বাড়িতে পৌঁছলেন মণীশ সিসৌদিয়া, কুমার বিশ্বাস, গিরিশ সোনি প্রমুখেরা। |
১০টা ২০: অরবিন্দকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠালেন অণ্ণা হজারে। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি যে থাকতে পারবেন না সে কথাও চিঠিতে জানিয়েছেন অণ্ণা। |
১০টা ৩৫: শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে কেজরিওয়াল বললেন, ‘‘এই জয় সাধারণ মানুষের। আজ ঐতিহাসিক দিন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই জারি থাকবে। এই তো সবে শুরু।’’ |
১০টা ৫০: কৌশাম্বী স্টেশন থেকে মেট্রো ধরলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। রামলীলা ময়দানে যাওয়ার জন্য তিনি বারাখাম্বা স্টেশনে নামবেন। |
১১টা ২৫: আপ-এর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বারাখাম্বা স্টেশনে নামলেন কেজরিওয়াল। |
১১টা ৩৬: অন্য নেতাদের সঙ্গে ভিড়ে ঠাসা রামলীলা ময়দানে পৌঁছলেন অরবিন্দ। |
১১টা ৫৭: শপথ নিতে দিল্লির লেফ্টেন্যান্ট গভর্নর নাজিব জং-এর সঙ্গে মঞ্চে উঠলেন ছয় বিধায়ক-সহ অরবিন্দ। |
বেলা ১২টা: মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথবাক্য পাঠ। জনতা তখন তাঁর জয়ধ্বনি দিচ্ছে। |
১২টা ০২: দিল্লি মন্ত্রিসভার সদস্য হিসাবে শপথ নিলেন মণীশ সিসৌদিয়া। একে একে শপথ বাক্য পাঠ করেন সোমনাথ ভারতী, রাখী বিড়লা, গিরীশ সোনি, সৌরভ ভরদ্বাজ এবং সত্যেন্দ্র জৈন। |
১২টা ১৫: দিল্লির সপ্তম মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে রামলীলা ময়দানে প্রথম ভাষণ দিলেন কেজরিওয়াল। |
১২টা ৪৫: রামলীলা ময়দান থেকে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে রাজঘাটে পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে মহাত্মা গাঁধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন অরবিন্দ। |
|
|
নতুন মুখের সারি |
অরবিন্দ কেজরিওয়াল
হরিয়ানার হিসারে জন্ম। খড়্গপুর আইআইটি-র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার অরবিন্দ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দিয়ে আয়কর দফতরে যোগ দেন। কিন্তু বছর ছ’য়েকের মধ্যেই ছেড়ে দিলেন চাকরি। জড়িয়ে পড়লেন তথ্যের অধিকার আন্দোলনে। এই আন্দোলনই তাঁকে ম্যাগসাইসাই পুরস্কার এনে দেয়। এর পরে অণ্ণা হজারের সঙ্গে লোকপাল বিল আন্দোলন। অণ্ণার সঙ্গে মতবিরোধের কারণে তৈরি করেন রাজনৈতিক দল ‘আম আদমি পার্টি’। সৃষ্টি হল ইতিহাস। প্রথম বারেই ভোটের ময়দানে নেমে দিল্লির তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতকে হারালেন তো বটেই, তাঁর দল দখল করল ২৮টি আসন। নয়াদিল্লির বিধায়ক এ বার দিল্লির মসনদে।
|
মণীশ সিসৌদিয়া
পড়াশোনা ও পেশা ছিল সাংবাদিকতা। দীর্ঘ দিন একটি সর্বভারতীয় সংবাদ চ্যানেল এবং আকাশবাণীতে কাজ করেছেন। কিন্তু তথ্যের অধিকার আন্দোলনে যুক্ত হবেন বলে ছাড়লেন সাংবাদিকের চাকরি। এর পর জনলোকপাল বিল আন্দোলনেও দেখা গেল তাঁকে। সেখানেও আন্দোলনকারীদের অন্যতম প্রধান মুখ ৪১ বছরের মণীশ সিসৌদিয়া। এ বারে পটপরগঞ্জ কেন্দ্র থেকে জিতেছেন তিনি। নতুন মন্ত্রিসভায় দেখা যাবে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে। পাশাপাশি, পূর্ত এবং গ্রামোন্নয়ন দফতরের দায়িত্বও তাঁর কাঁধে।
|
রাখী বিড়লা
জনসংযোগে স্নাতকোত্তর রাখী দিল্লির রাজনৈতিক ইতিহাসে কনিষ্ঠতম মন্ত্রী। পেশায় মণীশের মতো তিনিও ছিলেন সাংবাদিক। দলিতদের উন্নয়নে ঝাঁপিয়ে পড়া ২৬ বছরের রাখী মনে করেন, আম আদমি পার্টি কোনও রাজনৈতিক দল নয়। এটি একটি বিপ্লবের নাম। দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে তার অংশীদার হয়ে তাকে বদলানো উচিত বলে মনে করেন তিনি। আর সে জন্যই এই বিপ্লবে সামিল হওয়া। দিল্লি বিধানসভার মঙ্গলপুরী কেন্দ্র থেকে প্রাক্তন পূর্তমন্ত্রীকে হারিয়েছেন তিনি। নবনির্বাচিত মন্ত্রিসভায় রাখীর হাতে নারী ও শিশুকল্যাণ বিভাগ।
|
সোমনাথ ভারতী
ছিলেন আইনজীবী, এ বার হলেন আইনসভার সদস্য। আইআইটি থেকে গণিতে স্নাতকোত্তর, আবার পড়াশোনা আইন নিয়ে। দিল্লির নির্ভয়া-কাণ্ডে প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে পুলিশের করা মামলায় বাদীপক্ষের হয়ে আদালতে লড়েছিলেন সোমনাথ। সেই আইনি লড়াই জিতেওছিলেন। ৩৯ বছরের সোমনাথ মনে করেন, ক্ষমতায় এসে সমস্ত দুর্নীতি ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে পারবে ‘আপ’। ‘আম আদমি’কে আশ্বস্ত করে বলছেন, দু’মাসের মধ্যে আভাস মিলবে দিল্লির সেই পরিবর্তিত চেহারার। মালভিয়া নগর থেকে জেতা এই বিধায়ককে দেওয়া হয়েছে আইন ও পর্যটন দফতরের দায়িত্ব।
|
সৌরভ ভরদ্বাজ
কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বি টেক। পড়েছেন আইন নিয়েও। পেশায় ছিলেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। দরিদ্র পরিবারের নাবালিকাকে ধর্ষণের একটি ঘটনা ৩৩ বছরের সৌরভের জীবনভঙ্গি পালটে দেয়। নির্যাতিতার হয়ে আইনি লড়াই শুরু করেন। এই ধরনের নির্যাতিতাদের আইনি পরামর্শের পাশাপাশি সমাজের নিপীড়িত মানষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে নিজের পেশাই বদলে গেল তাঁর। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার থেকে হলেন আইনজীবী। আম আদমি পার্টি-র হয়ে গ্রেটার কৈলাস কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়েছিলেন সৌরভ। কেজরিওয়ালের মন্ত্রিসভায় পরিবহণ এবং খাদ্য বণ্টন দফতরের দায়িত্ব তাঁর।
|
সত্যেন্দ্রকুমার জৈন
পড়াশোনা করেছেন স্থাপত্যবিদ্যা নিয়ে। কাজও করতেন কেন্দ্রীয় পূর্ত দফতরে। কিন্তু দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জেদ হারিয়ে দিল সব কিছুকে। সব ছেড়ে দিয়ে জড়িয়ে পড়লেন জনলোকপাল বিল আন্দোলনে। দৃষ্টিহীন মেয়েদের জন্য তো বটেই মানসিক ভারসাম্যহীন শিশুদের জন্য কাজ করে এমন দু’টি সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত হলেন। দরিদ্রদের পাশে দাঁড়াতে বেশ কয়েক বার গণবিবাহের আয়োজন করা ৪৯ বছরের সতেন্দ্র এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে শাকুর বস্তি থেকে জয়ী। অরবিন্দের নতুন মন্ত্রিসভায় তিনি হচ্ছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
|
গিরিশ সোনি
পড়াশোনা দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত। চামড়ার জিনিসপত্র তৈরি করে তার বিপণনই ছিল গিরিশের পেশা। ‘আম আদমি পার্টি’র জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ সংক্রান্ত আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা নজর কাড়ে গোটা দেশের। ৪৯ বছরের গিরিশ এ বারের নির্বাচনে মাদিপুর কেন্দ্র থেকে জয়ী। নতুন মন্ত্রিসভায় তফসিলি উন্নয়নের পাশাপাশি পেয়েছেন শ্রম দফতরের দায়িত্ব। |
|
|
হাসপাতালে সুচিত্রা সেন
নিজস্ব সংবাদদাতা |
সুচিত্রা সেন অসুস্থ। নিউমোনিয়া-জনিত সংক্রমণের সঙ্গেই শ্বাসকষ্ট নিয়ে তিনি গত কয়েক দিন ধরে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সংক্রমণের জন্য তাঁকে কড়া ওষুধ দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে চলছে অক্সিজেনও। তবে, তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। এর আগেও অসুস্থতার জন্য তাঁকে কয়েক বার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। |
অন্ধ্রপ্রদেশে চলন্ত ট্রেনে আগুন, মৃত ২৬ |
সংবাদ সংস্থা |
ভোর তখন সাড়ে ৩টে। তখনও আলো ফোটেনি। নিশ্চিন্ত ঘুমে ছিলেন চলন্ত ট্রেনের যাত্রীরা। ঠিক সেই সময়েই ঘটল বিপত্তি। পেন্নুকোন্ডা ও ধর্মাভরম স্টেশনের মাঝে বেঙ্গালুরু-নান্দের এক্সপ্রেসের একটি এসি কামরায় আগুন লাগল। চলন্ত ট্রেনের হাওয়ায় সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ল পাশের আরও দু’টি কামরায়। জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল অন্তত ২৬ জন যাত্রীর। প্রাণ বাঁচাতে চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিলেন অনেকে। আহত হলেন বেশ কয়েকজন। ঘটনাটি ঘটল অন্ধ্রপ্রদেশের অনন্তপুর জেলায় পুত্তাপুর্তির কাছে। তবে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। |
|
|
চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: এএফপি। |
|
রেল সূত্রে খবর, বেঙ্গালুরু থেকে শুক্রবার রাত পৌনে দশটা নাগাদ মহারাষ্ট্রের নান্দেরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ট্রেনটি। ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ বেঙ্গালুরু-নান্দের এক্সপ্রেসের এসি (বি-১) কামরাটিতে আগুন লাগে। সেই সময় কামরাটিতে ৬৫ জন যাত্রী ছিলেন। আগুন লাগার বেশ কিছুক্ষণ পরে ধোঁয়া দেখে চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন রেলের গার্ড। তবে ট্রেন থামার আগেই প্রাণ বাঁচাতে ঝাঁপ দিতে থাকেন যাত্রীরা। ইতিমধ্যেই আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় ২৬ জন যাত্রীর। মৃতদের মধ্যে দু’টি শিশুও ছিল। যদিও বেলার দিকে অগ্নিদগ্ধ কামরাগুলিকে সরিয়ে রেখে বাকি ট্রেনটিকে গন্তব্যস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ দিন ভোরে ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ছুটে আসেন আশেপাশে গ্রামের লোকজন। রিলিফ ট্রেন নিয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছান রেলের আধিকারিকেরা। শুরু হয় উদ্ধারকাজ। আহত আট জন যাত্রীকে দ্রুত চিকিত্সার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিত্সার পরে ছেড়ে দেওয়া হয় তিনজনকে। বাকি পাঁচজন যাত্রীকে গুরুতর জখম অবস্থায় ভর্তি করা হয় অনন্তপুর হাসপাতালে। |
|
শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে রেল কর্তৃপক্ষ। রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান অরুণেন্দ্র কুমার জানিয়েছেন জমা করে রাখা দাহ্য পদার্থ থেকেও আগুন লাগার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, দুর্ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখতে হায়দরাবাদ ও বেঙ্গালুরু থেকে ফরেন্সিক দলকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। তবে আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন রেলমন্ত্রী মল্লিকার্জুন খার্গে। যাত্রীদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ।
ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা, গুরতর জখমদের
এক লক্ষ টাকা ও তুলনামূলকভাবে কম আহতদের ৫০ হাজার টাকা এককালীন সাহায্য ঘোষণা করেছেন রেলমন্ত্রী।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের যাত্রীদের সম্বন্ধে জানার জন্য হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে দক্ষিণ-পশ্চিম রেলের শাখা। |
• বেঙ্গালুরুর হেল্পলাইন নম্বর ০৮০ ২২৩৫৪১০৮ , ০৮০ ২২২৫৯২৭১, ০৮০ ২২১৫৬৫৫১, ০৮০ ২২১৫৬৫৫৪
• এসএসপি নিলায়াম স্টেশনের হেল্পলাইন নম্বর
০৮৫ ৫৫২ ৮০১২৫, ০৯৭ ৩১৬৬৬৮৬৩
|
চলে গেলেন ফারুক শেখ
সংবাদ সংস্থা |
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন বিশিষ্ট অভিনেতা ফারুক শেখ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। একটি অনুষ্ঠান উপলক্ষে গত কয়েক দিন ধরে দুবাইতে ছিলেন তিনি। শুক্রবার রাতে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। শনিবারই তাঁর মরদেহ মুম্বইতে নিয়ে আসা হবে।
১৯৪৮ সালের ২৫ মার্চ গুজরাতে জন্ম ফারুক শেখের। আইনের স্নাতক ফারুক অভিনয় জীবনের প্রথমদিকে ইন্ডিয়ান পিপলস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশনের (আইপিটিএ) সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। শাবানা আজমির সঙ্গে তাঁর বিখ্যাত নাটক ‘তুমহারি অমৃতা’ মুক্তি পায় ১৯৯২ সালে। সিনেমা ও নাটকের এই দাপুটে অভিনেতা ১৯৭৩ সালে ‘গরম হাওয়া’ ছবি দিয়ে বলিউডে কেরিয়ার শুরু করেন। আশির দশকে বাণিজ্যিক সিনেমার পাশাপাশি সমান্তরাল সিনেমায় তাঁর অভিনয়ও যথেষ্ট প্রশংসা পায়। তাঁর অভিনীত সিনেমাগুলির মধ্যে সত্যজিত্ রায় পরিচালিত ‘শতরঞ্জ কে খিলাড়ি’, ‘চসমে বদ্দুর’, ‘কিসি সে না কহনা’, ‘নুরি’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। তাঁর অভিনীত শেষ ছবি ‘ক্লাব ৬০’ এ মাসেরই ৬ তারিখ মুক্তি পেয়েছে। দীপ্তি নাভালের সঙ্গে জুটি বেঁধে বহু বাণিজ্য সফল সিনেমা করেছেন তিনি। এর মধ্যে ‘চসমে বদ্দুর’, ‘কথা’, ‘লিসন আমায়া’ উল্লেখযোগ্য। তাঁর সঞ্চালনায় টেলিভিশন শো ‘জিনা ইসি কা নাম হ্যায়’ অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছিল।
ফারুক শেখের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা বলিউড। টুইটারে অমিতাভ বচ্চন লিখেছেন, ‘‘আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না ফারুক শেখ মারা গেছেন। এক জন আদর্শ ভদ্রলোক ও এক আসাধারণ সহকর্মীকে হারালাম।’’ পরিচালক শেখর কপূর বলেন, ‘‘শেষ বার তাঁর সঙ্গে দেখা হওয়ার সময়ে রাজনীতি নিয়ে কথা হয়েছিল। ফিল্ম নিয়ে কথা বললে বোধহয় ভাল হত। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।’’ তাঁর অভিনীত শেষ সিনেমা ‘ক্লাব ৬০’-এর অভিনেত্রী সারিকা বলেন, ‘‘মাত্র দশ দিন আগেই শেষ বার যখন তাঁর সঙ্গে দেখা হয় তখনও একেবারেই সুস্থ ছিলেন তিনি। অসাধারণ এক জন অভিনেতা এবং তার থেকেও বড় মনের এক মানুষকে হারালাম।’’
|
|
জলপাইগুড়ি বিস্ফোরণকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ছয়
নিজস্ব সংবাদদাতা |
জলপাইগুড়ির পাহাড়পুরে বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ছয়। শনিবার সকালে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে আরও এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। মৃতের নাম মহম্মদ রফিকুল ইসলাম। বিস্ফোরণের পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল ওই হাসপাতালে। এ দিকে, গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মালদহ থেকে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, মালদহের কেএলও নেতা মালখান সিংহ এই ঘটনার অন্যতম পাণ্ডা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ বজরাপাড়া সেতুতে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল পাঁচ জনের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছিল সূর্য রায় ও মহম্মদ রফিকুল নামে আরও দু’জনকে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রফিকুলের মাথা থেকে টিনের চাকতির মতো একটি জিনিস অস্ত্রোপচার করে বার করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে তাঁর ডান চোখও সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিস্ফোরণের পর এ দিন গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়ে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
|
বাংলাদেশে বিরোধী কর্মসূচি বানচাল করতে সরকারের ‘অঘোষিত অবরোধ’, অভিযোগ
সংবাদ সংস্থা |
বিরোধী জোটের ‘ঢাকা চলো’ কর্মসুচির আগেই দেশজুড়ে সরকারের তরফ থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে ‘অঘোষিত অবরোধ’। অন্তত বিরোধীদের অভিযোগ এমনই। শনিবার সকালেও ঢাকা শহরের পরিস্থিতি থমথমে। বাস-ট্রেনের অভাবে বিপাকে পড়েছেন বহু যাত্রী। ফেরিঘাটেও লঞ্চের সংখ্যা কম। শুক্রবার রাতে উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকা অভিমুখী বাস ও ট্রেনে তল্লাশি চালিয়ে শতাধিক যাত্রীকে আটক করা হয়েছে। জামাতে ইসলামির সদস্য সন্দেহেই তাঁদের আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ দিন খুব ভোরে ঢাকা সদরঘাট টার্মিনালে আসা সাতটি লঞ্চে তল্লাশি চালিয়ে অন্তত ১০ জনকে আটক করা হয়েছে।
বিএনপি নেতা মাহবুবুর রহমানের অভিযোগ, বিরোধী ১৮ দলের এই কর্মসূচি বানচাল করতেই বাস, লঞ্চ, ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে সরকারই এই অবরোধের পথে গিয়েছে। |
|
|
অভিযান চলছে বাংলাদেশে। ছবি: এএফপি। |
|
বাস মালিকেরা জানিয়েছেন, প্রশাসনের নির্দেশে শুক্রবার থেকেই ঢাকাগামী বাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, নির্বাচনের আগে জঙ্গি নাশকতার আশঙ্কায় নিরাপত্তার স্বার্থে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ট্রেন চলাচলও নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। ঢাকা পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার বিরোধীদের কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার সকাল থেকেই ঢাকামুখী পরিবহণ বন্ধ রাখা হয়েছে। বাস ও ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে শ্রীহট্টেও। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ও শুক্রবার সকালে ঢাকাগামী বাস ও লঞ্চের যাত্রীদের তল্লাশি করা হয় বলেও জানিয়েছে পুলিশ। ‘ঢাকা চলো’ অভিযান সফল করতে শুক্রবারই দেশবাসীদের আহ্বান জানিয়েছিলেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। অন্য দিকে, নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় রবিবারের কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশজুড়ে মোতায়েন করা হয় সেনাও।
|
গ্রামীণ সড়ক নির্মাণে নয়া উদ্যোগ রাজ্যের
নিজস্ব প্রতিবেদন |
রাজ্যের প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে নতুন রাস্তা তৈরির প্রকল্প ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। শনিবার ফেসবুকে এ কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, আগামী ৭ জানুয়ারি একই সঙ্গে একই সময়ে রাজ্যের ৩৩৪৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতে এক কিলোমিটার করে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হবে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য, কৃষি ক্ষেত্রগুলির সঙ্গে আরও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। নতুন এই রাস্তাগুলি কোনও আবহাওয়াতেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এই প্রকল্পের কাজ শুরুর দিন পশ্চিম মেদিনীপুরের আমলাশোলে মুখ্যমন্ত্রী নিজে উপস্থিত থাকতে পারেন।
একই সঙ্গে রাজ্য জুড়ে আরও ১৬ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা উন্নয়নের কাজও শুরু হবে। গ্রামোন্নয়নের এমন উদ্যোগ সারা দেশে এই প্রথম বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, জাতীয় সড়কের সঙ্গে সংযোগকারী রাজ্য সড়কগুলির উন্নয়নের কাজও শুরু হবে। এক হাজার কিলোমিটারের এই কাজ করবে ওয়েস্ট বেঙ্গল হাইওয়ে ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন। ইতিমধ্যে ডানকুনি থেকে চন্দননগর পর্যন্ত রাস্তাটি চার লেনের করার কাজ শুরু করেছে কর্পোরেশন। এটি মগরা পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে।
|
হাওড়ায় জন্ডিসে আক্রান্ত শতাধিক
নিজস্ব সংবাদদাতা
|
জন্ডিস ধরা পড়ল হাওড়ায়। উত্তর হাওড়ার একটি ওয়ার্ডেই একশোর বেশি মানুষ জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে। শনিবার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ দল ওই এলাকায় গিয়ে আক্রান্ত রোগীদের পরীক্ষা করেন। পুরসভা সূত্রের খবর, গত কয়েক মাস ধরে উত্তর হাওড়ার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কৈবর্ত্য পাড়া লেন, গোপাল ঘোষ লেন, গজানন বস্তি, উত্তর ঘোষ লেন ও ঘোষপাড়া লেন এলাকার বাসিন্দাদের পর পর জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসতে শুরু করে। এই মুহূর্তে সেই সংখ্যা প্রায় ১৪২। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর বাণী সিংহ রায় বলেন, “জন্ডিসে আক্রন্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকায় বিষয়টি পুরসভাকে জানাই। স্বাস্থ্য দফতর ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীকেও জানাই।” শুক্রবার বিষয়টি জানার পরেই হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টচার্যের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানাই। তিনিই এর পর বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।”
|
টালিগঞ্জে বোমা ফেটে আহত তিন কিশোর
নিজস্ব সংবাদদাতা |
শনিবার বিকেলে ৫৩ নম্বর টালিগঞ্জ রোডের বস্তিতে দেশি বোমা ফেটে জখম হয় তিন কিশোর। তাদের মধ্যে এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার ডান হাতে বোমার স্প্লিন্টার ঢুকে গভীর ক্ষত হয়েছে। এসএসকেএম হাসপাতালে সে চিকিৎসাধীন। অন্য দু’জনকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ) মুরলীধর শর্মা এ দিন সন্ধ্যায় জানান, “বস্তির দু’টি বাড়ির মধ্যে এক ফালি জায়গায় পাঁচটি ক্রুড (দেশি) বোমা রাখা ছিল। তারই একটি কোনও ভাবে ফেটে যায়। ঘটনাস্থল থেকে চারটি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে।” কারা ওই জায়গায় বোমাগুলি রেখেছিল, তা এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি টালিগঞ্জ থানার পুলিশ। তবে, পুলিশের অনুমান, স্থানীয় দুষ্কৃতীরাই বোমাগুলি রেখেছিল।
পুলিশ জানায়, ঠান্ডায় কষ্ট পাওয়া সদ্যোজাত কয়েকটি কুকুরছানার গায়ে চটের বস্তা জড়াতে গিয়ে বিকট শব্দ কেঁপে ওঠে বস্তির একাংশ। বিস্ফোরণের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে যায় তিন কিশোর। ধোঁয়া সরতে দেখা গেল রক্তাক্ত অবস্থায় তারা পড়ে রয়েছে।
বিস্ফোরণের খবর জানতে পারে এ দিন বিকেলেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন কলকাতা পুরসভার ৮৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মালা রায়। ওই বস্তি তাঁর ওয়ার্ডে। মালাদেবী বলেন, “এত দিন এই জায়গায় কোনও গোলমাল ছিল না। প্রশাসনকে বলেছি দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।”
|
পার্কের সৌন্দর্যায়নে নজির কলকাতা পুরসভার
নিজস্ব সংবাদদাতা |
ফুটপাথের কিছু দোকানদারের আপত্তিতে আটকে ছিল হাজরা মোড়ে যতীন দাস পার্কে শৌচাগার বানানোর কাজ। ওই প্রকল্পেই তাঁদের পুনর্বাসন দিয়ে পার্কটির সৌন্দর্যায়নে নজির গড়ল কলকাতা পুরসভা। পার্ক লাগোয়া জায়গায় দোতলা ভবন গড়ে তুলেছে পুরসভা। যার একতলায় শৌচাগার ও দোতলায় কাফেটেরিয়া। শনিবার নবনির্মিত ওই শৌচাগারের উদ্বোধন করেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ছিলেন দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ সুব্রত বক্সী, পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার ও স্বপন সমাদ্দার। পুরসভা সূত্রের খবর, জনবহুল হাজরা মোড়ে তিনটি কলেজ ও মেট্রো স্টেশন আছে। ফলে অনেকে পার্কে যত্রতত্র প্রাকৃতিক কাজ সারায় এলাকা নোংরা, দুর্গন্ধময় হয়ে উঠছিল। তাই স্থানীয়েরা দীর্ঘ দিন ধরেই সেখানে শৌচাগার গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছিলেন। পুরসভা সূত্রের খবর, পার্কের সামনে কিছু টাইপিস্ট দোকান খোলায় আটকে যায় কাজ।
|
সিটু নেতা কালী ঘোষ প্রয়াত
নিজস্ব সংবাদদাতা |
প্রবীণ সিটু নেতা কালী ঘোষ প্রয়াত হয়েছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। ২০০৩ সাল থেকে ১০ বছর তিনি রাজ্যে সিটুর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। কলকাতার হাইড রোডের বাসিন্দা কালীবাবু হাইড রোড-বেহালা এলাকার বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেই সঙ্গে তিনি চটকল ও নির্মাণ শিল্পের শ্রমিকদের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। আন্দোলন করতে গিয়ে কালীবাবু দীর্ঘ সময় জেলও খেটেছেন। সিটুর কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর এই প্রাক্তন সদস্য শ্রম-আইন সম্পর্কে একাধিক বই লিখেছিলেন।
|
হাওড়ায় মেয়রের গাঁধীগিরিতে ফল মিলল
নিজস্ব সংবাদদাতা
|
জলসঙ্কটে জেরবার হাওড়া পুর-এলাকার হাল ফেরাতে ‘গাঁধীগিরি’র পথে হেঁটেছিলেন মেয়র রথীন চক্রবর্তী। কাজ হল তাতেই। দীর্ঘ দিন ধরে জল-প্রকল্পের যে দু’টি পাম্প খারাপ ছিল, রাতারাতি তা সারানো শুরু হল।
বেশ কিছু দিন ধরেই বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরেরা মেয়রের কাছে জলসঙ্কট নিয়ে অভিযোগ জানাচ্ছিলেন। এর প্রেক্ষিতেই ২৭ ডিসেম্বর আচমকা পদ্মপুকুর জল-প্রকল্প পরিদর্শনে যান মেয়র। প্রকল্পের সর্বত্রই অব্যবস্থা দেখে ক্ষুব্ধ হন তিনি। জানতে পারেন, প্রকল্পের তিনটি পাম্পের মধ্যে দু’টি দীর্ঘ দিন ধরেই অচল হয়ে রয়েছে। এর পরে ক্ষুব্ধ মেয়র সাফ জানান, সমস্যা না মেটা পর্যন্ত তিনি সেখানেই বসে থাকবেন। এর পরেই ইঞ্জিনিয়ারেরা লিখিত প্রতিশ্রুতি দেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পাম্প সারানো হবে। এ দিন রথীনবাবু বলেন, “আশা করি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দু’টি পাম্পই চালু হয়ে যাবে। তাতে জলের সমস্যা অনেকটাই মিটবে।” |
বৃষ্টিতে বন্ধ তৃতীয় দিনের খেলা, ৩৫ রানে পিছিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা
সংবাদ সংস্থা |
বৃষ্টির জন্য ডারবান টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিলেন আম্পায়াররা। এ দিন স্থানীয় সময় ৪টে নাগাদ বৃষ্টির কারণে ম্যাচ স্থগিত হয়ে যায়। পরে দুই আম্পায়ার মাঠ পরীক্ষা করে খেলা বন্ধ করেন। ক্রিজে ৭৮ এবং ০ রানে অপরাজিত রয়েছেন জাক কালিস এবং ‘নাইট ওয়াচম্যান’ হিসাবে নামা ডেল স্টেইন। ভারতের প্রথম ইনিংসে করা ৩৩৪ রানের থেকে মাত্র ৩৫ রান দূরে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
শুক্রবার স্টেইনের গোলার সামনে তছনছ হয়ে গিয়েছিল ভারতীয় দুর্গ। মাত্র ১৪ রানে শেষ পাঁচ উইকেট হারিয়ে ম্যাচের রাশ দক্ষিণ আফ্রিকার হাতে তুলে দিয়েছিল তারা। আর এ দিন ডে’ভিলিয়ার্স-কালিসের ব্যাটের ‘আঘাতে’ বিধ্বস্ত হল ভারতীয় বোলিং।
৩৩০ রানে ভারতের ইনিংস শেষ করে দ্বিতীয় দিনের শেষে কোনও উইকেট না হারিয়ে ৮২ রান তুলে ফেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। শনিবার তৃতীয় দিনের শুরুতেই পর পর তিনটি উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় তারা। ৪৭ রানে গ্রেম স্মিথকে আউট করে প্রোটিয়া শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন রবীন্দ্র জাডেজা। বেশি ক্ষণ টেকেননি আমলাও। ৩ রান করে শামির বলে বোল্ড হন তিনি। দলের অপর ওপেনার অ্যালভিরো পিটারসেনকেও আউট করেন জাডেজা। ব্যক্তিগত ৬২ রানে বিজয়ের হাতে ক্যাচ গিয়ে ফেরেন তিনি। |
|
আউট স্মিথ। উল্লসিত ভারতীয় শিবির। ছবি: এএফপি। |
এর পরই দলের হাল ধরেন ডে’ভিলিয়ার্স ও শেষ টেস্ট খেলতে নামা জাক কালিস। ইতিবাচক ব্যাটিং করে জুটিতে ৪০ ওভারে ১২৭ রান যোগ করেন তাঁরা। জাহির, ইশান্ত, শামি— কাউকেই রেয়াত করেনি এই জুটি। ব্যক্তিগত ৭৪ রানে জাডেজার ফ্লাইটে ঠকে গিয়ে আউট হন তিনি। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে একমাত্র জাডেজাই কিছুটা সমীহ আদায় করে নিয়েছেন। অশ্বিনের অভাব বেশ ভাল করেই টের পাচ্ছে ভারতীয় শিবির। ১০৫ ওভারের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ২৯৯/৫। কালিস ৭৬ ও স্টেইন ০ রানে অপরাজিত আছেন। বেশি ক্ষণ টেকেননি ডুমিনিও। ব্যক্তিগত ২৮ রানে জাডেজার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে প্যাভিলিয়নের রাস্তা ধরেন তিনি। এর কিছু ক্ষণ পরেই বৃষ্টির জন্য ম্যাচ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন আম্পায়ার রড টাকার এবং স্টিভ ডেভিস। আবহাওয়া ঠিক থাকলে আগামী কাল সকাল সাড়ে ন’ টায় ম্যাচ শুরু করতে পারেন তাঁরা।
|
|
ওডাফার হ্যাটট্রিক-সহ কালীঘাটকে পাঁচ গোল বাগানের
নিজস্ব সংবাদদাতা |
মরসুমের প্রথম হ্যাটট্রিক করলেন মোহন অধিনায়ক ওকোলি ওডাফা। আর ৫-০ গোলে কালীঘাট এমএসকে হারিয়ে শনিবার এ বছরের সবচেয়ে বড় জয় পেল মোহনবাগান। ম্যাচের শুরুতেই অসংখ্য সুযোগ পেয়েছিলেন ওকোলি ওডাফা-রাম মালিকরা। গোলের সুযোগগুলো নষ্ট না করলে এ দিন খেলার ফল ৮-০ হতেই পারত। বিরতির আগে রামের গোলে ১-০ এগিয়ে গিয়েছিল বাগান। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধ্বে জ্বলে ওঠেন ওডাফা। নিজে গোল করেন। গোলের সুযোগ তৈরি করে দেন। মাঝে কর্ণার কিক থেকে সরাসরি গোল করেন রবিন্দর। |
|