শ্বশুর এবং সম্পর্কিত শ্যালককে খুন করার অভিযোগে এক যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবকের শ্বশুর মহাপ্রভু মণ্ডল (৪৫) তাঁর ভাগ্নে মহীতোষ মণ্ডলকে (২৭) নিয়ে বুধবার রাতে মুর্শিদাবাদের পলুইঘাটা এলাকায় মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁদের ধারালো অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করা হয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান মহাপ্রভুবাবু। মহীতোষকে গুরুতর জখম অবস্থায় বহরমপুরে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেখানে মারা যান মহীতোষ। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “বিয়ে নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে গণ্ডগোল ছিল। তার জেরেই নিজের শ্বশুর ও সম্পর্কিত শালাকে ওই যুবক ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করেন বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। ওই যুবক গোলক দাসকে আটক করা হয়েছে। ওই দুই পরিবারের আরও চার জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।” |
মহাপ্রভুবাবুর ছেলে তাঁর জামাইবাবুর বিরুদ্ধেই বাবাকে খুন করার অভিযোগ দায়ের করেছেন। মহাপ্রভুবাবুর দাদা জগন্নাথ মণ্ডল বলেন, “আমার ভাইঝি ছ’মাস আগে পালিয়ে বিয়ে করেছিল। কিন্তু মণ্ডলবাড়ির মেয়ে দাস পরিবারে বিয়ে করেছে, এটা আমার ভাই মহাপ্রভু মেনে নিতে পারেননি। বিয়ের পর থেকে তাই গণ্ডগোল লেগেই ছিল। গত ছ’মাস দুই পরিবারের মধ্যে কোনও সম্পর্কই ছিল না।” যে যুবকের সঙ্গে তাঁদের পরিবারের মেয়ের বিয়ে হয়েছিল, তিনি খেলনার ফেরিওয়ালা। সেই সঙ্গে পারিবারিক চামড়ার ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত। মণ্ডল পরিবার তাঁদের তুলনায় সম্পন্ন। তাঁদের বেশ কিছুটা জমি রয়েছে। জগন্নাথবাবু জানান, তবে সম্প্রতি টেলিফোনে কথাবার্তা হত। বুধবার রাতে নিজের মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিয়ে আসতে পলুইঘাটা গিয়েছিলেন মহাপ্রভুবাবু।
সে রাতে দাস পরিবারের বাড়িতে ওই যুবক ও তাঁর স্ত্রী ছাড়া কেউ ছিলেন না। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, স্ত্রীকে শ্বশুরের হাতে ছাড়তে চাননি ওই যুবক। তাঁর স্ত্রীও বাবার সঙ্গে যেতে আপত্তি করেছিলেন। সেই সময়ে মেয়ের সঙ্গে বাবার কথা কাটাকাটি শুরু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, মেয়েকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন মহাপ্রভুবাবু। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মহীতোষ। সে সময়েই আক্রমণের মুখে পড়েন মহাপ্রভুবাবু। তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়লে মহীতোষ তাঁকে কাঁধে করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। সে সময়ে মহীতোষও আক্রান্ত হন।
ওই যুবকের আত্মীয় সুতপা দাস বলেন, “বাড়ির অমতেই বিয়ে করেছিল দাদা-বৌদি। স্কুলে এক ক্লাশে পড়ার সুবাদে ওদের আলাপ। কিন্তু আমরা মেনে নিলেও বৌদির পরিবার মানতে পারেনি। তাই দু’পক্ষের মধ্যে কোনও সম্পর্কই ছিল না। তার মধ্যেই জোর করে বৌদিকে নিয়ে যেতে এসেছিলেন তাঁর বাবা।” |