‘শারদোত্সব কোনও দিনই সর্বজনীন নয়’ (১৫-১১) রচনায় গৌতম চক্রবর্তী লিখেছেন, ‘ব্রাহ্মণরা এসে দেখলেন, এ দেশে জনজীবনের মূল উত্সব চৈত্র মাসে: গাজন। জাতিভেদ নেই, সারা গ্রাম একসঙ্গে ধর্ম ঠাকুরের পুজোয় মেতে ওঠে।... কিন্তু এই সর্বজনীন সামাজিক উত্সবে থাকবন্দি শাসন কাঠামো ধরে রাখা যাবে না। অতএব শুরু হল উচ্চবর্গের বিচিত্র অন্তর্ঘাত। প্রথমেই এল দুর্গাপুজো, কিন্তু সেই বাসন্তীপুজো গাজনের জনপ্রিয়তা কমাতে পারল না। ক্ষমতা গাজনকে বরাবর সন্দেহ করেছে। আজও মন্দিরগাত্রের টেরাকোটায় চড়কপুজোর উপস্থাপনা খুঁজে পাওয়া যায় না।’ |
মন্দির ফলকে চড়ক: রাধাকান্তপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর। ছবি: ভাস্করব্রত পতি। |
কিন্তু মন্দির টেরাকোটায় চড়ক গাজনের ছবি মেলে না, এ তথ্য ভুল। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার রাধাকান্তপুর গ্রামে (মৌজা নং ৬৭) গোপীনাথের একরত্ন মন্দিরে রয়েছে চড়ক গাজনের চিত্র সংবলিত টেরাকোটা। ইটের তৈরি দক্ষিণমুখী এই মন্দিরটি সংস্কার করা হয় ১২৫১ সালে (১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দ)। প্রতিষ্ঠাতা দাস পরিবারের যজ্ঞেশ্বর দাস মন্দিরটি সংস্কার করেন হীরু মিস্ত্রি নামে এক শিল্পীকে দিয়ে। সম্ভবত তিনিই মন্দিরগাত্রের টেরাকোটার কাজগুলি করেন, যা এখনও বেশ উজ্জ্বল।
এখানে বর্ধমানরাজ কৃষ্ণরামের বিরুদ্ধে শোভা সিংহের ঐতিহাসিক যুদ্ধ দৃশ্যের পাশাপাশি শিকারদৃশ্য, নৌযুদ্ধ, রণতরী, খেজুরগাছে রস দেওয়া এবং চড়ক গাজনের দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে টেরাকোটায়।
আমার সম্পাদিত ‘পুণ্যিপুকুর’ পত্রিকার ‘চড়ক গাজন’ সংখ্যার (বৈশাখ ১৪১৯) প্রচ্ছদে গোপীনাথ মন্দিরের টেরাকোটার এই চড়ক গাজনের চিত্রটি ব্যবহৃত হয়েছিল।
ভাস্করব্রত পতি। সাহড়দা, পূর্ব মেদিনীপুর
|
প্রধানমন্ত্রীদের যাত্রাসঙ্গী হিসেবে (২-১১) জয়ন্ত ঘোষালের অভিজ্ঞতা পড়ে ভাল লাগল। হোয়াইট হাউসের দোতলার ব্যালকনি থেকে শ্বেতশুভ্র লিঙ্কন মেমোরিয়াল দেখে জয়ন্তবাবু অভিভূত হয়েছেন বলে লিখেছেন। কিন্তু হোয়াইট হাউস থেকে লিঙ্কন মেমোরিয়াল দেখা যায় না। উনি দেখেছেন জেফারসন মেমোরিয়াল। দক্ষিণে তাকালে প্রথমে ওয়াশিংটন মনুমেন্ট ও তার পাশ দিয়ে দূরে শ্বেতশুভ্র জেফারসন মেমোরিয়াল দেখা যায়। হোয়াইট হাউস থেকে যাতে এটি পরিষ্কার ভাবে দেখা যায়, সে জন্য ওই দৃষ্টিপথে কোনও গাছও রাখা হয়নি। এ ছাড়া ওভাল অফিসে মনমোহন সিংহের মধ্যাহ্নভোজ খাওয়ার কথা পড়ে খটকা লাগল। ওভাল অফিস তো প্রেসিডেন্টের অফিস কক্ষ। সেখানে হাল্কা স্ন্যাক্স পরিবেশন করা হতে পারে। কিন্তু পুরো মধ্যাহ্নভোজ সম্ভব কি?
সোমনাথ ঘোষ। কলকাতা-৯
|
জন্মশতবর্ষের দোরগোড়ায় দাঁড়ানো ব্যতিক্রমী কথাসাহিত্যিক কমলকুমার মজুমদারকে নিয়ে সাহিত্য-সংস্কৃতি জগতে বেশ সাড়া পড়েছে। এই আগ্রহ-উদ্দীপনা বাংলা সাহিত্যের জন্য নিঃসন্দেহে সুখবর। আর একজন সাহিত্যিকের জন্মশতবর্ষও নীরবে এগিয়ে এসেছে। তিনি তিতাস একটি নদীর নাম উপন্যাসের লেখক অদ্বৈত মল্লবর্মন (জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯১৪)। অদ্বৈতর সাঁইত্রিশ বছরের যন্ত্রণাবিদ্ধ জীবন এবং তার বিচিত্র রচনাসম্ভারের অনেকটাই যে আজও অপরিচয়ের অন্ধকারে রয়ে গেছে এর চেয়ে দুঃখের বিষয় আর কী হতে পারে।
কান্তারভূষণ নন্দী। ঢেকিয়াজুলি, অসম
|
‘নতুন ঘূর্ণিঝড় লহরও অন্ধ্রের পথে’ (২৫-১১) শীর্ষক কুন্তক চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিবেদনের সঙ্গে যে ছবিটি দেওয়া হয়েছে, সেটি লহরের নয় ধরেই নিচ্ছি। কিন্তু সেটি বঙ্গোপসাগরের উপর সৃষ্ট কোনও ঘূর্ণিঝড়েরও স্যাটেলাইট চিত্র নয়। এমনকী সেটি উত্তর গোলার্ধে সৃষ্ট কোনও ঘূর্ণাবর্তের ছবিও হতেই
পারে না।
কারণ, ঘূর্ণিঝড়ের ঘূর্ণনের একটা নির্দিষ্ট দিক আছে এবং উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধে সে দিক নির্দেশিকা সম্পূর্ণ বিপরীত। ক্রান্তীয় ঘূর্ণাবর্তে উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে (অ্যান্টি ক্লক-ওয়াইজ/ কাউন্টার ক্লক-ওয়াইজ) আবর্তন করে। দক্ষিণ গোলার্ধে যে আবর্তনের দিক ঘড়ির কাঁটার দিকে, ক্লক-ওয়াইজ।
প্রতিবেদনের সঙ্গের ছবিতে ঘূর্ণাবর্তটি ঘড়ির কাঁটার দিকে আবর্তনরত, যা একমাত্র দক্ষিণ গোলার্ধে হওয়া সম্ভব। অথচ প্রতিবেদনটির প্রসঙ্গ বঙ্গোপসাগরের উত্তর গোলার্ধের উপর তৈরি হওয়া একটি ঘূর্ণিঝড়।
পায়েল ঘোষ। শান্তিনিকেতন, বীরভূম
|
প্রতিবেদকের বক্তব্য: ওটি কোনও উপগ্রহ-চিত্র নয়। বোঝানোর জন্য একটি গ্রাফিক চিত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
|
‘বারো বছরেও বাড়েনি পি এফ-এর পেনশন’: প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরীর (২৪-১১) প্রতিবেদনটির জন্য ধন্যবাদ। দীর্ঘ বারো বছরে পরিস্থিতির বিন্দুমাত্র পরিবর্তন না-হওয়ায় পি এফ পেনশন প্রাপকদের এই দুর্মূল্যের বাজারে কী নিদারুণ কষ্টে সংসার চালাতে হচ্ছে, তা ভুক্তভোগীরাই জানেন। তাই এ ব্যাপারে প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্ণধারদের হস্তক্ষেপ ও ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানাই। তত্পরতার মাধ্যমে সহৃদয় মুখ্যমন্ত্রী যেন এর ইতিবাচক সমাধানের ব্যবস্থা করেন।
তুষারকান্তি সান্যাল। কলকাতা-৩৮
|
আমি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মালিকানাধীন এক প্রতিষ্ঠানে তেত্রিশ বছর কাজ করে ২০০৪ সালে অবসর নিয়েছি। ‘এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড ১৯৯৫’ প্রকল্পের অধীনে আমি আছি। অবসরের সময় থেকে মাসিক ১২০৬ টাকা ই পি এফ পেনশন থেকে পাচ্ছি।
এই নয় বছরে জিনিসপত্রের দাম অনেক গুণ বেড়ে গিয়েছে। ই পি এফ-এর পেনশন এক পয়সা বাড়েনি। আমি অসুস্থ, একটা কার্ডিয়াক অ্যাটাক হয়ে গেছে। চিকিত্সায় অনেক অর্থ ব্যয় করতে হয় এবং সংসার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ, যাঁরা এই সমস্যায় জর্জরিত তাঁরা যেন আর্থিক সুবিধা পান বর্তমান জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি অনুযায়ী। আর যে ক’টা দিন বাঁচব একটু যেন সুস্থ হয়ে বাঁচতে পারি।
ধ্রুব সেনগুপ্ত। কলকাতা-৮৪ |