স্কুল বিল্ডিং থেকে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী থেকে অনান্য পরিকাঠামো আছে সবই। তবুও প্রতি বছর পঞ্চম শ্রেণিতে ছাত্র ভর্তির নতুন মরসুম এলেই দুশ্চিন্তা বাড়ে নবদ্বীপের একাধিক হাইস্কুলের। ছাত্র আসবে তো? প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম সংখ্যক ছাত্র ভর্তি হওয়ার কারণে শহরের বেশ কয়েকটি স্কুলের রীতিমত অস্তিত্বের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। আসলে ছাত্র ভর্তির মরশুমে বেশির ভাগ অভিভাবক তাদের ছেলেমেয়েকে শহরের কয়েকটি নামী স্কুলেই ভর্তি করাতে চান। তাই ফাঁকা পড়ে থাকে বাকি স্কুলের ক্লাসঘরগুলি। এভাবেই চলতে থাকলে ওইসব স্কুলের ভবিষ্যত কি? উঠছে প্রশ্ন।
জেলা সূত্রে জানা গিয়েছে, নবদ্বীপ শহরে ১৮টি হাইস্কুল রয়েছে। কিন্তু ছেলেমেয়েদের হাইস্কুলে ভর্তির বেলায় অভিভাবকদের প্রথম পছন্দের তালিকায় থাকে বকুলতলা(বয়েজ), নবদ্বীপ হিন্দু স্কুল, তারাসুন্দরী গার্লস এবং নবদ্বীপ বালিকা বিদ্যালয়। পরবর্তী পর্যায়ে শিক্ষামন্দির বা জাতীয় বিদ্যালয়ের (বালক) মত স্কুলগুলি থাকে। এই স্কুলগুলিতে ভর্তির পর যত সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী বাকি থাকে তা বাকি স্কুলগুলির জন্য পর্যাপ্ত নয়। ফলে সমস্যায় পড়ছে অন্য স্কুলগুলি। যেমন গত বছরে যেখানে প্রথম পাঁচ-ছটি স্কুলে গড়ে দু’শোর উপর ছাত্র ভর্তি হয়েছে সেখানে কোন কোন স্কুলে ভর্তির সংখ্যা মাত্র ৯ জন। আবার কোথাও বা ১২ জন। অথচ গড়ে প্রতিবছর নবদ্বীপে পঞ্চম শ্রেণিতে কমবেশি আড়াই হাজার ছেলেমেয়ে ভর্তি হয়। |
পুরসভা এলাকার বিদ্যালয়গুলিতে পঞ্চম শ্রেণিতে আগামী শিক্ষাবর্ষে ছাত্রছাত্রী ভর্তির এই সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হয়েছে পুরসভা। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নবদ্বীপের সমস্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক-প্রধান শিক্ষিকা, পরিচালন সমিতির সম্পাদক-সভাপতি, পুরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলারদের নিয়ে আলোচনাসভা হয়। নবদ্বীপের পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহার সভাপতিত্বে ওই সভায় নেওয়া হয় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত। নবদ্বীপের পুরপ্রধান বিমানবাবু বলেন, ‘‘নবদ্বীপের মত প্রাচীন শিক্ষাকেন্দ্রে অনেক স্কুল থাকবে এটা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু সমস্যা হল প্রতিটি স্কুলে ছাত্রছাত্রী ভর্তির ব্যাপারে কোনও ভারসাম্য থাকছে না। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি কোনও স্কুল ১৮০টির বেশী ভর্তি করতে পারবে না, ভর্তির ব্যাপারে কোনও সুপারিশ কার্যকর হবে না ইত্যাদি।”
সারস্বত মন্দির (বয়েজ) স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং ভর্তি বিষয়ক মনিটারিং কমিটির আহ্বায়ক বিজনকুমার সাহা বলেন, “ভর্তির সমস্যা প্রতি বছরই বেড়ে চলেছে। এখনই হস্তক্ষেপ না করলে এরপর নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।” নবদ্বীপ তথা রাজ্যের অন্যতম নামী স্কুল বকুলতলা হাইস্কুলের(বয়েজ) প্রধান শিক্ষক রবি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এখন বেশির ভাগ পরিবারেই একটি করে সন্তান। তাই অনেক অভিভাবক ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের দিকে ঝুঁকছেন। তাই এখন স্কুল অনুপাতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কমছে। বিশেষ করে বাংলা
মাধ্যম স্কুলগুলিতে।” |