সরকারি নিয়মে পাশের জন্য ন্যূনতম নম্বর ৩০। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্টে ছাত্রদের পাশের হার বাড়াতে সেই নম্বর প্রথমে নামানো হয়েছিল ২০-তে, তার পরে ১৭-তে। তবুও বাঘা যতীন প্রান্তপল্লি হাই স্কুলের মোট ১০১ জন উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষার্থীর মধ্যে থেকে ৬১ জনের বেশি ছাত্রকে পাশ করানো যায়নি। আর সেই জন্য ফেল করা ছাত্রদের পাশ করানোর দাবিতে শুক্রবার প্রায় ঘণ্টা তিনেক অভিভাবকদের হাতে আটক হয়ে রইলেন সংশ্লিষ্ট স্কুলের শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীরা।
এক সপ্তাহে দু’দুবার একই ঘটনা। শ্যামবাজার এ ভি স্কুলের পরে এ বার বাঘা যতীন প্রান্তপল্লি হাই স্কুল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুর দু’টো নাগাদ জনা চল্লিশেক ছাত্র এবং একশো জন অভিভাবক ওই স্কুলের সামনে হাজির হয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য ছাত্রদের পাশ করানোর দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। স্থানীয় এক বাসিন্দা রাজা রায় বলেন, “দুপুরে প্রান্তপল্লি হাই স্কুলের সামনে কিছু লোককে হইচই করতে দেখেছিলাম। ঘণ্টাখানেক পরে তিন-চার জন পুলিশ আসে।”
গত বছর উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্টে পাশ করানোর দাবিতে প্রধান শিক্ষিকা-সহ অন্য শিক্ষিকাদের রাতভর ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন যাদবপুর সন্তোষপুরের ঋষি অরবিন্দ বালিকা বিদ্যাপীঠের এক দল ছাত্রী। ওই ঘটনার পরে রাজ্যের বহু স্কুলে টেস্টে ফেল করা ছাত্রছাত্রীরা পাশ করানোর দাবিতে ঘেরাও-আন্দোলন শুরু করে। এ বছরও একই ঘটনা শুরু হয়েছে।
এ দিন কী হয়েছিল বাঘা যতীন প্রান্তপল্লি হাই স্কুলে?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঘা যতীন প্রান্তপল্লি হাই স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্টের ফল বেরোয় বৃহস্পতিবার। মোট ১০১ জন ছাত্রের মধ্যে ৬১ জন তাতে পাশ করেছিলেন। অকৃতকার্য হয়েছিলেন ৪০ জন। এর পরেই সেই ছাত্রদের পাশ করানোর দাবি তুলতে থাকেন তাঁদের অভিভাবকরা। শুক্রবার সেই দাবি নিয়েই স্কুলের সামনে হাজির হন অকৃতকার্য ছাত্রদের অভিভাবকেরা। অকৃতকার্য চল্লিশ জনকে আবার পরীক্ষায় বসানোর কথাও বলেছিলেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অভিভাবকেরা তাতেও রাজি হননি বলে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি। এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্কুল কমিটির সব সদস্য এবং শিক্ষক মিলেই মোট ১০১ জনের মধ্যে ৬১ জন ছাত্রকে পাশ করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য ছাত্রদের দাবি যে মানা যাবে না, সেই সিদ্ধান্তও সর্বসম্মতি ক্রমে গৃহীত হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় শুক্রবার টেস্টে কৃতকার্য ছাত্রদের মধ্যে ৩৮ জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আবেদনপত্র পূরণ করে। শনিবার বাকি ২৩ জন আবেদনপত্র ভরবে।” |