এ বার ইনফোসিস ছাড়ার কথা ঘোষণা করলেন ভি বালকৃষ্ণন-ও। অবসর ভেঙে সংস্থার শীর্ষ পদে এন আর নারায়ণমূর্তিকে ফেরানোর পর গত ছ’মাসে এই নিয়ে ইনফোসিস ছাড়লেন আট শীর্ষ স্থানীয় কর্তা।
বালকৃষ্ণনকে হারানো যে বড়সড় ধাক্কা, তা মেনে নিচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পমহল। কারণ, তিনি শুধু শীর্ষ স্থানীয় কর্তা বা পরিচালন পর্ষদের সদস্য নন। ২০১৫-তে সিইও এস ডি শিবুলালের অবসরের পর ওই পদে তাঁর উঠে আসা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছিলেন অনেকে। সে ক্ষেত্রে তিনিই হতেন প্রথম সিইও, যিনি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা নন। কিন্তু এখন সেই অঙ্ক নতুন করে কষতে হবে বলে মনে করছেন সকলে। শুক্রবার সংস্থা ছেড়ে যাওয়ার কথা জানানো বালকৃষ্ণন যে কত অপরিহার্য ছিলেন, তা স্পষ্ট নারায়ণমূর্তির কথায়। তিনি বলেন, “ওঁর বুদ্ধি, আর ‘প্যাশন’ ছাড়া ইনফোসিস চালানোই শক্ত।” তবে এ দিনই পর্ষদের নতুন সদস্য হিসেবে ইউ বি প্রবীণ রাওয়ের নাম ঘোষণা করেছে ইনফোসিস। স্বাধীন ডিরেক্টর হিসেবে এনেছে বায়োকন কর্ণধার কিরণ মজুমদার শ-কে।
বালকৃষ্ণনের আগে প্রতিষ্ঠাতা না-হয়েও সম্ভাব্য সিইও হিসেবে ঘোরাফেরা করত মোহনদাস পাই-এর নাম। পষর্দের সদস্য থাকাকালীন সংস্থা ছেড়েছিলেন তিনিও। বলা হয়, সংস্থার চেয়ারম্যান বা সিইও পদকে শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে আটকে রাখা মেনে নিতে পারেননি তিনি। মানতে পারেননি সংস্থা পরিচালনায় তাঁদের মাত্রাতিরিক্ত গুরুত্বও। এ দিন বালকৃষ্ণন জানিয়েছেন, সেই পাইয়ের সঙ্গে হাত মিলিয়েই প্রাইভেট ইক্যুইটি ব্যবসায় পা রাখবেন তিনি। তাই সংস্থা ছাড়ার সিদ্ধান্ত। তবে এর সঙ্গে নারায়ণমূর্তির ফিরে আসা বা সংস্থার অন্য কারও সঙ্গে মনোমালিন্যের কথা উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
কিন্তু জুনে নারায়ণমূর্তি ফিরে আসার পর যে ভাবে গত ছ’মাসে আট শীর্ষ স্থানীয় কর্তা সংস্থা ছাড়লেন, তাতে কপালে ভাঁজ অনেকেরই। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, মূর্তি ফেরায় বাজার উৎফুল্ল। তাই চড়চড়িয়ে বেড়েছে সংস্থার শেয়ার দর। এ দিনই শেয়ার মূল্যের হিসাবে দেশের ষষ্ঠ সংস্থা হিসেবে ইনফোসিসের দাম ছাড়িয়েছে দু’লক্ষ কোটি টাকা। কিন্তু যে কারণেই হোক, মূর্তি ফেরার পর প্রায় সংস্থা ছাড়ার হিড়িক পড়েছে শীর্ষ কর্তাদের মধ্যে। বাসব প্রধান, অশোক ভেমুরি, স্টিফেন প্র্যাট, কার্তিক জয়রামন, হুম্বার্তো আন্দ্রেদ, সুধীর চতুর্বেদি, সুব্রহ্মণ্যম গোপারাজুর পর এ বার বালকৃষ্ণনের সংস্থা ছাড়া তেমনই ইঙ্গিত দেয় বলে তাঁদের দাবি।
১৯৯১-এ ইনফোসিসে যোগ দেওয়া বালকৃষ্ণন সংস্থার বিপিও ব্যবসা, ব্যাঙ্কিং সফটওয়্যার (ফিনাক্ল) ও উপদেষ্টা শাখা লোডস্টোনের প্রধান। আগে তিনি সিএফও ছিলেন। শেয়ার বাজারে নথিভুক্তি থেকে শুরু করে বহু ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন। তাই এ বার তাঁরও সংস্থা ছাড়া ইনফোসিসে নেতৃত্বের সঙ্কট তৈরি করবে কি না, নজর সে দিকেই। |