বেলপাহাড়িতে সক্রিয়তা শুরু শাসকদলের
মাওবাদীদের আনাগোনা শুরু হয়েছেগোয়েন্দা সূত্রে এই খবরের ভিত্তিতে জঙ্গলমহলে সক্রিয় হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। এ বার শাসকদল তৃণমূলও ‘শান্তি ও উন্নয়নের লক্ষ্যে’ বেলপাহাড়িতে রাজনৈতিক সক্রিয়তা বাড়াচ্ছে।
শুক্রবারই বেলপাহাড়ির চাকাডোবা গ্রামে তৃণমূলের এক কর্মিসভা হল। ছিলেন দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়, কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ, যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি শ্রীকান্ত মাহাতো প্রমুখ। এক সময়ে মাওবাদী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বাঁশপাহাড়ি, শিমুলপাল ও ভুলাভেদা অঞ্চলের শতাধিক দলীয় কর্মী ওই সভায় যোগ দেন। কর্মিসভায় দীনেনবাবু বলেন, “অনেক কষ্টে জঙ্গলমহলে শান্তি ফিরেছে। এই শান্তিকে রক্ষা করার জন্য দলের সমস্ত নেতা-কর্মীদের দায়িত্ব নিতে হবে। এলাকায় অশান্তি পাকানোর অপচেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জঙ্গলমহল সফরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের অন্দরের খবর, মুখ্যমন্ত্রী এ বার বেলপাহাড়ির প্রত্যন্ত গ্রামে যেতে চান। এক সময়ে মাওবাদীদের ধাত্রীভূমিতে দাঁড়িয়ে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে ‘চরম বার্তা’ দিতে চান রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।
তারই ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে কয়েকদিন ধরে ঝাড়খণ্ড ও পুরুলিয়ার সীমানা ঘেঁষা বেলপাহাড়ির প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে হাজির হয়ে জেলা প্রশাসনের কর্তা-কর্ত্রীরা বাসিন্দাদের কাছে নানা পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছেন। আগামী সপ্তাহে ফের বেলপাহাড়ির প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের গবাদি পশু বিলি করতে আসবেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতার পালা বদলের পরেও বেলপাহাড়ি ব্লকটি সিপিএম ও ঝাড়খণ্ডীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ছবিটা বদলে যায়। বেলপাহাড়ি ব্লকের দশটি গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূল দখল করে নেয়। সিপিএমের দখলে থাকা বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতিও দখল করে তৃণমূল। তৃণমূলের একাংশ মানছেন, রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর উন্নয়নের প্রশ্নে কৌশলগত কারণে বেলপাহাড়িতে সিপিএম-ঝাড়খণ্ডীদের এখন দায়ী করার সুযোগ আর নেই। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বেলপাহাড়ি ব্লকে উন্নয়নের যাবতীয় দায়ভার এখন শাসকদল তৃণমূলের।
অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে, অনুন্নয়নের জন্য আগের বাম রাজ্য সরকারকে দায়ী করে এলাকায় সংগঠন বাড়িয়ে তুলেছিল মাওবাদীরা। ইতিমধ্যে ঝাড়খণ্ড সীমানা পেরিয়ে মাওবাদীরা বেলপাহাড়ির প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে যাতায়াত শুরু করেছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর। বেলপাহাড়ি ব্লকের এক তৃণমূল নেতার কথায়, “পূর্ব অভিজ্ঞতা বলছে, জঙ্গলমহল এলাকায় রাজনৈতিক শূন্যতার সুযোগ নিয়ে মাওবাদীরা সংগঠন বাড়ায়। মাওবাদীদের থেকে এলাকার আদিবাসী-মূলবাসীদের বিচ্ছিন্ন করতে গেলে শুধু উন্নয়ন, জনসংযোগ ও পুলিশের তল্লাশি-অভিযান যথেষ্ট নয়। এই সবের পাশাপাশি, এলাকায় রাজনৈতিক সক্রিয়তা বাড়ানো প্রয়োজন।” বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের বংশীবদন মাহাতোর বক্তব্য, “বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীরা যাতে ফের এলাকায় গোলমাল পাকাতে না পারে, সেই জন্যই জেলা নেতৃত্ব আমাদের সতর্ক থাকতে বলেছেন।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেনবাবু বলছেন, “স্পর্শকাতর জঙ্গলমহলের উন্নয়ন ও শান্তির বিষয়টি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। সেই কারণেই দলীয় সংগঠনকে আরও জোরদার করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.