|
|
|
|
নাবালিকার বিয়ে রুখে অর্থ সাহায্য
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
নাবালিকা মেয়েটির বিয়ে আগেই রুখে দিয়েছিল প্রশাসন। এ বার তাকে বিবেক চেতনা উৎসবে পুরস্কৃত করা হল। দেওয়া হল ১০ হাজার টাকা আর্থিক পুরস্কার। দশম শ্রেণির ছাত্রী ওই নাবালিকার ইচ্ছে, পড়াশোনা করে সে শিক্ষিকা হবে।
বছর পনেরোর ওই নাবালিকার বাড়ি খড়্গপুর-২ ব্লকের পলশা গ্রাম পঞ্চায়েতের জামভেটিয়া গ্রামে। গত সোমবার তার বিয়ে ঠিক হয়েছিল। পাত্র কেশপুরের পাম্প মিস্ত্রি মিলন মণ্ডল। ওই নাবালিকার বাবা ভাগচাষি। তবে শীতে পায়ে চর্মরোগের জেরে সেই কাজটুকুও করতে পারছেন না। মেয়েটির মা পরিচারিকার কাজ করে কোনওমতে সংসার চালাচ্ছেন। এই দম্পতি তাঁদের বড় মেয়ের বিয়েও দিয়েছিলেন মাত্র ১২ বছর বয়সে। অভাবের সংসারে ছোট মেয়ের বিয়েও তাঁরা ঠিক করেছিলেন অপরিণত বয়সে। তবে এ বার পুলিশ-প্রশাসন জানতে পেরে যাওয়ায় বিয়ে আটকে গিয়েছে। ওই নাবালিকার বক্তব্য, “বাড়িতে অভাব রয়েছে। বাবা-মার মুখের দিকে তাকিয়েই আমি বিয়েতে রাজি হয়েছিলাম।” কিন্তু আসলে সে লেখাপড়া করতে চায়। প্রশাসনকে সে কথা জানানোর পরেই সাহায্যের বন্দোবস্ত করা হয়।
শনিবার মাদপুরে ব্লক প্রশাসনিক কার্যালয়ে বিবেক চেতনা উৎসবের পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই ডাক পড়েছিল ওই নাবালিকার। বাবাকে নিয়ে এসেছিল সে। বিবেক চেতনা উৎসব কমিটির তরফে ৫ হাজার ও পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে ৫ হাজার, মোট ১০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয় ওই নাবালিকার হাতে। বিডিও সোমা দাস বলেন, “আমরা এই পুরস্কারটা শুধুমাত্র সাহস বাড়তে দিয়েছি। এরপরে ওর পড়াশুনোর খরচের ক্ষেত্রে যতটা সম্ভব করব। কন্যাশ্রী প্রকল্পের আবেদনপত্রও জমা দিতে বলেছি।” সোমাদেবীর কথায়, “পরিবারের অভাবটা বড় কথা নয়। সচেতন হওয়াটা জরুরি। নাবালিকা বিয়ে রুখতে আগামী দিনে আমরা সচেতনতা শিবির করব। আমরা চাই এই নাবালিকাটি যেন একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।”
তার জীবনের অভিজ্ঞতার কথা বন্ধু-পরিচিতদের জানিয়ে সচেতন করতে চায় ওই নাবালিকাও। ভুল বুঝেছেন মেয়েটির মা-ও। তাঁর বক্তব্য, “প্রশাসন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় ভরসা পেয়েছি। আমরা চাই মেয়ে উচ্চশিক্ষিত হোক।” |
|
|
|
|
|