তিন ছাত্রকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে পুলিশ ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের এক ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার করেছে। তাঁর নাম প্রহ্লাদ ব্রহ্মচারী। মঙ্গলবার মালদহের সাহাপুর থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। জেলা পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় জানান, চতুর্থ, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির তিন ছাত্র লিখিত ভাবে পুলিশের কাছে তাঁর বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রোটেকশন অফ চাইল্ড ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্স অ্যাক্ট-২০১২ ধারায় মামলা করা হয়েছে। এ দিন আদালতে তোলার আগে অভিযুক্ত সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি নিরাপরাধ।” |
আশ্রমের এক ব্রহ্মচারীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠার পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে দাবি করেছেন সেবাশ্রমের মালদহ শাখার অধ্যক্ষ শিবসুন্দরানন্দও। তিনি জানান, দশম শ্রেণির এক ছাত্র নিয়ম ভেঙে দু’দিন রাতে হস্টেলে ফেরেনি। প্রহ্লাদ ওই ছাত্রকে বকাঝকা করেছিলেন। তারপরেই ওই ছাত্র প্রহ্লাদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করে আশ্রম কর্তৃপক্ষের কাছে। আশ্রম কর্তৃপক্ষ সেই অভিযোগকে গুরুত্ব দেননি। শিবসুন্দরানন্দ বলেন, “ওই ছাত্রই তারপরে এলাকার কিছু মানুষের কাছে প্রহ্লাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে।” তাঁর বক্তব্য, “প্রহ্লাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনার পিছনে হাত রয়েছে স্থানীয় কিছু জমির দালালেরও।” তিনি জানান, মহানন্দা নদী লাগোয়া আশ্রমের সাড়ে পাঁচ বিঘা জমি দখল করার জন্য বছর খানেক ধরে কিছু জমির দালাল সক্রিয়। তাঁর দাবি, “আশ্রমের পক্ষ থেকে সেই জমি দখলে বাধা দেওয়া হয়েছে। তারপরে ওই দালালেরাই ওই ছাত্রকে ব্যবহার করে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। পুরোটাই ষড়যন্ত্র।”
সোমবার রাতে ওই আশ্রমের সামনে স্থানীয় কিছু মানুষ বিক্ষোভ দেখান। তখন পুলিশ গিয়ে প্রহ্লাদ ও চার ছাত্রকেই থানায় নিয়ে আসে। চার ছাত্রকেই সরকারি হোমে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, “দশম শ্রেণির ওই ছাত্র সাবালক। তার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিন নাবালক ছাত্রের অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয়েছে প্রহ্লাদকে।”
ওই তিন নাবালকের জবানবন্দি নথিভুক্ত করার আবেদনও আদালতে করা হয়েছে। ওই তিন ছাত্রের অভিযোগ, দু’মাস ধরে তাদের উপরে নির্যাতন করা হয়েছে।
আশ্রম সূত্রে জানা গিয়েছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর প্রহ্লাদকে মে মাসে ব্রহ্মচারী হিসাবে কাজ করার জন্য মালদহের আশ্রমে পাঠান ভারত সেবাশ্রম কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে তিনি আশ্রমে থেকে হস্টেলের দেখাশোনা করতেন। শিবসুন্দরানন্দের দাবি, প্রচণ্ড বাতের ব্যথায় কষ্ট পেতেন প্রহ্লাদ। সে কারণে তিনি অনেক সময় ছাত্রদের গা হাত পা টিপে দিতে বলতেন। তবে তাঁর স্বভাব ছিল নম্র ও ভদ্র। |