সুরাহা ৭ দিনে, মমতার আশ্বাস পেল মিৎসুবিশি
কেন্দ্র ও রাজ্যের করের বোঝায় রীতিমতো চাপে পড়ে গিয়েছে জাপানের মিৎসুবিশি। সোমবার সংস্থাটির কর্তাদের মুখে এ কথা শোনার পরে সাত দিনের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গের শিল্পক্ষেত্রে মিৎসুবিশি উল্লেখযোগ্য নাম। বস্তুত মিৎসুবিশি কেমিক্যাল কর্পোরেশনের হাত ধরেই হলদিয়ায় প্রথম বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে। সেখানে তাদের প্রথম কারখানা তৈরি হয় ২০০০ সালে। ২০১০-এ চালু হয়েছে দ্বিতীয় কারখানা। দু’দফায় এ রাজ্যে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে জাপানি বহুজাতিকটি। তাদের ওই দুই কারখানায় পিউরিফাইড টেরিপথ্যালিক অ্যাসিড (পিটিএ) উৎপাদন হয়।
কিন্তু বিশ্ব বাজারের মন্দা ও তার উপরে কেন্দ্র-রাজ্যের সম্মিলিত করের বোঝায় গত ক’বছর ধরে তাঁরা বেশ চাপে পড়ে গিয়েছেন বলে মিৎসুবিশি-কর্তাদের দাবি। তাঁদের আক্ষেপ, এ নিয়ে অতীতে অনেক বার সরকারি স্তরে আলোচনা হলেও আশানুরূপ ফল মেলেনি। এ দিন তাই সংস্থার প্রতিনিধিরা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে নবান্নে যান। মিৎসুবিশির প্রতিনিধিদলে ছিলেন ই ওনো, মানাবু চিকিমোতো ও দেবীপ্রসাদ পাত্র। বৈঠকের ফলাফলে তাঁরা স্পষ্টতই খুশি।
সায়েন্স সিটিতে এক সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
আর ওই বৈঠকের রেশ ধরেই পরে সায়েন্স সিটিতে এক সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “জাপানি সংস্থা মিৎসুবিশি কেমিক্যাল কর্পোরেশনের সমস্যা আগামী সাত দিনেই মিটে যাবে।” আশ্বাসেই শেষ নয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)-সহ বিভিন্ন জাপানি শিল্পসংস্থার উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর আর্জি, তারা যেন পশ্চিমবঙ্গে আরও বেশি করে বিনিয়োগ করতে এগিয়ে আসে। “এ রাজ্যে লগ্নি করুন। কাজ করতে কোনও সমস্যা হলে সরাসরি আমার বা মুখ্যসচিবের কাছে আসবেন।” বিদেশিদের ভরসা-বাণীও শুনিয়েছেন মমতা।
মিৎসুবিশির সমস্যা হচ্ছে কেন?
সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা: মিৎসুবিশির কারখানায় অন্যতম প্রয়োজনীয় কাঁচামাল যে ন্যাপথা, রাজ্য সরকার তা থেকে সেস ও প্রবেশ-কর নেয়। প্রবেশ-করের প্রশ্নে অবশ্য আদালতে মামলা চলছে। অন্য দিকে দিল্লি আদায় করে কেন্দ্রীয় অন্তঃশুল্ক। সংস্থার বক্তব্য: এক দিকে বিশ্বব্যপী মন্দা, অন্য দিকে এ হেন বিবিধ করের দাপটে উৎপাদন খরচ বিস্তর চড়ে গিয়েছে। পাশাপাশি শিল্প খাতে রাজ্যের নিজস্ব অনুদান প্রকল্প থেকে প্রাপ্ত সুবিধার মেয়াদও শেষ।
সব মিলিয়ে ব্যবসা মার খাচ্ছে বলে দাবি করেছেন মিৎসুবিশি-কর্তারা। নবান্ন-সূত্রের খবর, তাঁদের অভাব-অনুযোগ মুখ্যমন্ত্রী এ দিন মন দিয়ে শুনেছেন। যতটা সম্ভব সুরাহারও আশ্বাস দিয়েছেন। এই ‘শিল্প-মিত্রতা’র সুরই এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর গলায় শোনা গিয়েছে সায়েন্স সিটির অনুষ্ঠানে। শিল্পক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে তাঁর সরকারের আগ্রহের কথা জানিয়ে যেখানে তিনি জাপানি শিল্পকর্তাদের বলেছেন, “এ রাজ্যে পর্যটন থেকে উৎপাদন শিল্প নানা ক্ষেত্রে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। শিল্পপতিরা বিনিয়োগ করলে তা লাভজনকই হবে।” পাল্টা আশ্বাসও মিলছে। পশ্চিমবঙ্গে লগ্নির প্রতিশ্রুতি দিয়ে জাইকা-র প্রতিনিধি তোমাহাইদি ইচিগুচি বলেছেন, “দীর্ঘদিন জাইকা পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগ করে আসছে। রাজ্যে বন দফতরের প্রকল্পেও জাইকা প্রায় চারশো কোটি টাকা ঢেলেছে।”
জাপানের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের শিল্প-বাণিজ্যিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে কলকাতার জাপানি কনসাল জেনারেল মিৎসুও কাওয়াগুচি-ও বেশ আশাবাদী। “খোদ মুখ্যমন্ত্রী কোনও প্রকল্পের উদ্বোধন করছেন, এটা খুবই উৎসাহের।” প্রতিক্রিয়া তাঁর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.