‘ছ’পয়েন্ট নেব শপথ করেছিলাম, নিয়েছি’
ধিনায়কের ব্যাট ছ’পয়েন্টের যে স্বপ্নটা দেখাচ্ছিল, সেই স্বপ্ন বাস্তব হল টিমের এক নম্বর পেসারের বলে। দ্বিতীয় ইনিংসে ৭-৮২ হিসাব নিয়ে শেষ করে অশোক দিন্দা বলে দিলেন, রবিবারই কোচ-ক্যাপ্টেনের কাছে শপথ নিয়েছিলেন টিমকে ছ’পয়েন্ট এনে দেওয়ার।
রবিবার খেলার শেষে উত্তরপ্রদেশ ৫০-৩। সামনে ছ’পয়েন্টের হাতছানি। কী ভেবে আজ মাঠে নেমেছিলেন বাংলার পেসার? “যা ভাবার কালই ভেবে নিয়েছিলাম। কালই পাজি-কে বলে দিয়েছিলাম ছ’পয়েন্ট নেব। লক্ষ্মী যে ভাবে ব্যাট করেছিল, তার মর্যাদা তো আমাদের দিতেই হত। আমাকেই সেই দায়িত্বটা নিতে হত। লক্ষ্মীকেও বলে দিয়েছিলাম, তুমি চিন্তা কোরো না বস, আমি আছি,” এক নিঃশ্বাসে যখন বলে যান দিন্দা, তখন মনে হয় নিজের শপথ রাখতে পারা এক জন মানুষের তৃপ্তিটা বোধহয় এ রকমই হয়।
সঙ্গে আছে বাংলার প্রতি নিজের কমিটমেন্টের মর্যাদা রাখার আনন্দও। টিমে এ বার মহম্মদ শামি নেই, তাই দিন্দার দায়িত্ব আরও বেড়েছে। বাংলা পেসার নিজেও বলছিলেন, “শামি থাকলে আমি অনেকটা সাহায্য পাই। দু’দিক থেকে বাউন্সার দেওয়া যায়। বোলিং পার্টনার হিসেবে শামি খুব ভাল। কিন্তু ও যখন নেই, আমাকে তো বাড়তি দায়িত্ব নিতেই হবে। শিবশঙ্কর পাল অনেক দিন পর টিমে ফিরেছে। এই জিনিসগুলো মাথায় সব সময় ঘুরতে থাকে।”

স্বপ্নের ক্যাচ নিয়ে দিন্দার বুকে সুদীপ চট্টোপাধ্যায়। সোমবার ইডেনে। ছবি: উৎপল সরকার।
এ দিনের স্পেলটা দিন্দা নিজের কেরিয়ারে তিন নম্বরে রাখছেন, দলীপ ট্রফিতে উত্তরাঞ্চলের বিরুদ্ধে আট আর দক্ষিণাঞ্চলের বিরুদ্ধে সাত উইকেটের পরেই। ইডেনে এটাই তাঁর সবচেয়ে স্পেশ্যাল পারফরম্যান্স। দু’দিন মিলিয়ে টানা ২৪টা ওভার বল করে গিয়েছেন দিন্দা। মাঝে শুধু বাড়ি ফিরে খাওয়া আর ঘুম। কী ভাবে নিজেকে মোটিভেট করেন এ রকম লম্বা স্পেল করার জন্য? “সবটাই মনের জোর। শরীর যতই ক্লান্ত হয়ে যাক, মনের জোরটা আমাকে টেনে নিয়ে যায়। আমি ক্লান্ত হলেই হাল্কা স্ট্রেচ করি। বল করতে করতে টায়ার্ড লাগলে নিঃশ্বাস নেওয়ার উপর ফোকাস করি। আবার ফ্রেশ হয়ে যাই। আর উইকেট পেলে সেটা তো বাড়তি মোটিভেশন দেয়ই। এর আগেও লম্বা স্পেলে বল করেছি। ১৬, ১৭, ২০, ২১ ওভার। একদম ভেঙে না পড়ার আগে আমি থামি না। আর তা ছাড়া ক্যাপ্টেন আমাকে গত কাল জিজ্ঞেস করেছিল যে, আমি টানা করতে পারব কি না। বলেছিলাম, আমাকে দাও, যা বলবে করে দেব।” সঙ্গে যোগ করেন, “আমার বোলিংটাই হল ডেক-এ হিট করে যাওয়া। গত বছর সুইং নিয়ে বেশি ভাবতে গিয়ে ডুবেছিলাম। রিলিজ নিয়ে ভাবিনি। এ বার সুইংয়ের সঙ্গে রিলিজটা নিয়েও ভাবছি।”
শামির আগে জাতীয় দলে ডাক পেয়েছিলেন দিন্দা। এখন শামি টিম ইন্ডিয়ার অন্যতম প্রধান পেস অস্ত্র, আর আপনি দলের বাইরে। ভাবলে খারাপ লাগে না? হিংসে হয় না? চট করে উত্তর আসে, “একদম না। শামি নিজেকে প্রমাণ করে দিয়েছে। দারুণ বল করছে ও। টেস্টেও, ওয়ান ডে ক্রিকেটেও। আমি আজ এখানে, তাই এখন বাংলা নিয়েই ভাবছি। যে দিন জাতীয় দলে যাব, সে দিন ওটা নিয়ে ভাবব। আর আমি কিন্তু আজকেও ভাবছি না যে, আমাকে ওখানে গিয়ে খেলতে হবে।” বলে তাঁর সংযোজন, “আসলে আমি স্বপ্ন দেখি না। বাস্তবে থাকতে ভালবাসি। আমার ইচ্ছে ছিল জাহির ভাইয়ের সঙ্গে খেলা, সেটা আমি খেলেছি। ভাল ক্রিকেট খেলা আমার কাজ। তার বাইরে আর কিছু নিয়েই ভাবি না।”
যে জাতীয় নির্বাচকরা দিন্দাকে টিম ইন্ডিয়া থেকে বাদ দিয়েছিলেন, ঘরোয়া ম্যাচে তাঁদের সামনে খেলাটা কি বাড়তি মোটিভেশন বাংলার পেসারের কাছে? “না না। নির্বাচকরা তো প্রায় সব ম্যাচেই আসেন। বল হাতে থাকলে ভাল বল করার বাইরে আমার মাথায় কোনও চিন্তা থাকে না। আমি শুধু ক্রিকেট নিয়ে ভাবি।”
রঞ্জি কোয়ার্টার ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখার জন্য গ্রুপের শেষ ম্যাচ প্রচণ্ড গুরুত্বপূর্ণ। যে ম্যাচে কি না দিন্দাদের প্রতিপক্ষ তামিলনাড়ু, যাদের কোচের নাম ডব্লিউ ভি রামন। অ্যাওয়ে ম্যাচে প্রাক্তন কোচের সামনে পড়াটা বাংলার কাছে কতটা কঠিন? এত বছর লক্ষ্মী-দিন্দাদের সঙ্গে ঘর করা রামন তো টিমের নাড়িনক্ষত্র ভালই জানেন। দিন্দা কিন্তু আত্মবিশ্বাসী, “হ্যাঁ, উনি আমাদের খুব ভাল ভাবে জানেন। কিন্তু একটা জিনিস ভুলে যাবেন না। টিমে এ বার বেশ কয়েক জন নতুন ছেলে এসেছে। তাদের কতটা চেনেন রামন? এটা তো আমাদেরই প্লাস পয়েন্ট। আর যা-ই হোক না কেন, ডব্লিউ ভি রামন ব্যাট করতে আসবেন না। বলটা কিন্তু আমি করব!”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.