মহল্লায় বন্ধ জল-আলো, আন্দোলনে ক্ষুব্ধ শ্রমিক
প্রায় আড়াই মাস ধরে বন্ধ চন্দননগরের গোন্দলপাড়া জুটমিল। রাতের ঘুম উবেছে শ্রমিকদের। তার উপরে দু’দিন ধরে মহল্লায় জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁদের দুর্দশা চরমে উঠেছে। মিল কর্তৃপক্ষই ওই দুই পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামলেন শ্রমিকেরা। এ ভাবে পরিষেবা বন্ধ বেআইনি কাজ বলে মন্তব্য করেছেন চন্দননগরের মহকুমাশাসক বিশ্বনাথ।
মিল কর্তৃপক্ষের ‘আচরণে’ ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা বৃহস্পতিবার সপরিবারে জ্যোতির মোড়ে জি টি রোড অবরোধ করেন। শেষে মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে ঘণ্টাখানেক অবস্থানে বসেন। শেষমেশ প্রশাসন মিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থামে।
অবরোধ বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের। চন্দননগরের জ্যোতির মোড়ে তোলা নিজস্ব চিত্র।
চন্দননগরের মহকুমাশাসক বিশ্বনাথ বলেন, “শ্রমিকদের আবাসনের জল সরবরাহ এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করার কথা মিল কর্তৃপক্ষ জানাননি। কর্তৃপক্ষ এটা বেআইনি কাজ করেছেন। আমি শ্রম দফতরকে ব্যাপারটি খতিয়ে দেখতে বলেছি। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” মহকুমার ডেপুটি শ্রম কমিশনার তীর্থঙ্কর সেনগুপ্তও বলেন, “মিল কর্তৃপক্ষ অন্যায় ভাবে জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করেছেন। আমরা জানতে পেরে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ২৩ ডিসেম্বর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠক ডাকা হয়েছে, যাতে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা যায়।”এ বিষয়ে মিল কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। শ্রমিক অসন্তোষকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর কারখানায় ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে দেন মিল কর্তৃপক্ষ। তার ফলে, সমস্যায় পড়েন কারখানার প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক। এর কয়েক দিন পরেই মিল কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ ও জল সরবরাহের সময়সীমা বেঁধে দেন বলে শ্রমিকেরা জানান। এর পরে গত ১৭ ডিসেম্বর রাত থেকে শ্রমিক আবাসনগুলিতে বিদ্যুৎ ও জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
জরুরি দুই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শ্রমিকদের দুর্দশা চরমে উঠেছে। তাঁদের অভিযোগ, মিথ্যা কারণ দেখিয়ে ইচ্ছা করে কর্তৃপক্ষ মিল বন্ধ করেছেন। এ বার তাঁরা জরুরি দুই পরিষেবাও বন্ধ করে দিলেন। ২০ বছর ধরে ওই মিলে ‘ওয়েল্ডিং’ বিভাগে কাজ করছেন জিতেন চৌধুরী। এ দিনের আন্দোলনে তিনিও সামিল হন। তাঁর কথায়, “আমরা পুরুষেরা গঙ্গায় বা পুকুরে গিয়ে স্নান সারছি। কিন্তু মহিলাদের তো অসুবিধা হচ্ছে। ঘরের ব্যবহারের জল দূর থেকে আনতে হচ্ছে। এ ভাবে কি থাকা যায়?” মিলের সাফাইকর্মী রাজন ধানু বলেন, “কর্তৃপক্ষ তুঘলকি আচরণ করছেন। সন্ধ্যা হতেই ঘরে হ্যারিকেন, মোমবাতি জ্বালাতে হচ্ছে। কয়েক মাস পরেই মেয়ের মাধ্যমিক পরীক্ষা। এখানকার আরও কয়েকটি ছেলেমেয়েও মাধ্যমিক দেবে। বিদ্যুৎ না থাকায় পড়াশোনায় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ সে সব কিছুই ভাবল না।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.