চলন্ত বাস থামিয়ে তল্লাশির সময়ে দু’টি বস্তা ভর্তি রুপোর বাট ও প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করল বিএসএফ। শুক্রবার রাতে স্বরূপনগরের সীমান্তবর্তী তেঁতুলিয়া সেতুতে ওই ঘটনার পরে বিএসএফ বস্তা দু’টি শুল্ক দফতরের স্থানীয় অফিসে জমা দেয়। বাসে বস্তা দু’টি কী ভাবে এল, টাকা বা রূপোর বাটই বা কোথায়, কী মতলবে পাঠানো হচ্ছিল তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে বিএসএফ ও পুলিশ।
তেঁতুলিয়া শুল্ক দফতরের ইনস্পেক্টর মিলন হালদার বলেন, “দু’টি বস্তার একটিতে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা, অন্যটিতে প্রায় ৩২ কেজি রুপোর বাট মিলেছে। রুপোর বাজারদর প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা।” বিএসএফের অনুমান, যে পরিমাণ নগদ টাকা উদ্ধার হয়েছে, তা পাচারকারীদের।
বিএসএফ ও শুল্ক দফতর সূত্রে খবর, বস্তা দু’টি যে বেসরকারি বাস থেকে মেলে সেটি যাত্রী নিয়ে বারাসত থেকে স্বরূপনগরের বালতি গ্রামে যাচ্ছিল। গত বুধবার স্বরূপনগরের হাকিমপুর চেকপোস্টের কাছে ১৫২ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা সীমান্তবর্তী তারালি গ্রামের বাসিন্দা নুর ইসলাম সর্দারকে আটক করে তার কাছ থেকে প্রায় ২ কেজি ৮০০ গ্রাম সোনার বিস্কুট উদ্ধার করে। নুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে জেরা করে বিএসএফ জানতে পারে, কয়েক দিনের মধ্যে কলকাতা থেকে ক’লক্ষ টাকার রুপোর বাট এবং নগদ টাকা বাংলাদেশে পাচারের জন্য আনা হবে বালতি গ্রামে। এটা জেনেই বিএসএফ তেঁতুলিয়া সেতুতে তল্লাশি শুরু করে।
শুক্রবার রাতে বাস থামিয়ে তল্লাশির সময়ে বস্তা দু’টি ভিতরে পড়ে থাকতে দেখে জওয়ানদের সন্দেহ হয়। বস্তা দু’টির কোনও দাবিদার ছিল না। বস্তা দু’টি নামিয়ে খুলতেই তাতে রুপোর বাট এবং টাকা মেলে।
ওই দিন বিকেলে বনগাঁর সুটিয়া সীমান্ত থেকে প্রায় দেড় লক্ষ টাকার জাল নোট-সহ এক বাংলাদেশিকে ধরে বিএসএফ। পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত সবুজ মল্লিকের বাড়ি বাংলাদেশের ঝিকরগাছায়। সুটিয়া সীমান্ত দিয়ে এক জনের সঙ্গে সে অবৈধ ভাবে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছিল। বিএসএফ তাড়া করলে তার সঙ্গী বাংলাদেশে পালায়। বিএসএফের দাবি, ধৃতের ব্যাগে তিনটি বান্ডিলে ৫০০ টাকার নোটে প্রায় দেড় লক্ষ ভারতীয় টাকার জাল নোট মেলে। উদ্ধার হয় ভারতীয় ও বাংলাদেশি সিম কার্ড-সহ একটি মোবাইলও। শনিবার বনগাঁ আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ধৃতকে সাত দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
পুলিশের দাবি, জেরায় সবুজ তাদের জানিয়েছে, তাকে ওই টাকা ঝিকরগাছার এক জন দিয়েছিল বনগাঁর বাগান গ্রামের এক বাসিন্দার কাছে পৌঁছে দিতে। পুলিশ এবং বিএসএফের পাশাপাশি তাকে জেরা করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারাও। গোয়েন্দারা জানান, বর্তমানে মালদহ সীমান্তে ধরপাকড় বেশি হওয়ায় বনগাঁ সীমান্তই বেশি ব্যবহার করছে অনুপ্রবেশকারীরা। |