নানা রকম...
নারী-প্রেম ও মৃত্যুচেতনা
হ্যাপেনিঙস উৎসবে আগ্রহ জাগিয়েছিল নাটক ‘কালার ব্লাইন্ড’। প্রযোজনা: মুম্বইয়ের অরণ্য, পরিচালনা: মানব কাউল। রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি প্রতিভার মহত্ত্বের উৎসে এক অনন্য সাধারণ ব্যক্তি-মানুষকে খুঁজেছেন পরিচালক। তাঁর নিঃসঙ্গতা, কঠোর আত্মশাসন, জীবনে নারী, প্রেম, মৃত্যুচেতনা ইত্যাদির নানা নাট্যচিত্রকল্প নিয়ে একটি কোলাজ-নাটক। প্রথমেই শুভ্রকেশ শ্মশ্রূ-মণ্ডিত, জোব্বা পরা বহু পরিচিত চেহারার ঋষিসদৃশ রবীন্দ্রনাথকে দেখা যায় একটি স্বচ্ছ পর্দার আড়ালে।
নাটক সেই পরিচিতির ডিকন্সট্রাকশন বা বিনির্মাণ তারই প্রতীকী ইঙ্গিতে দাড়ি-জোব্বা-পরচুলো খুলে নিয়ে বার করে আনা হয় এক শার্ট-প্যান্ট পরা আধুনিক যুবককে। নানা প্রতীকের প্রয়োগে বিষয়গুলি মঞ্চে নাটকীয়তা অর্জন করলেও অনেক সময়ে প্রতীকের ব্যঞ্জনা দর্শকের মাথার উপর দিয়ে চলে যায়। অন্যতম প্রধান থিম, ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সম্পর্ক নাটকের অনেকটা অংশ জুড়ে থাকে। গবেষণা করে রচিত স্ক্রিপ্ট নিয়ে পরিচালক ও লেখিকা নাটক শুরু করেন নাটকের মধ্যে নাটকে। কিন্তু গবেষণার উল্লেখ সত্ত্বেও মঞ্চের ভিক্টোরিয়া (কল্কি কোয়েখলিন) আর রবীন্দ্রনাথ (সত্যজিৎ শর্মা) এমন কিছু রোমান্টিক ঘনিষ্ঠতায় পরস্পরের কাছে আসেন না, তবে সংলাপে অভিনয়ে বিশুদ্ধ আবেগের আলোড়নে সমস্ত প্রযোজনার এই অংশটি সব চেয়ে উজ্জ্বল।

আমি শুধু আমিই
সম্প্রতি শিশির মঞ্চে অনুষ্ঠিত হল ‘আমি শুধু আমিই’ শিরোনামে পৌলমী ভট্টাচার্যের একক আবৃত্তির অনুষ্ঠান। দৈনন্দিন জীবনভাবনা থেকে উঠে আসা অনুভব যেন সতেরোটি কবিতার চয়নে। কবিতা সিংহের দীর্ঘ কবিতা দিয়ে যাত্রা শুরু। নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর কবিতায় রোমান্টিক কণ্ঠস্পর্শ অন্য মাদকতা তৈরি করে। সুজন ভট্টাচার্যের একটি নামহীন কবিতা তীব্র বাস্তবের সামনে দাঁড় করায় যা চিনিয়ে দেয় স্বরক্ষেপণে ও কণ্ঠবিভঙ্গের বৈচিত্রে নিজস্ব পৌলমীকে। সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘মেজাজ’ মন জয় করে পরিবেশনের গুণে। বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘সেই অহংকার’, অমিতাভ দাশগুপ্তের ‘শুনুন কমরেড’-এর প্রত্যয়ী উচ্চারণে পৌলমী নিজেকে একাত্ম করে দিতে পেরেছেন।
মুরারি রায়চৌধুরীর আবহ একই সঙ্গে কবিতার ভাব ও ভালবাসার বয়নে জুড়ে দেয় এক পরিণত সুখ যা শঙ্খ ঘোষের ‘সাঁকো’র মতোই সংযোগ তৈরি করে শ্রোতার সঙ্গে। এক অন্য অনুভূতি।

পরিপূর্ণ কোলাজ
আদি বালিগঞ্জ কড়েয়া মুক্তধারা শিল্পীগোষ্ঠী তাদের পঞ্চম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে নিবেদন করলেন ঋতু বিষয়ক রবীন্দ্র নৃত্যগীতি আলেখ্য ‘মেঘছায়ে সজল বায়ে’। ‘সংগচ্ছদ্ধং’ দিয়ে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর সংবর্ধনা জ্ঞাপন। নমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনা ও পরিচালনায় সংস্থার শিল্পীদের সঙ্গীত নিবেদন বেশ প্রশংসনীয়। অনুষ্ঠানে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত ও রবীন্দ্রসঙ্গীতের কোলাজটির পরিবেশন এক অন্য আঙ্গিকের পরিচায়ক। যন্ত্রসঙ্গীতের সহযোগিতা অনুষ্ঠানটিকে আরও বেশি পরিপূর্ণ করেছে। এর পরে উর্মিলা ভৌমিকের পরিচালনায় নৃত্য উপস্থাপন অনুষ্ঠানে বাড়তি মাত্রা এনে দেয়। ‘নম নম নম করুণাঘন’ গানে শিশুশিল্পীদের উপস্থাপনাও বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। প্রশংসা পাবেন উর্মিলা।

মনে ধরে পাশা খেলা

সম্প্রতি আইসিসিআর-এ ‘পরম্পরা’র প্রয়াসে ওড়িশি ও ভরতনাট্যম অনুষ্ঠিত হল রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায়। শুরুতেই সংস্থার ছাত্রছাত্রীরা পরিবেশন করে পুষ্পাঞ্জলী। এর পর ক্রমান্বয়ে গণেশবন্দনা, কীর্ত্তনম, মীরা ভজন এবং পূর্বী রাগ ও রূপক তালে নিবদ্ধ তিল্লানা পরিবেশিত হয়। মীরা ভজন উপস্থাপনাটিতে পাশা খেলার দৃশ্যটি মনে রাখার মতো। দ্বিতীয়ার্ধের অনুষ্ঠানে ‘রসায়াৎ’ ছিল ওড়িশি নৃত্যের কয়েকটি ধারাবাহিক নৃত্যপদের সমষ্টি, যার সূচনা হয় ‘মঙ্গলাচরণ’ নৃত্যপদটিতে। শর্মিলা বিশ্বাসের সুযোগ্যা শিষ্যা শাশ্বতী গড়াই-এর পরিশীলিত নৃত্যভঙ্গি দর্শকদের মুগ্ধ করে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.