‘চোখের সামনে নদী চুরি হয়ে যাচ্ছে’। মনে করালেন দেবদূত ঘোষঠাকুর (২১-১১)। অজস্র নদী, ছোটনদী ও খাল , চুরি হয়ে যাচ্ছে জলপাইগুড়ির লৌতির মতোই। সবটা কিন্তু চোরে চুরি করেনি। ‘উন্নয়ন’কামী ভুল ভাবনাও এই চুরি ঘটিয়ে চলেছে।
সত্তরের দশকে সবুজ বিপ্লবের অতি উত্সাহে ছোট ছোট নদীতে বসানো হয়েছিল অজস্র রিভার পাম্প। বোরো ধান, উন্নত গম আর অবেলার শাকসব্জিতে মাঠ ভরে গেল। চোখের সামনে শীর্ণ হতে হতে চুরি হয়ে গেল চপলা উচ্ছলা সব নদীর যৌবন। |
মুর্শিদাবাদের ভৈরব, ভাণ্ডারদহ, গোবরানালার চেহারা দেখে এখনকার প্রজন্ম ভাবতেও পারবে না, চল্লিশ বছর আগেও কী চেহারা ছিল তাদের। নদিয়ার জলঙ্গী এখন প্রায় রুদ্ধ। কৃষ্ণনগরের ভিতর দিয়ে বয়ে চলা অঞ্জনা নদীটি কোথায়, জিগ্যেস করলে বহু মানুষ বলতে পারে না। সেটি এখন মজে যাওয়া একটা খাল, বুক জুড়ে কংক্রিট।
নদীতে জল নেই, গোবরা-ভাণ্ডারদহের দু’পাশে বোরো আর সব্জির সেই রমরমাও এখন আর নেই। নিষেধাজ্ঞা থাকলেও চলছে শ্যালো, মিনি ডিপ। আর ক’দিন পর হয়তো সেটিও থাকবে না।
কৃষ্ণনগরে জলঙ্গীর উপর দিয়ে হচ্ছে দ্বিতীয় রেলব্রিজ। তার পিলার নির্মাণের জন্য দু’পাশে মাটি ফেলে নদীকে প্রায় ঢেকে ফেলা হয়েছে। ক্ষীণ কণ্ঠে কিছু মানুষ. প্রতিবাদ করেছেন। সেতু হোক, রেলের গতি বাড়ুক, কিন্তু তার জন্য নদীকে বলি দিয়ে নয়।
ইনাস উদ্দিন। কৃষ্ণনগর, নদিয়া |