শক্তিপুরে শাসক দলের সঙ্গে তৃণমূলের বিরোধের জের ছড়াল বহরমপুরেও।
সোমবার সকালে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে ছাত্র পরিষদ এবং টিএমসিপি’র মধ্যে বোতল ছোড়া নিয়ে বচসার শুরু। যা ক্রমে হাতাহাতিতে গড়াল। কলেজে গণ্ডগোলের খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিলেন বহরমপুর পুরসভার সদ্য নির্বাচিত শাসক দলের দুই কাউন্সিলর। ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে তাঁদের নামে শ্লীলতাহানির অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। ওই দুই কাউন্সিলর প্রদীপ নন্দী ও কানাই রায় অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “কলেজে আমাদের ছাত্র সংগঠনের সমর্থকেরা আক্রান্ত শুনে গিয়েছিলাম। দাঁড়িয়ে ছিলাম কলেজের বাইরে। শ্লীলতাহানির প্রশ্ন এল কোথা থেকে!”জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীরও বলেন, “কলেজে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে ঠিকই তবে শ্লীলতাহানির অভিযোগের সত্যতা নিয়ে প্রাথমিক তদন্তে প্রশ্ন উঠেছে।” |
ওই ঘটনার জেরে সোমবার থেকে দু’দিনের জন্য বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে পঠন-পাঠন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, এ দিনই জিয়াগঞ্জের রানি ধন্যা কুমারী কলেজে সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু করেছে ছাত্র পরিষদ। আগামী ২০ জানুয়ারি মুর্শিদাবাদের কলেজগুলিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন। কৃষ্ণনাথ কলেজের অধ্যক্ষ সোমেশ রায় এবং রানি ধন্যা কুমারী কলেজের অধ্যক্ষ অজয় অধিকারী জানান, সামনে ভোট। তাই ছাত্র সংসদগুলির শক্তি প্রদর্শনের জেরে কলেজে অচলাবস্থা ও অশান্তি দেখা দিতে শুরু করেছে।
এ দিন বিকেলে ছাত্র পরিষদের অভিযোগ শুনে প্রদীপ নন্দী ও কানাই রায়ের কটাক্ষ, “আসলে বহরমপুর শহরে কংগ্রেসের পায়ের তলা থেকে মাটি সরতে থাকায় আমাদের নামে মিথ্যে অভিযোগ তুলে কালি ছেটানো হচ্ছে।” ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি সরফরাজ শেখের অবশ্য দাবি, “ওই কলেজের ছাত্র সংসদ ছাত্র পরিষদের দখলে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অস্তিত্বই নেই। এর আগে বহিরাগতদের নিয়ে কলেজের ছাত্রীদের উপরে হামলা চালানো হয়েছে। মারধর থেকে শ্লীলতাহানি কিছুই বাদ যায়নি। এ দিন দুই কাউন্সিলর ও তাঁদের সঙ্গীরাও একই কাণ্ড ঘটালেন।”
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি রাজা ঘোষ পাল্টা বলেন, “কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সংগঠন দ্রুত বাড়ছে। ভয় পেয়ে তাই বহিরাগতদের নিয়ে ছাত্র পরিষদের গুণ্ডারা আমাদের ছেলেদের মারধর করেছে। খবর পেয়েই ছুটে এসেছিলেন ওই দুই কাউন্সিলর। তাঁদের নামে ওই নোংরা অভিযোগ করতেও বাধেনি ছাত্র পরিষদের। কলেজের অধ্যক্ষও নিরপেক্ষ নন।” অধ্যক্ষ সোমেশ রায় যা শুনে বলছেন, “তাই যদি মনে করে তাহলে আমাকে অধ্যক্ষের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক।” |