ছাত্র পরিষদ ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মধ্যে মারপিট বাধল কাটোয়া কলেজে। সংসদের ভিতরে সংবাদপত্র পড়াকে কেন্দ্র করে অশান্তি হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বৃহস্পতিবার দুপুরের এই ঘটনায় দু’পক্ষের আট জন জখম হন। তাঁদের মধ্যে টিএমসিপি-র উজ্জ্বল প্রধান কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্র সংসদের ক্রীড়া সহ-সম্পাদক সুমন মণ্ডলকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই ঘটনার পরেই এ দিনের ক্লাস বন্ধ রাখা হয়েছে। মহকুমাশাসক তথা কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতির কাছে সর্বদল বৈঠক ডাকার প্রস্তাব দিয়ে এসেছি।” |
পুলিশ ও কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার এই কলেজের ছাত্র সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) নাসিমা খাতুন তাদের সংগঠনে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি করে টিএমসিপি। তা সংবাদপত্রে বেরোনোর পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই দুই ছাত্র সংগঠনের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বচসা শুরু হয়। ছাত্র পরিষদের অভিযোগ, ছাত্র সংসদের ভিতর থেকে সংবাদপত্র বের করে নিয়ে চলে যাচ্ছিল টিএমসিপি। সেই সময়েই ছাত্র সংসদে নাসিমা খাতুন নিজে হাজির ছিলেন। ছাত্র সংসদের সদস্যেরা সংবাদপত্র নিয়ে যেতে বাধা দেন। তখনই গোলমাল বেধে যায়। কাটোয়া থানার ওসি পীযূষ লায়েক ঘটনাস্থলে যান।
ছাত্র পরিষদ নেতা শেখ সোলেমানের অভিযোগ, “কলেজের ভিতরে টিএমসিপি-র গুণ্ডামিতে আমাদের তিন ছাত্র জখম হয়েছেন। এসএফআই এবং টিএমসিপি এক জোট হয়ে আমাদের উপরে হামলা চালাতে শুরু করেছে।” টিএমসিপি-র যদিও পাল্টা অভিযোগ, ছাত্র পরিষদ কর্মী-সমর্থকেরা কলেজের ভিতরে তাদের কর্মীদের কটূক্তি করছিলেন। প্রতিবাদ করাতেই ছাত্র পরিষদ তাঁদের উপরে চড়াও হয়। টিএমসিপি-র জেলা সহ-সভাপতি শুভেন্দু দাসের দাবি, “ছাত্র পরিষদের হাতে আমাদের পাঁচ কর্মী জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে এক জন মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ছাত্র পরিষদে ভাঙন শুরু হতেই তাদের প্রকৃত চেহারা বেরিয়ে পড়েছে।” এসএফআই যদিও এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও রকম যোগ নেই বলে জানিয়েছে।
এই ঘটনাকে ঘিরে কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে চাপান-উতোর শুরু হয়ে গিয়েছে। দু’পক্ষই মনে করছে, এর পরে কাটোয়া কলেজে উত্তেজনা বাড়বে। স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “এসএফআইয়ের কায়দায় টিএমসিপি-ও কাটোয়া কলেজের পিছনে সমাজবিরোধীদের জড়ো করে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের উপরে হামলার পরিকল্পনা নিয়েছিল। পুলিশকে এ ব্যাপারে সঠিক ভূমিকা পালন করতে হবে।” কাটোয়া শহর তৃণমূলের সভাপতি অমর রামের দাবি, “ছাত্র পরিষদ গুণ্ডামি করে কলেজে টিকে থাকতে চাইছে। সে কারণে ছাত্র সংসদ ভোট এগিয়ে আসতেই আমাদের ছাত্র সংগঠনের উপরে হামলা চালাচ্ছে।” |