একেই বলে জন্মদিনের উপহার!
প্রতিমন্ত্রী থেকে স্বাধীন দায়িত্ব। আগের দফতর তো রইলই, সঙ্গে ফাউ গোটা একটা নতুন দফতর।
বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে খালবিল উৎসব শেষ করেই বুধবার রাতে তড়িঘড়ি কলকাতা চলে গিয়েছিলেন স্বপন দেবনাথ। প্রোমোশান যে বাঁধা, সেই খবর ছিলই। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে কুয়াশা যত কেটেছে, টিভির সামনে উৎকণ্ঠায় প্রহর গুনেছেন কালনা-পূর্বস্থলীর তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। পূর্বস্থলীর বিদ্যানগরের বাড়িতে ‘দাদা’ নেই তো কী, মিষ্টির হাঁড়ি-ফুল-সবুজ আবির নিয়ে দোরের সামনে ভিড় জমিয়েছেন অনেকে। দলাদলির বাইরেও যাঁর তুমুল জনপ্রিয়তা, তাঁর সাফল্যে সকাল থেকে হাসি-মুখ পাড়াপড়শিরাও।
রাজভবনের কাছে স্বপনবাবুর ফ্ল্যাটেও সকাল থেকেই জন্মদিনের ফুরফুরে মেজাজ। মন্ত্রীর মা আর স্ত্রী আগে থেকে সেখানেই ছিলেন। ৬৪ ছোঁওয়া বড়ছেলের জন্মদিনে নলেন গুড়ের পায়েসটা নিজের হাতেই বানান আশি-ছুঁইছুঁই লাবণ্যপ্রভা। ভোরেই রাধামাধবের পুজো দিয়ে প্রসাদী ফুল ছোঁয়ালেন ছেলের মাথায়।
সদ্য বড়দিন গেল, তাই বিলিতি কায়দায় মোমবাতি জ্বালিয়ে কেক কাটার পর্বও বাদ পড়েনি। প্রাতরাশে মন্ত্রীর পাতে পাটিসাপটা-সরুচাকলি। দুপুরে রুইমাছ, মুরগির ঝোল। স্বপন-জায়া নীলিমার অবশ্য মন খুঁতখুঁত, “সুগারের জন্য বিশেষ কিছুই খায়নি। সরু চাকলিটাই যা একটু খেল।” শপথ নেওয়ার পরে মঞ্চ থেকে নেমে স্বপন সোজা গিয়ে প্রণাম করেন মাকেই। মা বলেন, “মানুষের কথা ভাবিস।”
|
গ্রামীণ বর্ধমানের মা-মাটি-মানুষ তখন উল্টে স্বপনের কথা ভেবে-ভেবে সারা। চায়ের দোকান থেকে সব্জি বাজার, সর্বত্র একই আলোচনা। স্বপনও তাঁদের ভোলেননি। সন্ধে সওয়া ৭টা নাগাদ কালনায় পৌঁছয় তাঁর গাড়ি। বন্ধু-সাথিদের উচ্ছ্বাসের জবাবে বলেন, “নতুন কোন দফতর পেলাম, সেটা বড় কথা নয়। তবে প্রাণিসম্পদ নিয়ে কাজ করে বাংলার অর্থনীতিকে আরও চাঙ্গা করা সম্ভব। চেষ্টা করব।”
রাত ৮টা নাগাদ পূর্বস্থলীর খাল-বিল উৎসবে যখন তাঁর গাড়ি পৌঁছয়, সেখানে কয়েক হাজার মানুষ। পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির তরফে দেওয়া হয় কাঁসার থালা। জন্মদিনের উপহার? সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিকের দাবি, “দাদা বেশির ভাগ দিন কার্যালয়ে রাত কাটান। কখনও প্লাস্টিকের থালা, কখনও কলাপাতায় ভাত খান। এ বার থেকে এই থালাতেই খাবেন।” |