আতঙ্ক ভারতের শেয়ার বাজারে • পড়ল টাকা • আশ্বাস অর্থমন্ত্রীর
আর্থিক ত্রাণ কমাচ্ছে মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক
১৯ ডিসেম্বর
বশেষে মোড় ঘুরল মার্কিন অর্থনীতির।
প্রত্যাশিত পথে হেঁটেই আর্থিক ত্রাণ কমানোর সিদ্ধান্ত নিল সে দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ। ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান বেন বার্নানকে বুধবার ভারতীয় সময় গভীর রাতে এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়ে জানান, প্রতি মাসে ঋণপত্র (বন্ড) কেনার কর্মসূচি জানুয়ারি থেকে ১,০০০ কোটি ডলার কমিয়ে করা হবে ৭,৫০০ কোটি ডলার (৪,৬৫,০০০ কোটি টাকা)। তবে এখনই বাড়ানো হচ্ছে না মূল সুদের হার। তা শূন্যের কাছাকাছিই থাকছে। ২০০৮-এ ঘনিয়ে আসা আর্থিক মন্দার মোকাবিলায় অর্থনীতিতে নগদ জোগাতেই প্রতি মাসে ৮৫০০ কোটি ডলার বন্ড কেনার ত্রাণ প্রকল্প চালু করেন বার্নানকে। অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরাতে সুদ নামিয়ে আনা হয় প্রায় শূন্য শতাংশে। প্রসঙ্গত, অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোয় মে মাসেই ধাপে ধাপে ত্রাণ কমানোর ব্যাপারে প্রথম ইঙ্গিত দিয়েছিল ফেডারেল রিজার্ভ।
সাংবাদিক বৈঠকে বেন বার্নানকে। ছবি: রয়টার্স ।
আন্তর্জাতিক শেয়ার বাজার আগে থেকেই বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছিল। তাই ইউরোপের বাজারে অধিকাংশ সূচকই বৃহস্পতিবার ছিল ঊর্ধ্বমুখী। এশিয়ায় অবশ্য মিশ্র প্রভাব পড়ে। তবে ভবিষ্যতে বিদেশি আর্থিক সংস্থার লগ্নি কমে যাওয়ার আশঙ্কায় কিছুটা আতঙ্ক গ্রাস করে ভারতীয় বাজারকে। সেনসেক্স ১৫১ পয়েন্ট পড়ে বন্ধ হয় ২০,৭০৮.৬২ অঙ্কে। বাজার সূত্রের খবর, লগ্নিকারীদের ধারণা, ভবিষ্যতে ত্রাণের অঙ্ক আরও কমে এলে বিদেশি লগ্নিকারীরা ভারতের বদলে স্বদেশে পুঁজি ঢালতেই পছন্দ করবেন। ধাপে ধাপে আমেরিকায় সুদের হার বাড়লেও ফল হবে একই। ডলারের তুলনায় টাকার দাম এ দিন সামান্য হলেও পড়েছে। টাকা ৫ পয়সা পড়ায় দিনের শেষে প্রতি ডলার দাঁড়ায় ৬২.১৪ টাকা। বিশ্ব বাজারের প্রভাবে কিছুটা হলেও পড়েছে সোনা। এই পরিপ্রেক্ষিতে শেয়ার বাজারে লগ্নিকারীদের আশ্বাস দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তিনি বলেন, “প্রয়োজন হলেই অর্থনীতির স্বার্থে আরও কিছু ব্যবস্থা নিতে দেরি করবে না কেন্দ্র।” রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর রঘুরাম রাজনের সঙ্গেও এ ব্যাপারে বৈঠক করার পর তিনি জানান, ফেড রিজার্ভ বন্ড কেনার পরিমাণ সামান্যই কমাচ্ছে। বাজারের তা অজানাও ছিল না। ফলে এর তেমন প্রভাব পড়বে না বলেই তাঁর ধারণা। চিদম্বরম বলেন, ভবিষ্যতে সুদ নিয়ে আমেরিকা কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতে ডলার প্রবাহ কমলে বৈদেশিক বাণিজ্যে চলতি খাতে লেনদেন ঘাটতি ফের বেড়ে উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছতে পারে বলে কিছুটা উদ্বিগ্ন ভারতীয় শিল্পমহলও। তবে তাদের ধারণা, এই ঘাটতি এখন অনেকটাই স্থিতিশীল। কেন্দ্রীয় সরকার ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইতিমধ্যেই সোনা আমদানিতে বিধিনিষেধ এনেছে, বাড়িয়েছে সোনার আমদানি শুল্ক, রফতানি বাড়ানোয় উৎসাহ দিয়েছে। ফলে এই ঘাটতি (বৈদেশিক মুদ্রা আয়-ব্যয়ের ফারাক) গত অর্থবর্ষের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকের ২১০০ কোটি ডলারের (জাতীয় আয়ের ৫%) থেকে অনেকটাই কমে এসেছে। চলতি ২০১৩-’১৪ অর্থবর্ষের একই সময়ে তা দাঁড়িয়েছে ৫২০ কোটি ডলারে, যা জাতীয় আয়ের ১.২%। শিল্পমহল এতেই অনেকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। ফলে ফেড রিজার্ভের সিদ্ধান্ত অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করতে পারবে না বলেই তারা আশাবাদী। বার্নানকে জানিয়েছেন, ২০১৪ সাল জুড়েই ধাপে ধাপে নির্দিষ্ট পরিমাণে কমানো হবে বন্ড কেনা। যদি কর্মসংস্থান প্রত্যাশা মাফিক বাড়ে, তা হলে ২০১৪-র শেষের দিকে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে ত্রাণ প্রকল্প।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.