বিনোদন রেকর্ড ভেঙে প্রথম দিনেই ধুম ধামাকা
ড়ির কাঁটায় রাত একটা। বাইপাসের ধার দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন এক দল যুবক।
ওই দিনই, অর্থাৎ শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে ধুম-৩। প্রথম দিনই ছবিটা দেখতে চেয়েছিলেন ওঁরা। অনেক কষ্টে মাল্টিপ্লেক্সে রাত ৯.৫০-এর শো-এর টিকিট পান। সিনেমা দেখে অতএব হেঁটেই বাড়ি ফেরা।
কলকাতা একা নয়, দৃশ্যটা অনেক শহরেই এই রকম। ফল?
মুক্তির দিনে সবচেয়ে বেশি টাকার বাণিজ্য এখন ধুম-৩-এর পকেটে। আমির খান অভিনীত এই ছবি শুধু শুক্রবারেই ৩৩ কোটি ৪২ লক্ষ টাকার ব্যবসা করেছে। এটা হিন্দি সংস্করণের অঙ্ক। তামিল-তেলুগু ভার্সান মিলিয়ে ধরলে অঙ্কটা ৩৬ কোটি ২২ লক্ষ।
অর্থাৎ? এ বছরই ঈদের মরসুমে ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ প্রথম দিন ৩৩ কোটি ১২ লক্ষ টাকা তুলে রেকর্ড করেছিল। ভেঙে গেল। সাধারণ এক শুক্রবারে মুক্তি পেয়ে ২৫ কোটি টাকার রেকর্ড করেছিল কৃষ ৩। ভেঙে গেল। এক দিনে সর্বোচ্চ আয়ের রেকর্ডও ছিল কৃষ-৩-রই ৩৪ কোটি টাকা। ভেঙে গেল সেটাও।
সিনেমার সাফল্য এখন নির্ধারিত হয়ে যায় এই সব সংখ্যা দিয়েই। রজতজয়ন্তী, সুবর্ণজয়ন্তী সে সব ইতিহাস। অথচ আমির খানের প্রথম ছবির কথাই ভাবুন! আশির দশকের শেষে ‘কয়ামত সে কয়ামত তক’ তৈরি হয়েছিল তিন কোটি টাকায়। ব্যবসা করেছিল ১২ কোটির। ওই অঙ্কটাই তখন ছিল ব্লকবাস্টার।
আজ? ৮০ কোটি বাজেটের ধুম-৩ দুপুর না গড়াতেই ১২ কোটি তুলে ফেলে। সলমনের ‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’ ৫০ সপ্তাহ চলার পরে ২০ কোটির ব্যবসা করেছিল। ‘দবাং’ প্রথম দিনে তুলেছিল ১৯ কোটি ৫০ লক্ষ।
আসলে টাকা তোলার কৌশলটাই গিয়েছে বদলে। ছবির বাজেট প্রায়শই ১০০ কোটি ছাড়াচ্ছে। প্রযোজকরা মরিয়া হয়ে চাইছেন প্রথম সপ্তাহের মধ্যে অন্তত ৭৫ কোটি ধরে তুলতে। তার জন্য ছবির মারকাটারি প্রচার জমানো হচ্ছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ানো হচ্ছে প্রেক্ষাগৃহ আর শো-এর সংখ্যা। ‘চেন্নাই’ যেমন মুক্তি পেয়েছিল ৩৫০০ হল-এ, ‘কৃষ ৩’ পায় ৩৭০০ হল। ‘ধুম ৩’ দেখানো হচ্ছে ৪৫০০ প্রেক্ষাগৃহে। বক্স অফিস বিশেষজ্ঞ কমল নাহাতা বলছেন, “একটা মাল্টিপ্লেক্সের কথা জানি, যেখানে ধুমের ৫৪টি শো রয়েছে। আগে রজতজয়ন্তী হতে গেলে যতগুলো শো লাগত, এখন তো সেটা দু’তিন দিনেই হয়ে যাচ্ছে।” এমনও হচ্ছে যে, ছবি দেখে লোকের ভাল লাগছে না। কিন্তু তার প্রভাব বাণিজ্যে পড়ছে না।
এই বাস্তবটা তারকাদেরও অজানা নয়। একশো-দুশো কোটি ক্লাবের জন্মদাতা আমির নিজেই ‘কফি উইথ করন’-এ এসে বলছিলেন, বাণিজ্যের অঙ্ক নিয়ে এত কচকচি না হলেই ভাল। বলছিলেন, ‘মুঘল ই আজম’ কত টাকার ব্যবসা করেছিল বা ‘কাগজ কে ফুল’, তা কি কেউ মনে রেখেছে? লোকে ছবিগুলো মনে রেখেছে।
ইদানীং বাণিজ্যের অঙ্কে সুপারহিট ছবিও কত দিন লোকের মনে থাকছে, সেটা অবশ্যই একটা প্রশ্ন। কিন্তু ছবি দর্শকের ভাল লাগার ভিত্তিতে যে ব্যবসা, সেটাই ক্রমশ উধাও হয়ে যাচ্ছে বলে একাংশের মত। পরিচালক মুকেশ ভট্ট যেমন বিরক্ত গলায় বললেন, “গোটাটাই একটা চক্র। কর্পোরেটরা সিনেমা বানাচ্ছে। তার পর পিআর-রা এসে রেকর্ড ভাঙার গল্প শোনাচ্ছে।” মুকেশ নিজের ‘আশিকি-টু’র উদাহরণ দিলেন। ছবিটা এই বাজারে টানা চার সপ্তাহ রমরমিয়ে ব্যবসা করেছে। অনেক বড় বাজেট ছবিই তা করেনি।
অনেক সময় একটা ছবি শুরুতে তেমন সাড়া না পেলেও কিছু দিন পর থেকে ভাল ব্যবসা করত। সে সবও আর হয় না বললেই চলে। কমল বলছেন, “শুধু ‘কাই পো চে’ ক’দিন পর থেকে ভাল ব্যবসা পেতে শুরু করেছিল।” আর ‘ধুম ৩’ মুক্তির আগে থেকেই জল্পনা চলছিল ছবিটা ৩০০ কোটি ছোঁবে কিনা। প্রথম দিনের রেকর্ড ভাঙার পরে ভাবা হচ্ছে, সপ্তাহান্তের রেকর্ড ভাঙবে কি। ‘মুঘল ই আজম’ ১৯৬০ সালের ছবি। ‘ধুম ৩’ ২০১৩। পরিবর্তনকে অস্বীকার করার উপায় নেই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.